ওডেসায় নিকটবর্তী এলাকায় পশ্চিমা অস্ত্র বহনকারী ইউক্রেনের একটি বিমান ভূপাতিত করেছে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা সেনারা। একথা জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেঙ্কো।
তিনি বলেন, ‘ওডেসার কাছে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ইউক্রেনের একটি সামরিক সরঞ্জামবাহী বিমান ভূপাতিত করেছে। ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশগুলোর পাঠানো বড় অস্ত্রের চালান বহন করছিল বিমানটি।’
রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ও তাদের সরঞ্জাম লক্ষ্য করে গেল ২৪ ঘণ্টায় ৬৭ টি হামলা চালিয়ে বলেও জানিয়েছেন, ইগোর কোনাশেঙ্কো। যদিও এ বিষয়ে এখনও ইউক্রেনের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য আসেনি।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অবরুদ্ধ বন্দর নগরী মারিউপোলে ইউক্রেনের সর্বশেষ সেনাদের হত্যা করা হলে মস্কোর সাথে শান্তি আলোচনা বাতিল করা হবে বলে হুমকি দেয়ার পর শনিবার রাশিয়া নতুন করে কিয়েভে বিমান হামলা চালিয়েছে।
ইউক্রেনের রাজধানীতে নতুন করে রক্তপাত বাড়ছে, মারিউপোলেও প্রবল চাপ বাড়ছে।
আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম কোনো ইউরোপীয় নেতা অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার সোমবার সরাসরি পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন। কার্ল নেহামার বলেছেন, তিনি মনে করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ‘বিশ্বাস তিনি যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন’।
রাশিয়ার হামলায় কিয়েভে কয়েক সপ্তাহের তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ অবস্থার অবসান ঘটে।
রাশিয়া উঁচু মানের নিঁখুত দূরপাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র কারখানায় বিমান হামলার কথা জানানোর পর কিয়েভের ডারনিস্কি জেলা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়, এই হামলায় একজনের মৃত্যু এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন।
ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাটি ঘিরে বিপুল পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন, ‘আমাদের বাহিনী আমাদের রক্ষা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে, কিন্তু শত্রুরা প্রতারক ও নির্মম।’
নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র কারখানার হামলা একদিন পর এই বিমান হামলা চালানো হয়, কিয়েভ এবং ওয়াশিটনের মতে এই নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কৃষ্ণ সাগরে বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ফ্লাগশিপ যুদ্ধজাহাজ মোস্কাভা ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। কিয়েভ অঞ্চল থেকে গত মাসে রুশ বাহিনী সরিয়ে নেয়ার পর এটিই ছিল প্রথম হামলা, রাশিয়া সৈন্য সরিয়ে কিয়েভের পরিবর্তে ইউক্রেনের পূর্বঞ্চলে ডনবাস এলাকার নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেয়। কয়েক বছর ধরে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর দক্ষিণের বিধ্বস্ত মারিউপোল হয়ে উঠেছে রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের অপ্রত্যাশিত ভয়ঙ্কর প্রতিরোধের প্রতীক।
রুশ কর্মকর্তারা এখন বলছেন, মারিউপোলে তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা ঘেরাও হয়ে পড়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ শনিবার বলেছেন, ‘তাদের জীবন বাঁচানোর একমাত্র সুযোগ হলো স্বেচ্ছায় অস্ত্র তুলে দেয়া এবং আত্মসমর্পণ।’
রুশ বাহিনী মারিউপোলে ঢোকার পরেই জেলেনস্কি সতর্কতা জারি করেন। তিনি প্রাভদা নিউজ ওয়েবসাইটকে বলেন, মারিউপোলে আমাদের সৈন্যদের হত্যা ও নির্মূল করা হলে মস্কোর সাথে যে কোনো সমঝোতা আলোচনার অবসান ঘটবে। সূত্র: বিবিসি, তাস