রাজধানী ঢাকার কাকরাইল এলাকায় আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের নতুন ভবন আঞ্জুমান জে আর টাওয়ারের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (৩ মার্চ) নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে এতিম শিশুদের সঙ্গে ইফতার করেন তিনি। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদ, খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের সভাপতি মুফলেহ আর ওসমানী ও ট্রাস্টি গোলাম রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম, ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
ভিডিও: https://youtu.be/1JkwVpQt0O0?si=twzQ3ccSUQV9BpHm
আঞ্জুমান জে আর টাওয়ারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, “এমন এক সমাজ চাই, যেখানে বেওয়ারিশ লাশ যেন না থাকে। আমাদের লক্ষ্যও সেটি।” বেওয়ারিশ লাশ দাফনে ‘আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে’ অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা না থাকলে জানতামও না লাশের কী হয়েছিল। ওরা থাকায় আমরা জানলাম একটা সম্মানজনকন ভাবে দাফন করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজ আমার মস্ত বড় সৌভাগ্য এখানে উপস্থিত থাকা। ছোটবেলা থেকেই নাম শুনে আসছি। অদ্ভুত এক নাম, তার সঙ্গে একটা জিনিস জড়িত, এই নামের কোনো ব্যাখ্যা জানতাম না, শুধু জানি বেওয়ারিশ লাশ।”
তিনি বলেন, “বেওয়ারিশ শব্দটা শুনেছি লাশের সঙ্গে এবং আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কর্মকাণ্ড থেকে। এরা কারা, কোনো দিন জানি নাই, আজ চাক্ষুষ দেখলাম। এরা এমন এক জগত থেকে ভেসে আসে, একটা লাশ পড়ে থাকলে উঠিয়ে নিয়ে যায়। স্বপ্নিল একটা জিনিস। যত দুর্গম হোক, যত কঠিন পরিস্থিতি হোক, ওই নামটি আসে, কে করেছে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম এসে দাফন করে গেছে।”
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এটা আমার কাছে খুব অবাক লাগত। যার পরিচয় জানি না, কিন্তু প্রতিদিন খবর আসছে। এখন শুনলাম দেশজুড়ে আছে। “তাদের কোনো বক্তব্য কখনও কোনো পত্রিকায় দেখি নাই, বক্তব্য দেন কিনা জানা নেই, কিন্তু আমার নজরে আসেনি যে, এই কাজে কোনো বাহবা নিচ্ছেন। কিচ্ছু করে নাই, একেবারে চুপচাপ। অদৃশ্য কতগুলো মানুষ এসে সব করে দিয়ে যায়।”
ড. ইউনূস বলেন, “করোনার সময় এই নাম বার বার এসেছে। কাজেই দেখছি যে, এরা চারদিকে ছড়িয়ে আছে। পরিচয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখলাম, বহু বড় বড় লোক এর সঙ্গে জড়িত জন্ম থেকে। ১৯০৫ সালে এর জন্ম, এটাও জানতাম না। বাংলাদেশের ইতিহাসে মুসলমান সমাজের সঙ্গে যাদের স্মৃতি আছে, তাদের সবাই এটার সঙ্গে জড়িত ছিল। এটা একটা বড় ঐতিহ্য বহন করে যাচ্ছে। আজ বাচ্চাদের দেখেও ভালো লাগল, এটা নতুন দিক, এ সম্পর্কেও জানা ছিল না। এরা লাশ দাফন করা ছাড়াও অন্যান্য কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে বহু প্রতিষ্ঠান আছে; কেউ ছয় মাস, কেউ ১০ বছর টিকে। এত দীর্ঘমেয়াদি একটি প্রতিষ্ঠান টিকে আছে শুধু নয়, শক্ত আছে, মজবুত আছে। এমন আরও প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টান্ত উপমহাদেশে আছে কিনা আমার জানা নেই।”