রাশিয়া-ইউক্রেন বন্দী বিনিময়ে ভূমিকা রাখবেন এরদোগান

আন্তর্জাতিক সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেছেন যে তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের সঙ্গে বৈঠকে তার দেশের যুদ্ধবন্দীদের দুর্দশার বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এরদোগান।

শনিবার (৮ জুলাই) ভোরে জেলেনস্কি একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইস্তাম্বুলে এরদোগানের সঙ্গে তার আলোচনার ‘মূল বিষয়’ ছিল রাজবন্দী ও নির্বাসিত শিশুদের নিয়ে। জেলেনস্কি বলেন, এর একটি তালিকা রয়েছে এবং আমরা এই বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।

এরদোগান বলেছেন, ‘বিশেষ করে বন্দী বিনিময়ের বিষয়ে আমরা ইউক্রেনের কথা শুনেছি এবং রাশিয়ার কথাও শুনছি। আগামী মাসে পুতিনের তুরস্ক সফরে আসলে আমরা আবার এ বিষয়ে কথা বলবো। আলোচনায় বন্দী বিনিময় বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া হবে। আমরা আশা করি এই বিষয়েও একটি সমাধান হবে।’

এছাড়াও শস্য চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করবেন এই চুক্তির অন্যতম অংশীদার প্রেসিডেন্ট এরদোগান। শুক্রবার আঙ্কারায় জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আগস্টে আবার যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট সঙ্গে দেখা হবে তখন এরদোগান এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবেন। পুতিনের সঙ্গে আলোচনার লক্ষ্য থাকবে শস্য চুক্তির মেয়াদ আরও অন্তত ৩ মাস বাড়ানো। চলতি জুলাই মাসের ১৭ তারিখ শেষ হতে যাচ্ছে এই চুক্তির মেয়াদ।

সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান বলেন, ‘আমরা এই চুক্তির মেয়াদ আরও ২ বছর বাড়াতে চাই। তবে আপাতত তা তিন মাস বাড়ানোর চেষ্টা থাকবে। এ সংক্রান্ত কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আগামী আগস্টে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের তুরস্ক সফরের সূচি রয়েছে। সে সময় এ ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনা হবে আমাদের এবং আশা করছি, সেই আলোচনা সফল হবে।’

ইউক্রেন ও রাশিয়া- উভয়ই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গম ও ভুট্টা উৎপাদনকারী দেশ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে কৃষ্ণ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে ইউক্রেনের গুদামগুলোতে আটকা পড়েছিল ২৬ লাখ টন গম,ভুট্টা ও কয়েক লাখ টন সূর্যমুখী তেলবীজ।

এদিকে ইউক্রেনে শস্য আটকে থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়তে থাকে আটা-ময়দা-ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম। এই পরিস্থিতিতে আটকে পড়া এই গম-ভুট্টা ছাড়ের জন্য গত বছর আগস্টে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সমঝোতা চুক্তি করেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন।

তারপর এ পর্যন্ত কয়েক দফায় বাড়ানো হয়েছে সেই চুক্তির মেয়াদ। সর্বশেষ মেয়াদবৃদ্ধির তথ্য অনুযায়ী, আগামী ১৭ আগস্ট এই চুক্তি শেষ হতে যাচ্ছে। রাশিয়া অবশ্য গত জুন মাসে জানিয়েছিল, চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আর আগ্রহী নয় দেশটি। তবে জেলেনস্কি তুরস্কে যাওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র ও প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, এরদোয়ান ও জেলেনস্কির বৈঠক মস্কোর নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। সূত্র : রয়টার্স ও সিএএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *