ইংল্যান্ডের নর্থ-ইস্ট এলাকার কমিউনিটিতে নানা অবদানের স্বীকৃতি পেলেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মরহুম ওয়াহিদুদ্দিন আহমেদ কুতুব। তিনি ছিলেন নিউক্যাসেলের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ কাউন্সিলর এবং ওই অঞ্চলের প্রথম কারি হাউজের প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৭ সালে তিনি ইন্তেকাল করলেও তার অর্জন বহুদিন নিউক্যাসেলজুড়ে বেঁচে থাকবে। তার এ স্বীকৃতি আদায়ের জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেছে নিউক্যাসেল বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন।
ওয়াহিদুদ্দিন আহমদ কুতুবের অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে একটি নীল ফলক উন্মোচন করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের দিন আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেখানকার মেয়র হাবিব রহমান। এছাড়া ওয়াহিদুদ্দিন আহমেদের পরিবার ও বন্ধুরাও গর্বের সঙ্গে সেখানে যোগ দেন।
ক্রনিকল লাইভের খবরে জানানো হয়, ওয়াহিদুদ্দিন শুধু একজন কমিউনিটি নেতা ছিলেন না, তিনি সামাজিক ন্যায় এবং জাতিগত সমতার জন্য কাজ করে গেছেন। পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন নর্থ ইস্টের প্রথম কারি হাউজ। ‘রাজা রেস্টুরেন্ট’ নামের কারি হাউজটি নিউক্যাসেলের ক্লথ মার্কেটে ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৭৭ সালে কিংবদন্তী মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর সাউথ শিল্ড শহর সফরের সময় উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখেন ওয়াহিদুদ্দিন। সেখানে আল-আজহার মসজিদে স্ত্রী ভেরোনিকাকে বিয়ে করেছিলেন মোহাম্মদ আলী।
১৯৮৬ সালে ওয়াহিদুদ্দিন ফেনহাম ওয়ার্ড থেকে নিউক্যাসেলের প্রথম মুসলিম সিটি কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘টাইন ওয়্যার কমিউনিটি রিলেশনস কাউন্সিল’। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি এর চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নর্দাম্ব্রিয়া পুলিশ কমিউনিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান, তিনটি স্কুলের গভর্নর এবং নিউক্যাসেল সিটি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
ওয়াহিদুদ্দিন আহমেদ কুতুবের জন্ম ১৯৩২ সালে। অনুষ্ঠানে লর্ড মেয়র হাবিব রহমান তার স্মরণে বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি পতাকা উত্তোলন করা হয়।
মেয়র হাবিব বলেন, আশির দশকে এই শহরের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন ওয়াহিদুদ্দিন আহমেদ কুতুব। তার সম্মানার্থে আমরা এই নীল ফলক উন্মোচন করলাম। তিনি এই শহরের কল্যানে যেসব অবদান রেখেছেন তা আমাদের এই শহরে বেঁচে থাকা ও কাজের জন্য আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে তুলেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়াহিদুদ্দিন আহমদের সন্তান মেহতাব কুতুব। তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত আবেগের ও অসাধারণ সম্মান। আমার বাবাকে যে সম্মান দেখানো হয়েছে তার জন্য আমি নিউক্যাসেল শহরের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার বাবা এই শহরকে ভালোবাসতেন।
ওয়াহিদুদ্দিন আহমেদের মেয়ে আফরিন কুতুব তার বক্তব্যে বলেন, এটি একটি অসাধারণ আয়োজন। আমার বাবার অবদানের স্বীকৃতি পেয়ে পরিবার হিসেবে আমরা সম্মানিত অনুভব করছি। এটি অত্যন্ত গৌরবান্বিত।