জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল

যুক্তরাজ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল এ বছর হোয়াইট রিবন ডে এবং জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে ১৬ দিনের প্রচারণার অংশ হিসেবে সচেতনতা কার্যক্রমের আয়োজন করেছে। কাউন্সিলের কমিউনিটি সেফটি টিম সারা বারা জুড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে এগিয়ে এসেছে। প্রতি বছর এই দিনগুলো পালন করা হলেও, জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো কাউন্সিলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার।

২৫ নভেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা হোয়াইট রিবন ডে এবং নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূলের জন্য জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক দিবস। ১৬ দিনব্যাপী এই প্রচারণাটি ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত চলবে। হোয়াইট রিবন ডে সকলকে, বিশেষ করে পুরুষদের, নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে একত্রিত হতে উৎসাহিত করে। এটি একটি অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করার জন্য উৎসাহ দেয়, যা প্রতিশ্রুতি দেয় যে তারা কখনোই নারীদের প্রতি সহিংসতা করবে না, সহিংসতা সমর্থন করবে না বা চুপ থাকবে না।

১৬ দিনের এই প্রচারণায় টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন অ্যান্ড গার্লস (ভিএডব্লিউজি), হেইট ক্রাইম টিম, উইমেন্স নেটওয়ার্ক এবং মেইল অ্যালাইস এর কর্মীরা কাউন্সিলের কর্মীদের অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করতে উৎসাহিত করেছেন।

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, “প্রতিবছর প্রায় ১২ জন নারীর মধ্যে ১ জন লিঙ্গ—ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হন বলে ধারণা করা হয়। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক একটি পরিসংখ্যান। আমরা টাওয়ার হ্যামলেটসকে সকলের জন্য একটি নিরাপদ স্থান বানানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

তিনি বলেন, “এই ১৬ দিনের কার্যক্রম জেন্ডার—ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের উদ্যোগগুলোর একটি মাত্র অংশ। আমরা সম্প্রতি আমাদের নতুন ভিএডব্লিউজি (ভায়োলেন্স এগেইন্সট উইমেন এন্ড গার্লস) এবং উইমেন্স সেফটি স্ট্র্যাটেজি (নারীর নিরাপত্তা কৌশল) প্রকাশ করেছি, যেখানে বারা জুড়ে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা যে কোনো ধরনের নির্যাতন এবং হয়রানিকে প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করবো এবং স্পষ্ট করবো যে টাওয়ার হ্যামলেটসে এটি কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।”

কেবিনেট মেম্বার ফর সেফার কমিউনিটিজ, কাউন্সিলর আবু তালহা চৌধুরী বলেন, “নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিটি মানুষের উদ্বেগের বিষয় এবং সম্মিলিতভাবে আমাদের সবাইকে এমন একটি বারার জন্য কাজ করতে হবে, যেখানে কেউ — জাতি, লিঙ্গ, শ্রেণি, ধর্ম বা যৌন অভিমুখিতা নির্বিশেষে — রাস্তায় বা ঘরে অরক্ষিত বোধ করবে না।”

তিনি বলেন, “আমাদের নতুন ভিএডব্লিউজি কৌশল নারীদের এবং মেয়েদের সুরক্ষার বিষয়টি পরিষেবার প্রতিটি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় করে তুলেছে এবং প্রান্তিক নারীদের বিশেষ প্রয়োজনগুলোকেও গুরুত্ব দিয়েছে। এটি আমাদের সমাজে নারী বিদ্বেষের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার উপরও আলোকপাত করেছে।”
টাওয়ার হ্যামলেটস ইন্টার ফেইথ ফোরামের চেয়ার সুফিয়া আলম বলেন, “আমি আশা করি এই ১৬ দিনের কার্যক্রম মানুষের চোখ খুলে দেবে এবং দেখাবে কীভাবে প্রতিদিন সারা বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের জেন্ডার—ভিত্তিক সহিংসতা ঘটে এবং আমরা তা বন্ধ করতে কী পদক্ষেপ নিতে পারি। এই গুরুত্বপূর্ণ সচেতনতা দিবসগুলো পালন করে আমরা সম্মিলিতভাবে যে কোনো ধরনের নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা জানাই এবং দেখাই যে এটি আমাদের বরোতে কখনোই সহ্য করা হবে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *