যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আজ মঙ্গলবার মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে।
বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একের পর এক ভোটকেন্দ্রগুলো খুলছে। ইতোমধ্যে অ্যারিজোনা, কলোরাডো, মন্টানা, নেব্রাস্কা, নিউ মেক্সিকো, উটাহ, উইয়োমিং সবখানেই ভোট শুরু হয়েছে।
ডয়চে ভেলে বলছে, দেশটিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে এবং আগামী ১২ ঘণ্টা পরে শেষ হবে। তবে এর চূড়ান্ত ফল পেতে কয়েক দিন, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহও লেগে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে আগাম ভোট পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইউএস ইলেকশন প্রজেক্ট বলেছে, ৪ কোটি ৩০ লাখের বেশি মার্কিন নাগরিক ইতিমধ্যে মধ্যবর্তী নির্বাচনে আগাম ভোট দিয়েছেন।
কংগ্রেসের উভয় কক্ষ, প্রতিনিধি পরিষদ ও সেনেটের জন্য সদস্য নির্বাচন করবেন ভোটাররা। এর মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের সব আসন, অর্থাৎ ৪৩৫ জন সদস্য নির্বাচন করা হবে। আর সেনেটের ১০০টি আসনের মধ্যে ৩৫টির জন্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
বর্তমানে কংগ্রেসের দুই কক্ষেই ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে কোনো একটির নিয়ন্ত্রণ রিপাবলিকানদের কাছে চলে যেতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাইডেনের মেয়াদের শেষ দুই বছরে ডেমোক্র্যাটদের বিভিন্ন ইস্যু কংগ্রেসে পাস করাতে সমস্যা হতে পারে।
সোমবার শেষ মুহূর্তে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে মাঠে নেমেছিলেন বাইডেন ও ট্রাম্প। বাইডেন এই নির্বাচনকে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের জন্য ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে একটু দূরে অবস্থিত বোয়ি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার বক্তব্য দিতে গিয়ে বাইডেন বলেন, আমরা হৃদয়ে অনুভব করছি যে আমাদের গণতন্ত্র আজ হুমকির মুখে আছে, আর আমরা এ-ও জানি যে, আপনাদের পক্ষে একে রক্ষা করার সময় এখনই।
এদিকে ওহাইও রাজ্যের এক সমাবেশে ট্রাম্প তার সমর্থকদের রিপাবলিকানদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এরপর তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে তিনি একটি বড় ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের নাম ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৫ নভেম্বর ঘোষণাটি আসতে পারে বলেও জানান ট্রাম্প।
সোমবার সমাবেশ শেষে হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, তার বিশ্বাস ডেমোক্র্যাটরা সেনেটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবে। আর প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখাটা ‘কঠিন’ হতে পারে৷ সেক্ষেত্রে ওয়াশিংটনে তার জীবনটা ‘আরো কঠিন’ হয়ে উঠতে পারে।
মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফল বাইডেনের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে। কারণ, এর উপর নির্ভর করে বাইডেন ২০২৪ সালে পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
যদি কংগ্রেসের দুই কক্ষেই ডেমোক্র্যাটরা নিয়ন্ত্রণ হারায় তাহলে মেয়াদের শেষ দুই বছর বাইডেন কার্যত ক্ষমতাহীন হয়ে পড়বেন। সেক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু, ইউক্রেন যুদ্ধে মার্কিন সহায়তার বিষয়গুলোতে বাইডেন কিছু করতে পারবেন না।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র এখন যতটা আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিচ্ছে সেটা রিপাবলিকানরা চালিয়ে যেতে চান না। পেনসিলভেনিয়া, নেভাদা, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, উইসকনসিন, নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং ওহাইওর সেনেট নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।