যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া-এই তিন দেশের প্রধানমন্ত্রীরা রোববার একের পর এক বিবৃতি প্রকাশ করে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
রাষ্ট্র হিসেবে বহু দেশ এই ভূখণ্ডকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে, বিভিন্ন দেশে এই দেশের কূটনৈতিক মিশনও রয়েছে। অলিম্পিক সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণও করে তারা।
কিন্তু ইসরায়েলের সাথে ফিলিস্তিনের দীর্ঘসময়ের বিরোধের কারণে ফিলিস্তিনের কোনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানা, রাজধানী বা সেনাবাহিনী নেই।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর বহু বছরের দখলদারিত্ব চলার পর ১৯৯০’এর দশকে ‘প্যালেস্টিনিয়ান অথরিটি’ বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়, যাদের ঐ ভূখণ্ড ও সেখানে বসবাসরত মানুষের ওপর পূর্ণ নিয়ণ্ত্রণ নেই। ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজা এখন যুদ্ধক্ষেত্র।
জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় ৭৫ ভাগই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ ‘স্থায়ী পর্যবেক্ষক’ হিসেবে। এর অর্থ তারা জাতিসংঘের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে, কিন্তু কোনো বিষয়ে ভোট দিতে পারবে না।
ব্রিটিশ আর ফরাসীদের স্বীকৃতির পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশের চারটির সমর্থনই পাবে ফিলিস্তিন। চীন আর রাশিয়া ১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ইসরায়েলের সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই একঘরে হয়ে পড়বে। ওয়াশিংটন অবশ্য মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ‘প্যালেস্টিনিয়ান অথরিটি’ বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে স্বীকৃতি দেয়, যেটি ১৯৯০ এর দশকে গঠিত হয়েছিল। ঐ ঘটনার পর থেকে অনেক দেশের প্রেসিডেন্টই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
রামাল্লায় ফিলিস্তিনিদের সতর্ক প্রতিক্রিয়া
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার স্বীকৃতির পর সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিম তীরের রামাল্লার বাসিন্দারা।
রামাল্লা শহরটি জেরুজালেমের উত্তরের অবস্থিত, যেখানে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক সদর দপ্তর রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সী মোহাম্মদ হাসিব বলছিলেন, ”এটা চমৎকার সংবাদ। আমরা আশা করি, সব ইউরোপীয় দেশ এটা অনুসরণ করে আমাদের দেশকে স্বীকৃতি দেবে, যার মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান হবে।”
আরেকজন নারী বলছিলেন, ”এটার জন্য অনেক দেরি হয়ে গেছে, কিন্তু এটা একেবারে অর্থহীন নয়।”
কিন্তু অনেকের মধ্যে এই আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে, এই স্বীকৃতির পর ইসরায়েলি সরকার হয়তো তাদের দমনপীড়ন আরো বাড়িয়ে দেবে। এর মধ্যেই ইসরায়েলি সরকার পশ্চিম তীর জুড়ে নতুন বসতি তৈরির পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে শুরু করেছে। অনেক মন্ত্রী হুমকি দিচ্ছেন যে, বেশ কিছু এলাকা তারা ইসরায়েলের সাথে যুক্ত করে নেবে। বিবিসি