অনুবাদ:মাসুম খলিলী
এক. যিনি চুপ করে থাকে তাকে বোকা বানাবেন না। নীরবতা কেবল শব্দের চেয়ে আরো শক্তিশালী হতে পারে তাই নয়, আপনি যেভাবে কথা বলেছিলেন ঠিক তেমন প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করার সময় চুপচাপ থাকতে অনেক পরিপক্বতা, প্রচেষ্টা এবং বুদ্ধি লাগে। শিখতে এবং শিখাতে এটি একটি শক্তিশালী উপকরণ হতে পারে।
পূনশ্চঃ
এক. আজ বিশ্বে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। খুব কম লোকই একসাথে কাজ করতে চায় এবং একে অপরকে সফল হতে সাহায্য করে। এর পরিবর্তে, অন্যরা ভালো করলে আমরা ঈর্ষান্বিত হই। এটা ভুল কাজ। অন্যের জন্য সুখী হতে চেষ্টা করুন।
দুই. প্রতিদিন, সমাজ আমাদের কাছে যা চায় তা হওয়ার জন্য আমরা অনেক চাপের মুখোমুখি হই। কিন্তু জীবন সেভাবে তৈরি হয় না। আমরা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাই; আমরা পরীক্ষার সম্মুখিন হই। এটাই হলো জীবনের বাস্তব পথ। কিন্তু যখন আমরা সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে শক্তি চাই, তখন তিনি আমাদের সাহস দেন আর আমাদের জীবনকে চালিয়ে যেতে এর বিশেষ প্রয়োজন।
তিন. এই সময়ে চলমান থাকাটাই হতে পারে সেরা কাজ। এর অর্থ এই নয় যে আপনি অতীত ভুলে যাচ্ছেন, এর সহজ অর্থ হ’ল আঘাতের পরও সন্তুষ্টি বা সুখকে আপনি বেছে নিয়েছেন। আপনি যখন কাউকে ক্ষমা করেন, তার মানে তাকে যেভাবে খুশি চলতে দেয়া নয়। এটি আপনাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি মুক্ত সুযোগ দেয়। নিজের প্রতি বিশেষভাবে সদয় হোন। আপনার মানসিক শান্তির বিষয়ে আপস করবেন না।
চার. ঈমান মানে হলো আপনি যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যান না কেন তা বিবেচনা না করেই এই বিশ্বাস করা যে সর্বশক্তিমান আপনার পিছনে রয়েছেন। যা ঘটে চলছে তা আপনি যখন বুঝতে পারবেন না, তখনও আপনি তাঁর উপর আস্থা রাখেন। আপনি জানেন যে তিনি আপনাকে প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেবেন। বেঁচে থাকার সেরা আদর্শ হলো আপনি সাধ্যমত চেষ্টা করবেন, বাকিটা তাঁর উপর ছেড়ে দেবেন!
পাঁচ. দান জীবিকাকে বৃদ্ধি করে এবং সম্পদের সুরক্ষা দেয়। আমাদের প্রতিদান প্রচুর পরিমাণে বাড়ানোর একটি উপায় হ’ল এটি যতই ছোট হোক না কেন এখনই দান করা, এটি হবে আখেরাতে আমাদের সুরক্ষা দানকারী।
ছয়. পরাক্রমশালী। জীবনের প্রতিটি সংকট সম্পূর্ণ আস্থা নিয়ে আপনার কাছাকাছি যাওয়ার অনন্য সুযোগ। আপনি আমাদের প্রচুর পরিমাণে কৃপা প্রদর্শন করেছেন এবং দুর্দশার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কীভাবে ধৈর্য ধারণ করতে হয় সেটি শিখিয়েছেন। আমাদের রক্ষা করুন, আমাদের স্বাচ্ছন্দ্য দিন এবং ক্ষমা মঞ্জুর করুন!
দ্রষ্টব্যঃ
রহমানের বান্দা তারা, যারা জমিনে নম্রভাবে বিচরণ করে এবং অজ্ঞ লোক যখন তাঁদের লক্ষ্য করে কথা বলে, তখন তাঁরা শান্তিপূর্ণ কথা বলেন।’ (সুরা ফুরকান : ৬৩)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখিরাতের ওপর ঈমান আনে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখিরাতের ওপর ঈমান আনে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখিরাতের ওপর ঈমান আনে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা নীরবতা অবলম্বন করে।’ (বুখারি:: ৬১২০)
* মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি
