ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ। মঙ্গলবার জর্ডানের রাজধানী আম্মানে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জর্ডানের রয়্যাল হাশেমাইট কোর্টের এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিনের অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ নিয়ে কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। সংবাদমাধ্যম বলছে, জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে মঙ্গলবার আকস্মিক সফরে দেশটিতে যান ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে কট্টর-ডানপন্থি এবং ধর্মীয় রক্ষণশীল সরকারের প্রধান হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর জর্ডানে এটিই নেতানিয়াহুর প্রথম সফর। মঙ্গলবারের বৈঠকে ইসরাইলি প্রতিনিধিদলের পাশাপাশি জর্ডানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদিসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি ইসরাইলে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ঘাসান মাজালিকে আল আকসা মসজিদে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার পরে ইসরাইলি দূতকে তলব করেছিল আম্মান। জর্ডান সরকারের দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বৈরী সম্পর্কের মধ্যে মঙ্গলবার দুই নেতা এক বিরল বৈঠকে বসেন। জেরুজালেমের পুরোনো শহরে অবস্থিত পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদের মর্যাদা নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে।
মুসলমানদের কাছে আল-আকসা বিশ্বের তৃতীয়-পবিত্রতম স্থান। অন্যদিকে, ইহুদিরা এই এলাকাটিকে টেম্পল মাউন্ট বলে থাকে। জর্ডান বলেছে, বাদশাহ আবদুল্লাহ পবিত্র এই স্থাপনার স্থিতাবস্থাকে সম্মান করার জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। স্থাপনাটিতে ইহুদিদের কেবল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং সেখানে তারা প্রকাশ্যে কোনও প্রার্থনা করতে পারেন না।
জর্ডানের সরকার আরও বলেছে, বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ইসরাইলকে ‘সহিংসতা বন্ধ করতে’ চাপ দিয়েছেন। এই সহিংসতা দশকব্যাপী ইসরাইল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের চূড়ান্ত শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির আশা কমিয়ে দেয়।
অন্যদিকে নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, তিনি ওই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মিত্র জর্ডানের সাথে ‘আঞ্চলিক সমস্যা’, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, গত বছরের শেষের দিকে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরাইলে নতুন অতি-কট্টরপন্থি সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ইতোমধ্যে দু’বার ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে জরুরি তলবও করেছে জর্ডান সরকার। আর দু’বারই তলব করা হয় আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ সম্পর্কিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
মূলত জর্ডান ১৯২৪ সাল থেকে জেরুজালেমের মুসলিম ও খ্রিস্টান পবিত্র স্থানগুলোর আনুষ্ঠানিক অভিভাবক এবং জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলোর রক্ষক হিসাবে সর্বজনীনভাবে প্রশংসিত। আল-জাজিরা, রয়টার্স।