আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হিজাব র্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়। ‘প্রোটেস্ট এগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামের একটি সংগঠন ‘হিজাব র্যালি’র আয়োজন করে।
‘হিজাব আমাদের অধিকার’ ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে হাজির হন বহু শিক্ষার্থী। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে র্যালিটি শুরু হয়। তারপর টিএসসি হয়ে রাসেল টাওয়ার ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে তারা সমাবেশে মিলিত হন। সেখানে নারী সংগঠকেরা হিজাবের উপকারিতা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘হিজাব আমাদের সাংবিধানিক অধিকার’।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আমরা পোশাকের স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু হিজাবের আলোচনায় এই কথা ভুলে যাই। তখন স্বাধীনতার সম্মানটা কেউ করে না।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত বলেন, গত চার বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ বিশ্ব হিজাব দিবস উপলক্ষে বেশ কিছু ইভেন্ট করেছে। এবার ‘হিজাব র্যালি’ সাড়া জাগাবে আশা করি। হিজাব সম্পর্কে বিভ্রান্ত করা ও ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। আমরা যদি হিজাবের ইতিহাস না জানি, হিজাবের সুবিধা না বলি, তাহলে এই হিজাব ডে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী উম্মে ছালমাও এই হিজাব র্যালিতে অংশ নেন। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে অনেক নিকাব–হিজাব পরিহিত আপু থাকলেও পরবর্তীতে আমরা কোনো নিকাব করা নারী নেতৃত্ব দেখছিনা এটার বিকাশ ঘটাতে হবে।
তিনি বলেন, নিকাব করে নামাজ পড়বে, রোজা রাখবে, সংসার করবে, রান্না করবে এমন ধারণায় বিশ্বাসী আমাদের সমাজ। আমি মনে করি, আমরা হিজাব–নিকাব করেও নিজ যোগ্যতায় দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে কাজ করতে পারি। এজন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। আপনার অধিকার আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে।
র্যালিটির অন্যতম আয়োজক স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদ নামে একটি সংগঠনের আহবায়ক জামালুদ্দিন খালেদ সাংবাদিকদের বলেন, যাঁরা ফ্যাসিবাদের আমলে হিজাব–নিকাব পরিধান করে অনেকে বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শুধু হিজাব–নিকাবই নয়, যাঁরা টুপি পরতেন, দাড়ি রাখতেন তাঁরাও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। এগুলোকে একধরনের জঙ্গিবাদের চিহ্ন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্যই মূলত আমাদের এই প্রচেষ্টা।’
‘হিজাব র্যালি’ শেষ হলে রাজু ভাস্কর্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে যাঁরা র্যালির উপস্থিতি বাড়িয়েছেন, তাদের দেওয়া হয় এই পুরস্কার।
রোববার সকাল ৯টায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০০তম ব্যাচের উদ্যোগে হিজাব বিষয়ে সচেতনতার জন্য একটি সেমিনারও আয়োজন করা হবে। সেমিনারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
