অবশেষে ধরা পড়ল প্রবাসীদের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলকারী চক্রের হোতা, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি, টিলাগড় ও শাহপরান এলাকার ভয়ংকর সন্ত্রাসী সুফিয়ান এ পান্না। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খাদিমপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে দখলে রাখা একটি রিসোর্ট থেকে শাহপরান থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত পান্নার ছবি ও ক্যাপশন দেখে তার সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যাবে।
সন্ত্রাসী পান্না প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল করার কৌশল হিসেবে বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে লোভ দেখিয়ে গ্রুপ সৃষ্টির মাধ্যমে দখল করে দেয়। এমনি কৌশলে সিলেট শহরের খাদিমপাড়া এলাকায় একটি অভিজাত হোটেল এন্ড রিসোর্ট দীর্ঘদিন থেকে সে দখলে রেখেছে। যেখানে ‘স্পা সার্ভিস’ নামে অপরাধ জগতের নারী লোভী একটি ভয়ংকর চক্রের গোপন আস্তানায় পরিনত করেছে। এটি এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের অপকর্মের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়।
পান্না সুন্দরি নারি চক্রের মাধ্যমে টিলাগড়গ্রুপ নামে একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তোলে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে নানা জায়গায় হামলা পরিচালনার জন্য এই গ্রুপ বিভিন্ন অপারেশন চালায়। ফলে পলাতক স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আস্থাভাজনদেনর নজরে আসে। তারও আগে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককের নামে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লন্ডন কানেকশন সৃষ্টি করে।
চতুর পান্না তৎকালীন সিলেটের মেয়র লন্ডন প্রবাসী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী-সহ বিভিন্ন নেতাদের এই রিসোর্টে নিয়ে নানা ভাবে আপ্যায়িত করেছে। এভাবেই সে প্রবাসীদের মাঝে প্রভাব সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমার তদবির ইত্যাদির নামে টাকাকড়ি হাতিয়ে নেবার ফন্দি করে।
সন্ত্রাসী পান্না ভারত সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট থানার ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের মাধ্যমে সারেবক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও সিলেটি অন্যান্য নেতাদের সহায়তায় বহু আওয়ামী নেতা, মন্ত্রী ও আমলাকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।
অপরাধ জগতের ভয়ংকর চক্রের হোতা সুফিয়ান এ পান্না ‘স্পা সার্ভিসে’র নামে বুকিং দিয়ে নষ্টা নারি চক্রের মাধ্যমে সরলমনা প্রবাসিদের অস্বাভাবিক অবস্থায় ছবি তোলে ফাঁদে ফেলে কৌশলে বড় অংকের চাঁদা আদায় করে।
সন্ত্রাসী পান্নার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা আছে। খাদিমপাড়ার একটি রিসোর্টে ত্রাস সৃষ্টি ও দাঙ্গার অভিযোগে শাহপরান থানায় আরেকটি মামলা রয়েছে।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময় সে বেশ কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল। সরকারী কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্য থেকে নারি লোভীদের দাওয়াত করে ‘স্পা সার্ভিসে’র নামে অপাকর্মের সুবিধা দিয়ে তাদের সাথে নিজের ছতি তোলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে থাকে। অবশেষে ’অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চালু হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে ধরতে সক্ষম হয়।