রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের সমঝোতা আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে বলে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সরাসরি আলোচনায় বসেছিলেন দুই দেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
আলোচনা শেষে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত সাভাসগলু বলেন, নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে দুই পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছেছে। যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বন্ধের বিষয়েও তাঁরা একমত প্রকাশ করেছেন। তিনি আরো বলেন, ‘গুরুতর বিষয়গুলো’ নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আলোচনা করবেন। তারপর দুই দেশের নেতারাও বৈঠকে বসতে পারেন।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সমঝোতা বৈঠকের পর ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে কিছুটা লাগাম টানার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আশপাশ ও উত্তরাঞ্চলীয় শহর চেরনিহিভে সেনা কমানোর কথা বলেছে তারা।
রাশিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্দার ফোমিন বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে চলমান আলোচনায় আস্থা তৈরি এবং পরবর্তী সমঝোতার পথ তৈরির জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও কিয়েভের আশপাশ ও চেরনিহিভ শহর থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে জানানো হয়েছে।
এক মাসের বেশি সময় ধরা চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের দিকে এটাই সবচেয়ে বড় অগ্রগতি। মস্কোর এই নমনীয় অবস্থানের পেছনে রয়েছে ইউক্রেনের প্রস্তাব।
আজ মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে সরাসরি আলোচনায় বসেছিলেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা বলেছেন, রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী জোট নিরপেক্ষ (নিউট্রাল স্ট্যাটাস) অবস্থান গ্রহণে রাজি আছেন তাঁরা। তবে সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
জোট নিরপেক্ষ অবস্থানের অর্থ, ইউক্রেন আর ন্যাটোর মতো কোনো সামরিক জোটে যোগ দেবে না, এমনকি কোনো দেশ বা জোটকে সামরিক ঘাঁটিও করতে দেবে না তারা। এর বিনিময়ে ইউক্রেনকে যে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে, সেখানে গ্যারান্টার হিসেবে পোল্যান্ড, ইসরায়েল, তুরস্ক, কানাডাসহ কয়েকটি দেশ থাকতে পারে। এ ছাড়া ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখলে যাওয়া ক্রিমিয়া অঞ্চলের স্ট্যাটাস কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনার জন্য ১৫ বছরের সময় চেয়েছে ইউক্রেন।
ইসতাম্বুলে সমঝোতা বৈঠকে অংশ নেওয়া রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের স্বাগত জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ইস্তাম্বুলের বৈঠকের পর ইউরোপের শেয়ারবাজারে চাঙা ভাব দেখা দিয়েছে।