সংঘাত, সহিংসতা এবং নিপীড়ন থেকে বাঁচতে গোটা বিশ্বে ঘরছাড়া মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি অতিক্রম করেছে, যা এক নতুন রেকর্ড৷ ইউক্রেন যুদ্ধসহ অন্যান্য সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এত বেড়েছে বলে মনে করছে ইউএনএইচসিআর৷
‘‘এটা এমন এক রেকর্ড যা কখনো না হলেই ভালো হতো,” বলেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি৷
‘‘নতুন এই সংখ্যা বিধ্বংসী সংঘাত সমাধানে ও রোধে, নিপীড়ন বন্ধে এবং মানুষ কেন ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তা শনাক্ত করে সমাধান খুঁজতে আমাদের কাছে এক সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করা উচিত,” যোগ করেন তিনি৷
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে যে, ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া মানুষের সংখ্যা ২০২১ সালের শেষ নাগাদ নয় কোটির মতো ছিল৷ ইথিওপিয়া, বুরকিনা ফাসো, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, আফগানিস্তান এবং কঙ্গোতে সংঘাতের কারণে মূলত সংখ্যাটি বাড়ছিল৷
তবে চলতি বছর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা তরতরিয়ে বাড়তে শুরু করে৷ দেশটি থেকে ইতোমধ্যে ৬০ লাখের মতো মানুষ জীবন বাঁচাতে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন৷ আর ৪০ লাখ ইউক্রেনের ভেতরেই এক অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন৷
দশ কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার অর্থ হচ্ছে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশের বেশি মানুষ আর নিজের ঘরে থাকতে পারছেন না৷ এই সংখ্যার মধ্যে শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী এবং নিজের দেশেই ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হওয়া পাঁচ কোটির মতো মানুষও রয়েছেন৷গ্রান্ডি বলেন, ‘‘ইউক্রেন থেকে পালাতে বাধ্য হওয়া মানুষের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সাড়া অত্যন্ত ইতিবাচক৷ সহানুভূতি বেঁচে আছে এবং আমাদের সেটা বিশ্বের অন্যান্য সংকটেরক্ষেত্রেও প্রকাশ করা উচিত৷ তবে দিনের শেষে মানবিক সহায়তা একটি উপশমক, নিরাময়ক নয়৷”
‘‘বাস্তুচ্যুত মানুষ বেড়ে যাওয়ার এই ধারা কমাতে শান্তি এবং স্থিতি নিশ্চিত করতে হবে যাতে নিরাপরাধ মানুষ ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য না হয়,” যোগ করেন তিনি৷
গতবছর ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া মানুষদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য ১৬ জুন বাৎসরিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করবে ইউএনএইচসিআর৷
সূত্র: ডিডাব্লিউ, এপি, এএফপি