কানাডায় গিয়ে ক্ষমা চাইলেন পোপ

ধর্ম ও দর্শন সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

কানাডায় ক্যাথলিক চার্চ পরিচালিত আবাসিক স্কুলে আদিবাসী শিশুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন পোপ ফ্রান্সিস। সোমবার দেশটিতে পৌঁছে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চান তিনি।

সোমবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ আলবার্টার মাস্কওয়াসিসে সফরে যান পোপ ফ্রান্সিস। সেখানে এরমিনস্কিন ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের সাবেক স্থাপনা পরিদর্শন করেন তিনি। জানান, ঐ ঘটনায় সমবেদনা জানানো এবং ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য তিনি সেখানে হাজির হয়েছেন।

আদিবাসী নেতা, আবাসিক স্কুলের নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষ এবং প্রবীণদের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, আমি এখানে এসেছি কারণ আমার অনুশোচনামূলক তীর্থযাত্রার প্রথম ধাপটি হলো আবারও ক্ষমা চাওয়া, আবারও আপনাদের এটা জানানো যে, এ ঘটনায় আমি গভীরভাবে দুঃখিত।

তিনি বলেন, কানাডার আদিবাসী স্কুলে যা ঘটেছিল সেটি খ্রিষ্টানদের ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বরং এটি ছিল একটি বিপর্যয়কর ত্রুটি। তার ভাষায়, আদিবাসীদের বিরুদ্ধে অনেক খ্রিষ্টানদের সংঘটিত মন্দ কাজের জন্য আমি বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

এরমিনস্কিন রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়া ড. উইল্টন লিটলচাইল্ড দীর্ঘদিন ধরে এ ঘটনায় পোপের ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বিষয়টিতে ক্ষমা চাওয়ায় পোপ ফ্রান্সিসকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

১৮৬৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দেড় লক্ষাধিক আদিবাসী শিশুকে সভ্য করে তোলার নামে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ১৩০টিরও বেশি খ্রিষ্টীয় আবাসিক স্কুলে পাঠানো হয়। কানাডার সরকার ও ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ (গির্জা) এসব স্কুল পরিচালনা করত। এসব প্রতিষ্ঠানে শিশুদের নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি চর্চার অনুমতি ছিল না। অনেক শিশুই নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়। ধারণা করা হয়ে থাকে এসব স্কুলে থাকার সময়ে প্রায় ৬ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়। এর বড় কারণ আবাসিক স্কুলগুলোর অব্যবস্থাপনা। স্কুল কর্তৃপক্ষের শারীরিক এবং যৌন নিপীড়নের কথাও জানা যায়।২০২১ সালের মে মাসে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কামলুপস এলাকার একটি পুরোনো আবাসিক স্কুলের ভবন থেকে ২১৫ শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধার হয়। এসব শিশু আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ান বলে জানা যায়। ঐ স্কুলটি ১৯৭৮ সালে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত বছরের জুনে সাসকাচেওয়ান প্রদেশের পুরোনো একটি আদিবাসী আবাসিক স্কুলে আরো ৭৫১টি কোনো চিহ্ন না থাকা কবরের সন্ধান মেলে।

দুই গণকবরে প্রায় ১ হাজার দেহাবশেষ উদ্ধারের ঘটনায় চার্চ পরিচালিত আবাসিক স্কুলে আদিবাসী শিশুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা নতুন করে সামনে আসে। এসব স্কুল পরিচালনায় গির্জার ভূমিকা নিয়ে পোপ ফ্রান্সিসকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

গত বছরের জুনে অটোয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রুডো বলেন, আমি সরাসরি পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে এই ক্ষমা চাওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে শুধু অবহিত করেছি তা নয় বরং বলেছি তিনি যেন কানাডার মাটিতে এসে আদিবাসীদের কাছে ক্ষমা চান। অবশেষে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিপর্যয়কর ঐ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইলেন পোপ ফ্রান্সিস।

সূত্র: আল জাজিরা

আরও পড়ুন
কোথাও আগুন লাগলে সতর্কতার জন্য যা করবেন, যা করবেন না
আগুনে পুড়লে মৃত ব্যক্তির মর্যাদা ও আগুন লাগলে যে দোয়া পড়বেন
দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স; প্রয়োজন সতর্কতা
দেহকে সুস্থ রাখবে অ্যালোভেরা
বসন্তের বাতাসে অ্যালার্জির প্রবণতা, একটু গাফিলতি হলেই মারাত্মক বিপদ
রাসূল সা: প্রবর্তিত খাদ্যবিজ্ঞান । ডা: মো: তৌহিদ হোসাইন
তরমুজের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
যে খাবারে শিশুর উচ্চতা বাড়ে
ইন্ডাস্ট্রির সকলের স্বার্থে কপিরাইটের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিঃ ফাহিম ফয়সাল
অতিরিক্ত আবেগ মনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে
আক্ষেপ প্রকাশ করলেন ‘ছুটির ঘণ্টা’র নির্মাতার মেয়ে বিন্দি
ওজন কমাতে সাহায্য করে যে সকল খাবার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *