নাটোরে চুরির ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে ভারতীয় মিডিয়ায় অপপ্রচার

এশিয়া সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

নাটোরে শ্মশান ঘাটের একটি ভোগঘরে সম্ভাব্য চুরির ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়। এক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তি সনাতন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই পিটিআইসহ কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসে এক পোস্টে বলেছে, ভারতের সবচেয়ে বড় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (পিটিআই) কোনো যাচাই-বাছাই ও ক্রস চেক ছাড়াই প্রথমে খবরটি প্রচার করে। এতে বলা হয়, পিটিআই খবরটি প্রকাশের পর তা ভারতে হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

সিএ প্রেস উইং জানায়, শনিবার পিটিআই কলকাতা ইসকনের মুখপাত্র রাধারমন দাসের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওর বরাতে সংবাদটি প্রকাশ করে। এই সংবাদে বাংলাদেশের কোন কর্তৃপক্ষের, হিন্দু নেতা এবং ভিকটিমের কোনো স্বজনের কোনো বক্তব্য নেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটা মাত্রই তা যাচাই-বাছাই না করে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড বলে চালিয়ে দেওয়া কোনো দায়িত্বশীল কাজ নয়। এই ধরনের অতিরঞ্জিত সংবাদ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের কারণ হতে পারে।’

তরুণ কুমার ইসকন সদস্য ছিলেন না নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এই ধরনের কোন সংবাদ প্রকাশের আগে স্থানীয় পর্যায়ে বা অফিসিয়াল মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা উচিত মিডিয়ার।

বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, নাটোর জেলার সদর থানার বড় হরিশপুর মহাশ্মশান ঘাট হতে শনিবার থানা পুলিশ হাত-পা বাধা অবস্থায় তরুণ কুমার দাস (৬০) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্মশান ঘাটের ভিতরে অবস্থিত ভোগঘরে অজ্ঞাতনামা চোররা চুরি করার সময় ভিকটিম তরুণ কুমার দাস চোরদের দেখে হাঁক-ডাক ও চিৎকার করার চেষ্টা করলে চোররা তার মুখ ও হাত-পা বেঁধে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

পুলিশ জানায়, শ্মশান ঘাটের ভোগঘর থেকে কয়েকটি কাসার প্লেট চুরি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। স্থানীয় এক ধর্মীয় নেতা জানান, ভিকটিম বহুদিন যাবৎ মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং বেশ কিছুদিন যাবৎ উক্ত মহাশ্মশান ঘাটে অবস্থান করছিলেন।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘শনিবার লাশ উদ্ধারের পর থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাদকাসক্ত কিছু লোক চুরি করতে গেলে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। হত্যার সম্ভাব্য সকল কারণই খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।’

নাটোরের ওই শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সত্য নারায়ণ রায় টিপু বলেন, ‘তরুণ কুমার শ্মশান কমিটির কোন সদস্য নয় এবং তিনি কোন পুরোহিত বা সেবক ছিলেন না। তিনি মানসিকভাবে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ কুমার ইসকন বা কোন সংগঠনের সদস্য ছিলেন না। এই ঘটনায় কোন সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা আছে বলেও আমাদের কাছে মনে হয় না।’ – বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *