তিন/চার দশক আগের আমাদের অঞ্চলে চুকুম ভুধাই শব্দবন্ধটি খুব খুব চালু ছিলো। একজন বলেছিলেন “চুক আছে বুদ্ধি নাই
তারে কয় চুকুম ভুধাই”
তাঁকে উদাহরণ সহ বুঝাতে বলায় তিনি গল্প বললেন:
ছরকুম আলী তার গ্রামের সম্পন্ন কৃষক। মামলা মোকদ্দমা তার নেশা। রাগ করা,উচ্চবাচ্য ও গালাগালি তার নিত্য কর্ম।
গরীব ছখই মিয়ার ছেলে তখই মিয়া ছরকুম আলীকে ডেকে কী যেন বলে গেছে।
ছরকুম গিন্নি স্বামীকে বললেন ” তখইয়ে তোমারে কিতা খইয়া গেছে”
আর যায় কই, ছরকুম আলী লাঠি হাতে চিৎকার করে বলতে লাগলেন ” ছখইর পুয়া তখইয়ে আমারে কিতা কইতো, কিতা খইয়া গেলো হারামজাদায়।” তিনি দৌড়াচ্ছেন। পাঁতি মুরুব্বিরা তাকে থামালেন। তখইকে প্রায় বেঁধে আনা হলো বিচার সভায়।
তখই জানালো, হাওরে গিয়েছিলো,দেখেছে ছরকুমছার জমির ফসলে মৌয়াপোঁকার আক্রমণ ঘটেছে। সে বলে গেছে,”ছাছায় তান জমিনো ওষুধ যেন জলদি ছিটাইন”।
ছরকুম চিল্লাচ্ছেন, “মিছামাত, মিছামাত….।”
অগত্যা সালিশরা সরজমিনে তদন্ত করিয়ে জানলেন ঘটনা সত্য।
তারা সম্মিলিত রায় দিলেন ” পুয়াগুর মাথা আতাইয়া দিলাউক্কা। হে আফনার ভালাউ চাইছে।”
ছরকুম বললেন ” দিতাম নায় মাথা আতাইয়া, হে ছিল্লাইয়া খইলো কেনে, ঘরো আইয়া খইলোনা খেনে।”
চুকাল মানুষ, তার জিদ কে ছাড়ায়?
আর গ্রামবাসীও শেষমেশ একমত হয়ে তাকে চুকুম ভুধাই উপাধি দিয়ে একঘরে করে দিলেন।
কাহিনিটি ঘটনাক্রমে মনে পড়লো আর বলতে ইচ্ছে করছে, ‘পৃথিবীর নেতৃত্ব এখন চুকুম ভুধাইদের হাতে। সাবধান! ওদেরকে একঘরে করা যাবে না, ওদের অস্ত্র আছে, আছে ঝুটঝামেলা বাধনোর মত জোটও!!