অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। ভয়াবহ সংঘাতের মধ্যে ৪৮ দিন অতিবাহিত হবার পর শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে সাময়ীক এই যুদ্ধবিরতি। কাতার ও মাশরের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাস চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে শর্তশাপেক্ষে একমত হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি দোহায় বলেছেন, গাজায় অতিরিক্ত সাহায্য পাঠানো হবে এবং বৃদ্ধ ও নারীসহ প্রথম ধাপে জিম্মিদের স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় মুক্ত করা হবে। চার দিনে মোট ৫০জনকে মুক্তি দেওয়া হবে। আমরা সবাই আশা করি এই যুদ্ধবিরতি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার জন্য বৃহৎ পরিসরে কাজ করার রাস্তা তৈরি করে দেবে।
প্রথমদিন শুক্রবার বিকেলে নারী ও শিশুসহ ১৩জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে থাকা বেশ কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকেও মুক্তি দেওয়া হবে। সেই সাথে অবরুদ্ধ ও বিধ্বস্ত অঞ্চলটিতে বেশি পরিমাণে মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ খুলে দেওয়া হবে।
রয়টার্সের খবের বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে ট্যাংকসহ কয়েক ডজন ইসরায়েলি সামরিক যানকে সরে যেতে দেখেছেন। সাঁজোয়া কলামে থাকা বেশ কয়েকজন সৈন্য বলেছেন, তাদের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের রাস্তায় জনতার ভীড় ছিল। সেখান থেকে ফিলিস্তিনি নাগরিক খালেদ আবু আনজাহ রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্যমতো প্রতিরোধ করে আশাবাদী ও গর্বিত। শত ব্যথা সত্ত্বেও আমাদের অর্জনে আমরা আনন্দিত।’
রয়টার্স টিভি ফুটেজে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর মিসর থেকে ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘মানবতার জন্য একতা’ ‘গাজার ভাইদের জন্য’।
মিসর বলেছে, যুদ্ধবিরতিতে প্রতিদিন গাজায় ১ লাখ ৩০ হাজার লিটার ডিজেল ও চার ট্রাক গ্যাস সরবরাহ করা হবে এবং প্রতিদিন ২০০ ট্রাক সাহায্য গাজায় প্রবেশ করবে।
ইসরায়েলের মতে, ৭ অক্টোবর হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ৪৮ দিন ধরে অবরুদ্ধ ছিটমহলে ইসরায়েলি বোমা হামলায় প্রায় ১৪ হাজার ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। নিহতের মধ্যে ৪০ শতাংশই শিশু। গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে হাজার হাজার মানুষ সহিসংতা থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন।