ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্তোভিচ তার দেওয়া বিতর্কিত বক্তৃতার সমালোচনার মধ্যে পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি এই মন্তব্যের জন্য ইউক্রেনের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, এটিকে একটি ‘মৌলিক ভুল’ বলে অভিহিত করেছেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শনিবার (১৪ জানুয়ারি) ইউক্রেনের ডিনিপ্রো এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর কয়েক ঘণ্টা পরে আরেস্তোভিচ বলেছিলেন, ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী এটিকে গুলি করার পরে ক্ষেপণাস্ত্রটি ভবনটিতে আঘাত করেছিল বলে মনে হচ্ছে।
পরে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়ার তৈরি ‘কেএইচ-২২’ মিসাইল দিয়ে ভবনটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার ক্ষমতা তাদের নেই।
ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ইউক্রেনীয় বাহিনী ভূপাতিত করেছে বলার পর ইউক্রেনীয়দের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়েছেন আরেস্তোভিচ। কেউ কেউ বলছেন, এ কর্মকর্তা রাশিয়ান প্রচারকদের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছিলেন।
আবার ইউক্রেনের পার্লামেন্টের কিছু সদস্য একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। পিটিশনে অ্যারেস্টোভিচকে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বরখাস্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। এর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন আরেস্তোভিচ।
এক টেলিগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমি নিহতদের আত্মীয়স্বজন, ডিনিপ্রোর বাসিন্দাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থী, যারা আবাসিক ভবনগুলোতে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সম্পর্কে আমার ভুল মন্তব্যের কারণে বিরক্ত হয়েছিল।’
আরেস্তোভিচ পরে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে একটি চিঠি পোস্ট করেন। তিনি তার বক্তব্যকে ‘মৌলিক ভুল’ বলে উল্লেখ করেছেন। আরেস্তোভিচের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভলোদিমির জেলেনস্কি এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।
আরেস্তোভিচ সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ পরিচিত মুখ। তিনি তার ইউটিউব চ্যানেলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিদিন আপডেট ও আলোচনা সরবরাহ করেন।
চ্যানেলটিতে ১৬ লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার আছে। তার ভিডিও দুই লাখের বেশি ভিউ হয়েছে। এসব ভিডিওতে তিনি রুশ ভাষায় বক্তৃতা দেন। আরেস্তোভিচের বিবৃতি ব্যবহার করে রাশিয়ার কর্মকর্তারাও কিয়েভকে হামলার জন্য দায়ী করেছেন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, রাশিয়া আবাসিক ভবন আক্রমণ করে না। ইউক্রেনের এয়ার ফোর্সের কারণে এমনটি ঘটেছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবারের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন। তবে তাদের জীবিত উদ্ধারের কোনো সম্ভাবনা নেই। শনিবার কিয়েভ, খারকিভ ও ওডেসাতেও হামলা হয়। ইউক্রেনের সামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।