প্রতিবেশী বেশ কয়েকটি দেশ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ নিয়ে ‘নৌ জোট’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে ইরান। জোটে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্তত পাঁচটি দেশ থাকতে পারে। পাশাপাশি ভারত এবং পাকিস্তানকেও এই জোটে দেখা যেতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ইরানের নৌবাহিনীর কমান্ডার শাহরাম ইরানি এ ঘোষণা দেন। তবে শাহরাম ইরানি জোটের গঠন কেমন হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানাননি।
শাহরাম ইরানি বলেন, ‘এ অঞ্চলের দেশগুলো বুঝতে পেরেছে যে, কেবল একে অপরের সহযোগিতাই এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে।’
ইরানের গণমাধ্যমগুলোর বরাতে এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামুদ্রিক জোট কম্বাইন্ড মেরিটাইম ফোর্সেস (সিএমএফ) থেকে দেশটির প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানায়। বিশ্বব্যাপী তেলের বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও উত্তেজনাপূর্ণ উপসাগরীয় জলপথকে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিল আমিরাত। ফলে অঞ্চলটির নিরাপত্তায় নতুন একটি নৌ জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ইরানের ঘোষিত নতুন জোট অঞ্চলটির নিরাপত্তায় নতুন আশার সৃষ্টি করেছে।
ইরানের এই ঘোষণার বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ইরানের নতুন নৌ জোট উচ্চাভিলাষী। তবে এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে ভারতের সতর্ক হওয়া উচিত।
এতে আরও বলা হয়, এখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের বিষয় রয়েছে। প্রথমত, দেখা যাচ্ছে ইরান ও সৌদি আরব অবশেষে উপলব্ধি করছে যে তাদের আঞ্চলিক বিবাদ উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আঞ্চলিক সমীকরণ মেলাতে নতুন বিকল্পের দিকে তাকিয়ে আছে রিয়াদ ও তেহরান।
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পূর্ব এশিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সুতরাং, মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে ওয়াশিংটনকে আর দেখা হয় না।
সূত্রে জানা গেছে, জোটটিতে সৌদি আরব ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থাকতে পারে। এ ছাড়া এশিয়ার দেশ ভারত ও পাকিস্তানকে এতে যুক্ত করা হবে। তবে দেশগুলো জোটভুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।