একই নাম হওয়ায় নির্দোষ ব্যক্তি হলো আসামী, সারাদেশের আদালত-থানা-জেলে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার নিদের্শনা

বাংলাদেশ মতামত সময় টিভি সময় সংবাদ
শেয়ার করুন

মোহাম্মদ শিশির মনির। শিক্ষাজীবনে ছিলেন তুখোড় মেধাবী একজন ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে শুরু করেন তার দৃপ্ত পথচলা। লিখেছেন ‘An Overview of 100 Sensational Murder Cases of Bangladesh’ শিরোনামের বইটি। বইয়ে রয়েছে ১০০ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার বিশ্লেষণ যেগুলো বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের জটিল জটিল ফৌজদারি মামলা পরিচালনা করে সফল হয়েছেন শিশির মনির। ইতিমধ্যে ভারি করে ফেলেছেন নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিও। সে সবের মধ্য হতে ব্যক্তিগত ফেসবুকে লিখে যাচ্ছেন মামলা পরিচালনার নানান ঘটনা। এবারের পর্বে রয়েছে তেমনই একটি বিষয়।

ভুল পরিচয়_মাদ্রাসা শিক্ষক জহির_জামিন_রিট নাকি কোয়াশমেন্ট_ওয়ারেন্ট স্টে_পিবিআই তদন্ত_আসল ঘটনা উদঘাটন_অতঃপর মুক্তি_বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা

১। বছর দুই আগের কথা। সুপ্রীমকোর্ট বার ভবনের ৩৫২ (পুরাতন) নম্বর রুমে বসে গল্প করছি। দুপুর ২ টার দিকে হোয়াটসঅ্যাপ এ রিং বেজে উঠল। নম্বরটি চিনতে পারি নাই। ২/৩ বার জিজ্ঞাসা করলাম কে? কে? নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘শিশির ভাই! আমি জহির।’ তখনও মনে করতে পারি নাই। স্যরি ভাই চিনতে পারছি না। তিনি কিছুটা থমকে গিয়ে আবারও পরিচয় দিলেন। আমি সাথে সাথে বললাম, ‘জহির ভাই!! কেমন আছেন? স্যরি আপনার কন্ঠ চিনতে পারি নাই। কি করছেন? কোথায় আছেন? চিনতে না পারার কারণে মাফ করে দিয়েন ভাই।’ তিনি ছাত্র জীবন থেকেই অতি পরিচিত। এখন একটি স্বনামধন্য মাদ্রাসার ভাইস-প্রিন্সিপাল।

২। কুশলাদি বিনিময় হওয়ার পর জিজ্ঞাসা করলাম, ভাই! কি ভেবে স্মরণ করলেন?’ বললেন সাক্ষাতে কথা বলতে চান। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘বিষয় কি?’ উত্তরে বললেন, ‘আইনি বিষয়। জরুরী দেখা করা দরকার। পারলে আজকেই দেখা করা দরকার।’ বুঝলাম ফোনে তিনি সব বলতে চাচ্ছেন না। বললাম, ‘কালকে দুপুরে কোর্টে আসেন।’ বললেন, ‘ঠিক আছে ভাই।’ শুধু বললাম, ‘কাগজপত্র কিছু থাকলে নিয়ে আসবেন।’ ফোন রেখে আমি আমার কাজে লেগে গেলাম।

৩। পরের দিন জোহরের নামাজ পরে খেতে বসলাম। এমনি দেখি জহির ভাই। দাঁড়িয়ে মুসাফা করলাম। চেহারা আগের মতই আছে। কোন পরিবর্তন নাই। কণ্ঠও একই রকম। স্বাস্হ্য একটু পরিবর্তন হয়েছে। খুবই বিনয়ী ভদ্রলোক। কুরআনে হাফেজ। তাড়াতাড়ি খাবার শেষ করলাম। দুপুরে খেয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করলাম? কিছুটা লজ্জা পেলেন। বুঝলাম এখনও খাওয়া হয় নাই। এদিকে আমার কোর্টে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। বললাম, ‘আমার সাথে চলেন। আর যেতে যেতে আপনার সমস্যাটা শুনি।’ বললেন, ‘জি’।

৪। পুরাতন ভবন থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কি হয়েছে? বললেন, ‘আমাকে গ্রেফতার করার জন্য বাড়িতে পুলিশ গেছে। আমার নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা হয়েছে। আমি নাকি পলাতক আসামী! আমার গ্রামের বাড়িতে তন্ন তন্ন করে খুঁজতেছে। আমি ত ঢাকায় থাকি। বাড়িতে সবাই ভয় পেয়ে গেছে। অথচ আমি কোনদিন মামলার আসামী ছিলাম না। আমি জীবনেও জেলে যাইনি। আমার নামে কোন মামলা আগেও ছিল না এখনও নাই। বিষয়টি নিয়ে আমি ঢাকা কোর্টের আইনজীবীদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাকে surrender করার পরামর্শ দিয়েছেন। জামিন নেয়ার জন্য বলতেছেন। আমি ত আসামী নই। আমি কেন surrender করব? আমি কেন জামিন নিতে যাব? আমার এখন কি করণীয়? পরামর্শ দেন।’

৫। বিষয়টি বেশ কৌতুহল উদ্দীপক। জিজ্ঞাসা করলাম তাহলে গ্রেফতারী পরোয়ানা গেল কেন? আপনার নামে গেছে? আপনি কি মামলার কাগজ দেখেছেন? আইনজীবী কি আপনাকে কাগজ দিয়েছে? বা মামলার নম্বর জানেন? পরোয়ানার কাগজ দেখেছেন আপনি? বলতেই মোবাইল খুলে ছবি দেখালেন। বললাম আমার মোবাইলে ফরওয়ার্ড করে দেন। বলতে বলতে কোর্টে ঢুকলাম। তিনি বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলেন। প্রায় ২০ মিনিট পর মামলা শেষ করে বের হয়ে আসলাম। বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকে আবার আলোচনা শুরু হল। বললাম, ‘আর কিছু বলবেন।?’ বললেন, ‘না।’

পরক্ষণেই বললেন, ‘আরেকজন আমার নাম ব্যবহার করে জামিন নিয়ে বিদেশে চলে গেছে। এখন হাজিরা না দেয়ার কারণে তার জামিন বাতিল হয়ে গেছে। ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। সেই ওয়ারেন্ট আমার বাড়ি গিয়ে হাজির হয়েছে।’

এই তথ্যটি খুবই মূল্যবান। বললাম, ‘আমাকে কাগজ দেখাতে পারবেন?’ বললেন, জি পারব’। বললাম, ‘লিখেন কী কী কাগজ লাগবে? মামলার এফআইআর, এজাহার, পুলিশ ফরওয়ার্ডিং, আদেশনামা, গ্রেফতারী পরোয়ানা, জামিননামা, ওকালাতনামা, জেল কর্তৃপক্ষের রেকর্ড ইত্যাদি।’

বললেন,’আমি দ্রুত ব্যবস্থা করছি।’ এই কথা বলে চলে গেলেন। বেশ কয়েকদিন যোগাযোগ নাই। হঠাৎ একদিন মেসেজ দিলেন দেখা করতে চান। কাগজ পত্র নিয়ে ধানমন্ডির চেম্বারে বিকালে আসতে বললাম। যথারীতি আসরের সময় আরেকজনসহ হাজির হলেন।

৬। বিষয়টি বেশ innovative বিদায় আমার প্রথম জুনিয়র সাদ্দামকে বসতে বললাম। সে উপস্থিত বুদ্ধি দিতে পারে। জহির ভাই বললেন, ‘জেল কর্তৃপক্ষের রেকর্ড ত পাই নাই। আমাকে দিবে না। এখন কি করি?’ বললাম, ‘সেটা আমরা দেখব।’ বাকিগুলো দেন। ঐখানে বসেই ভাবতে লাগলাম কোথায় পাব জেলের রেকর্ড? কে দিবে? আইনের কোন বিধান বলে পাওয়া যাবে? হঠাৎ সাদ্দাম বলল, ‘তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আমরা দরখাস্ত লিখতে পারি। এই আইনে তথ্য দেয়ার বাধ্যবাধকতা আছে। বললাম, ‘আইনটি নিয়ে আস।’ পড়লাম। দেখলাম এই আইনে দরখাস্ত করার বিধান আছে। আজই দরখাস্ত করে ফেল। এই কথা বলে জহির ভাইকে বিদায় দিলাম। এখন যান, আপনাকে পরে জানাব। পরের দিন একজন আইনজীবীর মাধ্যমে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে দরখাস্ত পাঠালাম। রিসিপ্ট কপি সাথে নিয়ে আসল। এরই মধ্যে ঢাকা কোর্টের আইনজীবী জনাব মুজাহিদুল ইসলামের মাধ্যমে জেল প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে প্রাথমিক পজিটিভ তথ্য পাওয়া গেল। কিছুটা চিন্তা মুক্ত হলাম।

৭। জেল কর্তৃপক্ষ আমাকে ফোন করল। এই ধরনের দরখাস্ত কেউ দেয় না। তারা কিছুটা অবাক হয়েছে। বললাম আমাকে এই মামলার রেকর্ডের সত্যায়িত কপি দেন। জিজ্ঞাসা করে, ‘এটা দিয়ে আমি কি করব?’ বললাম, আইনি কাজে লাগাব।’ জবাবে বললেন, ‘আমাদের কোন সমস্যা হবে না ত?’ বললাম, না। আপনাদের সমস্যা হবে কেন? আমিই বা আপনাদের সমস্যা করব কেন? ইত্যাদি অনেক কথা। বুঝতে পারলাম সহজে পাওয়া যাবে না। সাদ্দামের বন্ধু মিজানের পরিচিত এক ভদ্রলোক জেল প্রশাসনে কাজ করে। তার মাধ্যমে সাদ্দাম কথা বলল। তিনি বিষয়টি বুঝতে পারলেন। আমাদের সাহায্য করলেন। সত্যায়িত একটি ফটোকপি হাতে হাতে দিলেন। ঐ কপি দেখে আমরা আনন্দে নেচে উঠলাম। দেখা যায়, জহির নামে যিনি জেলে ছিলেন তার ছবির সাথে জহির ভাইয়ের ছবির কোন মিল নাই। সে অন্য আরেকজন। এমনকি আঙ্গুলের ছাপেরও মিল নাই। ঐ ব্যক্তির মুখে দাঁড়িও নাই। বয়সও কম। কিন্তু একই এলাকায় বাড়ি। সেই মূলত এই সমস্যার মূল। জহির ভাইকে জানালাম। আমরা তথ্য পেয়েছি। ইনশাল্লাহ একটা ব্যবস্থা হবে। দোয়া করেন। ভদ্রলোক কিছুটা স্বস্তিবোধ করলেন।

৮। তথ্য হাতে পেলাম। এই তথ্য আইনের কোন্ বিধান অনুযায়ী কাজে লাগবে? এটাই গবেষণার বিষয়। কারন, তার নামে ওয়ারেন্ট হয়ে গেছে। পলাতক আসামী ত আইনের আশ্রয় নিতে পারে না। শত বছরের পুরানো নীতি, A fugitive can not take shelter under any provision of law. Either he has to go to jail or obtain bail. ‘যদি আইনের সুবিধা পেতে হয় তাহলে তাকে আইনের কাছে Surrender করতে হবে। সারাজীবন এই কথাই শিখেছি। তাহলে কি জহির ভাইকে জেলে যেতে হবে? আর কোন উপায় নেই? তিনি ত আসামী নয়! তিনি ত প্রতারণার স্বীকার! নিশ্চই একটা না একটা পথ আছে। হয়ত আমরা জানি না। এখানেই ল’ল্যাব এর কারুকাজ শুরু। নামের স্বার্থকতা প্রমাণ করার চ্যালেন্জ।

৯। আমার জুনিয়র বন্ধুদের ডেকে কাজ দিলাম। বিশেষ করে সাদ্দাম, সামি ও সাকিব। তারা খুঁজতে লাগল। DLR, BLC, ADC, ALR, মানুপাত্র ইত্যাদি। কাছাকাছি কয়েকটি নজির পাওয়া যায়। কিন্তু to the point পাওয়া যায় না। আবার খুঁজতে লাগল। এ যেন সাগরে বিপাশার পানির মত। অন্ধকারে কালো বিড়াল খোঁজার মত ঘটনা। তবুও হাল ছাড়া যাবে না। খুঁজতে খুঁজতে বিরক্তি এসে যায়। তবুও লেগে থাকতে হয়। অবশেষে একটি নজির পাওয়া গেল। সেই মামলায় সাজা হয়ে গিয়েছিল। Surender না করে সরাসরি রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছিল। হাইকোর্ট পজিটিভ রায় দিয়েছিল।

১০। সাদ্দামকে বললাম তুমি মামলাটি draft কর। অতীতের নজির থেকে ভাষা ব্যবহার করতে হবে। যেন আদালতকে বলা যায় আমরা ঐ নজির থেকে ভাষা ব্যবহার করেছি। আমাদের উচ্চ আদালতের ভাষা। এই ভাষা ignore করার সুযোগ নাই। সে তাই করল। খুব সুন্দর draft হয়েছে। জহির ভাইকে ডেকে সব বলা হল। রিট আবেদন দায়ের করা হল challenging the warrant of arrest and direction to hold an inquiry to ascertain the real perpetrator.

১১। যথারীতি মামলাটি কার্যতালিকায় আসল। শুনানির জন্য আমরা রিসার্চ Bundle তৈরি করলাম। মোট ৪ টি নজির দিয়ে এই bundle. দুই কপি জজ সাহেবদের জন্য আরেক কপি সরকার পক্ষের জন্য। আইটেম ছিল ১০৯ নম্বর। ১০০ পার হওয়ার পর নিজেকে বেশ নার্ভাস মনে হচ্ছিল। কি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে? কি উত্তর দিব? সঠিক করে বুঝাতে পারব কি না? আমার উপস্থাপনের দুর্বলতার কারণে জহির ভাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় কি না? আমার উপর অর্পিত আমানত। আমি কি পারব তাকে জেল থেকে বাঁচাতে? নানান প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল। আগে এই রকম খুব কমই হয়েছে। আইটেম ডাকল। আমি দাঁড়িয়ে বললাম, ‘My Lords, this is a different type of writ petition. Completely unusual but a fit case to interfere in writ jurisdiction. Admittedly, a fugitive can not take shelter of law. Your Lordship passed a judgment in the case of Sarwar Alam. Moreover, there are plethora of decisions of our apex court that a fugitive can not get any remedy under the law. Either he has to go to jail or obtain bail. Another very important question of law involved whether this petitioner can avail writ jurisdiction or not? If not can he avail inherent jurisdiction under section 561A of the Code of Criminal Procedure without going to jail? These two important questions need to be answered in the line of previous decisions of our apex court.’

এই introduction এর পর আমি তিনটি সুনির্দিষ্ট submission রাখলাম।

এক. রিট petition is maintainable even he is fugitive in the eye of law.

দুই. Quashment under section 561A is not appropriate petition because in that case he will be treated as accused.

তিন. Warrant of arrest should be stayed and an inquiry committee should be formed.

রিট চলবে কি না?
এক. Writ Petition is maintainable (রিট মোকাদ্দমা চলবে) আপাত অর্থে মনে হতে পারে ফৌজদারী বিষয়ে রিট কেমনে চলবে? তাছাড়া পলাতক আসামী কেমনে রিট দায়ের করবে? এই মামলার প্রেক্ষপট পুরাই ভিন্ন। আমি ত fugitive নই। আমি জীবনে কোনদিন জেলে যাই নাই। দেখেন জেলের রেকর্ড। এই লোক ত আমি নই। জেলের সকল রেকর্ড কল করলেই গুমর ফাঁস হয়ে যাবে। এই ছবি কার? এই ছাপ কার? আমি কেন পলাতক আসামীর কাতারে পরব? আমি কেন নিজ কপালে কলঙ্ক লেপন করব? এই মালার কাগজ দেখুন। খিলগাঁওয়ের ঘটনা। অজ্ঞাত নামাদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে মামলা হয়েছে। তারপর পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে কোর্টে চালান করেছে। তাদের একজন আমার নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে জেল খেটেছে। তারাপর হাজিরা না দিয়ে বিদেশ চলে গেছে। আমি কেন আসামী হব? এই কথা বলে research bundle থেকে নজিরগুলো উপস্থাপন করলাম। একটি নজিরের line by line পড়ে শুনালাম। সবকিছু দেখে জজ সাহেবরা স্তব্দ হয়ে গেলেন। সবাই খুব নীরব হয়ে গেল। আমার ভয় কিছুটা কমল।

Quashment হবে কি না?
দুই. সকলেই surrender করার কথা বলে। আমি ত surrender করব না। এক নামে কি দুই ব্যক্তি জেল খাটবে? এটা কি করে সম্ভব? আমি যদি আসামী না হই তাহলে quash করব কি? আদালতই বা কী সিদ্ধান্ত নিবে? কিভাবে নিবে? আমার মতে এখানে 561A petition is not maintainable at all.

Stay warrant of arrest
তিন. Your Lordship please see my prayer. I want an independent inquiry and in the meantime stay the operation of the order issuing warrant of arrest.

১২। আমাকে শুনার পর (আদালত) সরকার পক্ষকে বলতে বললেন। সরকার পক্ষ দাঁড়িয়ে একটি রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে দিল। সবাই গুপ্ত হাসি হাসল।

জজসাহেব বললেন, ‘আপনার friend কি বলতেছে আর আপনি কি বলতেছেন? এটা কোন কথা হল!’ তারপর তিনি থামলেন। জজ সাহেব বললেন, ‘tomorrow for Order.’

১৩। পরের দিন সকাল সাড়ে ১০টায় কোর্টে হাজির হলাম। আইটেম নম্বর ৫। ১০টা ৫০ মিনিট এর দিকে আইটেম ডাকল। আমি বেশ চিন্তিত ছিলাম। ডেকেই আদেশ দিলেন, ‘Yes. Rule as to why the warrant of arrest shall not be declared without lawful authority and is of no legal effect. Pending hearing of the Rule, stay operation of the Order issuing warrant of arrest and Police Bureau of Investigation is directed to conduct an investigation ascertaining the real perpetrator within 60 days and submit a report before this Court.’ আমি দাঁড়িয়ে much obliged বলে চলে আসলাম। সাদ্দাম জহির ভাইকে জানাল। তিনি খুশিতে ‘আলহামদুলিল্লাহ পড়লেন।’

১৪। আদেশ সাইন হল। নোটিশ জারি রল। পুলিশের তৎপরতা বন্ধ হল। PBI এর অফিসে জহির ভাইকে ডাকা হল। তিনি যেতে ভয় পাচ্ছিলেন। সাদ্দামকে সাথে যেতে বললাম। জহির ভাইকে দেখেই তারা মন্তব্য করল, ‘আপনি ত এই লোক না।’ ভাল ব্যবহার করল। সাদ্দামের সাথেও অনেক আলোচনা করল। প্রকৃত লোক চিন্তিত হল। সে জামিন নিয়ে বিদেশে চলে গেছে। PBI আদালতে এই রিপোর্ট দায়ের করল। শুনানি হল। সরকার পক্ষ কোন জবাব দিতে পারল না। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে জহির ভাইকে মামলা থেকে রিলিজ দিলেন। আমি একটি নিবেদন করলাম, ‘My Lords, জানি না আরও কত লোক এইভাবে ভুগান্তির স্বীকার হচ্ছে। একটি কাজ করলে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যাবে। জজ সাহেব বললেন, কি চান বলেন? বললাম, সারাদেশের আদালত, থানা ও জেলে Biometric System introduce করার নিদের্শনা চাই। আদালত খুশি হয়ে এই নির্দেশন দিলেন। শুনেছি কাজ শুরু হয়েছে। ক্রমান্বয়ে বাস্তবায়ন করা হবে।

জহির ভাই দেখা করতে আসলেন। কোলাকুলি করলেন। মুচকি হাসলেন। সকল পরিশ্রম সন্তুষ্টিতে ভরে গেল। আলহামদুলিল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *