সাঈদ চৌধুরী
চলে গেলেন প্রখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব, বিলেতে মুসলিম কমিউনিটির শ্রদ্ধেয় মুরব্বি, দাওয়াতুল ইসলাম ইউকে এণ্ড আয়ার‘র প্রতিষ্ঠাতা আমীর একেএম আব্দুস সালাম। ইন্না-লিল্লা-হি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রা-জিউ‘ন। গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর ২০২২) তিনি লন্ডনের ওয়ালথামস্টো এলাকায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন। রেখে গেছেন এক পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান, নাতি-নাতনি সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী। তাঁর ইন্তেকালের খবরে দেশ-বিদেশের পরিচিত মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
একেএম আব্দুস সালাম ছিলেন প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক, আদর্শ সংগঠক ও নিবেদিতপ্রাণ দাঈ ইলাল্লাহ। আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থা ও ইসলামী সমাজ সম্পর্কে ব্যাপক অধ্যয়নের ফলে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত ছিল । রাসুল (স.) জীবনের ওপর বিশেষ পাণ্ডিত্য ছিল। ইসলামী সমাজ গঠনে মরহুমের গবেষণালব্ধ বহু কর্মপন্থা বিলেতে মুসলিম কমিউনিটির বিকাশে ছিল অনন্য সহায়ক। সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনে তিনি ঠাণ্ডা মাথায় যে কোন জটিল ও কঠিন সমস্যা সমাধানে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তাঁর পরে অনেকেই দাওয়াতুল ইসলামের আমীর হয়েছেন, কিন্ত তিনিই আমীর আব্দুস সালাম হিসেবে সর্ব মহলে খ্যাতি লাভ করেছেন।
একেএম আব্দুস সালাম সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বালাগঞ্জ মোক্তারপুর গ্রামের আলোকিত সন্তান। অল্প বয়সে তিনি লন্ডন চলে আসেন এবং দাওয়াতে ইসলামের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন সহজ-সরল, সজ্জন ও অমায়িক। জনহিতকর কাজে এমন নিবেদিতপ্রাণ মানুষ এ যুগে বিরল। সমাজ হিতৈষী, সংস্কৃতিসেবী ও শিক্ষানুরাগী বরেণ্য এই ব্যক্তিত্বের মহা প্রয়ানের মধ্য দিয়ে একটি বর্ণাঢ্য জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটল।
আমি লন্ডন আসার পর তাঁর সাথে পরিচয় হয়। দাওয়াতুল ইসলামের শিক্ষা ও সেবা সেন্টার দারুল উম্মাহ’র পাশেই ছিল আমার শশুর আবু বকর চৌধুরীর বাসা। তাঁরা উভয়ে বেশ ঘনিষ্ট ছিলেন। প্রথম সাক্ষাতে আমিও যেন আপন হয়ে গেলাম।
একবার সংলাপ সাহিত্য-সংষ্কৃতি ফ্রন্টের উদ্যোগে আমি একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। ড. হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ কর্তৃক অনুদিত সাইয়েদ কুতুব শহীদের ‘তাফসীর ফী যিলালিল কোরআন’ প্রকাশনা অনুষ্ঠান। সেখানে তিনি আমাদের অতিথি ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় তিনি সাইয়েদ কুতুব শহীদের জন্ম-মৃত্যু, ফী যিলালিল কোরআনের ভূমিকা এবং অন্যান্য তাফসীরের সাথে মৌলিক তফাৎ, তখনকার সমাজ ব্যবস্থা ও কুতুব শহীদের বিশ্লেষন ইত্যাদি চমৎকার ভাবে বলতে থাকলেন। অনর্গল ভাবে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতেও বলছিলেন। কারণ অনুষ্ঠানে আরেক অতিথি ছিলেন মিশরের ইখওয়ানুল মুসলিমিনের ইউরোপীয় প্রতিনিধি, সৌদী আরবে প্রতিষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড এসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথ (World Assembly of Muslim Youth-WAMY) এর প্রথম নির্বাহী পরিচালক ড. কামাল হালবাওয়ী (Dr. Kamal Helbawy)। আমরা উপস্থিত সকলে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তার কথা শুনলাম। অবশেষে ড. কামাল হালবাওয়ীর বক্তব্যে আব্দুস সালাম সাহেবের আলোচনার এবং দাওয়াতুল ইসলামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর কঠোর শ্রম ও মেধার ভূয়সী প্রশংসা করলেন।
তখন থেকেই এই মহতি ব্যক্তিত্বের কাজের ব্যাপকতার সাথে পরিচিত হই। এরপর সব সময় যোগাযোগ ছিল। প্রায়ই টেলিফোনে নানা বিষয়ে আলোচনা হত। হঠাৎ করে তিনি চলে গেলেন, রেখে গেছেন অনেক স্মৃতি। বড় পরিসরে তা লিখবো ইনশাআল্লাহ।
মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমীন।
আরও পড়ুন
কোথাও আগুন লাগলে সতর্কতার জন্য যা করবেন, যা করবেন না
আগুনে পুড়লে মৃত ব্যক্তির মর্যাদা ও আগুন লাগলে যে দোয়া পড়বেন
দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স; প্রয়োজন সতর্কতা
দেহকে সুস্থ রাখবে অ্যালোভেরা
বসন্তের বাতাসে অ্যালার্জির প্রবণতা, একটু গাফিলতি হলেই মারাত্মক বিপদ
রাসূল সা: প্রবর্তিত খাদ্যবিজ্ঞান । ডা: মো: তৌহিদ হোসাইন
তরমুজের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
যে খাবারে শিশুর উচ্চতা বাড়ে
ইন্ডাস্ট্রির সকলের স্বার্থে কপিরাইটের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিঃ ফাহিম ফয়সাল
অতিরিক্ত আবেগ মনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে
আক্ষেপ প্রকাশ করলেন ‘ছুটির ঘণ্টা’র নির্মাতার মেয়ে বিন্দি
ওজন কমাতে সাহায্য করে যে সকল খাবার