এই লড়াই বিশ্বজগতের প্রভুর জন্য কিছুই নয় : মুফতি মেনক

ধর্ম ও দর্শন সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

অনুবাদ:মাসুম খলিলী

এক. আপনি মনে করতে পারেন এই লড়াই আপনার জন্য খুব বড়। আপনি জীবনের যত্ন ও চাপ দ্বারা আচ্ছন্ন। কিন্তু মনে রাখবেন, বিশ্বজগতের প্রভুর কাছে এটি কিছুই নয়। তাঁর পক্ষে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। তাকে বিশ্বাস করুন এবং দেখুন কিভাবে জিনিসগুলি উদ্ঘাটিত হয়। আমরা যা করতে পারি না সে সবই তিনি দেখভাল করবেন। বিশ্বাস বজায় রাখুন।

দুই. আপনার সবকিছুরই সমাধানের দরকার নেই। কিছু প্রশ্নের উত্তরের প্রয়োজন হয় না এবং এগুলোকে সেভাবে থাকতে দেয়াই ভালো। আপনার কেবল দৃঢচেতা, বিশ্বাসে পূর্ণ এবং দৃঢভাবে আস্থাশীল হৃদয় প্রয়োজন। ভালবাসা এবং শান্তিতে ভরপুর হৃদয়। আপনি অবাক হয়ে দেখবেন কতকিছু থেকে আপনি বাইরে বেরিয়ে আসতে পারছেন, শুধু অব্যক্ত থেকে।

তিন. আপনি স্বাচ্ছন্দ্য অবস্থায় অসুস্থ বোধ করছেন কারণ আপনি ভাবেন যে সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যের যা দেখছেন তার অভাব রয়েছে আপনার জীবনে। এর ফাঁদে পড়বেন না। বুঝতে চেষ্টা করুন যে আপনি যে কণ্ঠ শুনছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি যে পোস্ট দেখেন তার প্রতিটি আপনার জন্য নয়। বুদ্ধিমান হতে শিখুন। আপনার মনের স্বচ্ছতা রক্ষা করুন।

পূনশ্চঃ

এক. আপনি কি অন্যের দুর্ভাগ্য থেকে আনন্দ লাভ করেন? অন্য কারো সাথে খারাপ কিছু ঘটলে আপনি গোপনে খুশি হন। সতর্ক হোন। এটি এমন একটি বিষাক্ত হৃদয়ের লক্ষণ যা আপনি পরীক্ষা না করলে এর অবস্থা আরও খারাপ হবে। সহমর্মী হোন, সদয় হোন এবং অন্যের দুঃখে খুশির পরিবর্তে সহানুভূতি দেখান।

দুই. প্রত্যেকেরই নিজস্ব সংগ্রাম আছে। আপনি যে পরীক্ষা ও কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন তার কারণে নিজেকে নির্দয় করে তুলবেন না। কেউ জানে না অন্য ব্যক্তি কিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীতে এর মধ্যেই অনেক দু:খ কষ্ট চলছে। ধৈর্য ধরুন। এটি এখন তিক্ত হতে পারে, তবে এর শেষ ফলাফল হবে মিষ্টি।

তিন. ইতিবাচকতার দিকে তাকান। দুর্যোগ যখন আঘাত হানে তা শুধু অজ্ঞানদের জন্য নয়। আপনার স্রষ্টার সাথে আপনার একটি দৃঢ সংযোগ থাকা দরকার। আপনি বুঝতে পারবেন যে কঠিন সময় তা আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কিভাবে সহায়তা করছে। সংগ্রাম এবং বিগ্রহ জীবনের উন্নত পাঠ। তাদের আলিঙ্গন করুন এবং এই দৃষ্টিকোণ দিয়ে জিনিসগুলি দেখুন।

দ্রষ্টব্যঃ

আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে নিদর্শনাবলী রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্য। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহর স্মরণ করে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে, আর বলে ‘হে আমাদের রব! আপনি এগুলো অনর্থক সৃষ্টি করেননি, আপনি অত্যন্ত পবিত্র, অতএব আপনি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন (আলে ইমরান: ১৯০-১৯১)

অতঃপর যখন তোমরা সালাত সমাপ্ত করবে তখন দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে, অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ হবে তখন যথাযথ সালাত কায়েম করবে; নির্ধারিত সময়ে সালাত কায়েম করা মুমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য। (আন নিসা: ১০৩.)

আর আপনি আপনার রবকে নিজ মনে স্মরণ করুন সবিনয়ে, সশংকচিত্তে ও অনুচ্চস্বরে, সকালে ও সন্ধ্যায়। আর উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না। (আল আরাফ: ২০৫)

* মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি

* মাসুম খলিলী সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *