লেখক ও সংগঠক কেএম আবুতাহের চৌধুরীর কাব্যগ্রন্থ ‘রঙের দুনিয়া’র প্রকাশনা অনুষ্ঠান পরিনত হয়েছিল প্রবাসিদের মিলন মেলায়। প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লন্ডন বারা অব টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক মুকতাবিস-উন-নুর।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানের ভিডিও: https://youtu.be/_VmBfj2dwLM?si=Kg1PaJ9eJ0N_htB0
বুধবার (৩০ জুলাই ২০২৫) লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কমিউনিটি নেতা এম এ মান্নান। লেখক ও সলিসিটর মোহাম্মদ ইয়াওর উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে আরো ছিলেন বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি লেখক শাহগীর বখত ফারুক, কাউন্সিল অব মস্কের সভাপতি বিশিষ্ট আলেম মাওলানা শামসুল হক, ব্রেন্ট কাউন্সিলের সাবেক সিভিক মেয়র কাউন্সিলার পারভেজ আহমদ, আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থা মুসলিম এইড-এর সাবেক নির্বাহী প্রধান ব্যারিষ্টার হামিদ হোসেইন আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহবাব হোসেন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার মাইউম মিয়া তালুকদার প্রমুখ।
বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নেতৃস্থানীয় মানুষের এই সমাবেশে কেএম আবুতাহের চৌধুরীর সেবা কর্ম নিয়ে গবেষণামূলক মূল্যায়ন উপস্থাপন করেন লেখক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আবুল লেইছ। লেখক ও সংগঠক আবুতাহের চৌধুরীর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক সময় ও মানব টিভি সম্পাদক, কবি ও কথাসাহিত্যিক সাঈদ চৌধুরী। কাব্যগ্রন্থ পর্যালোচনা করেন কবি-সাংবাদিক আবু সুফিয়ান চৌধুরী। লেখককে নিবেদিত কবিতা পাঠ করেন কবি-কলামিস্ট শিহাবুজ্জামান কামাল।
আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন লেখক ও আইনজীবী ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ, ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী শোয়েব, দর্পন সম্পাদক রহমত আলী, দ্যা সানরাইজ সম্পাদক এনাম চৌধুরী, একাউন্টেন্ট নাসির উদ্দিন, কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ আব্দুর রব, সাংস্কৃতিক কর্মী মাহফুজা তালুকদার ও মিসেস ঝর্না চৌধুরী প্রমুখ। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন হাজী বুলু মিয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কেএম আবুতাহের চৌধুরী সমাজ ও কমিউনিটির উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন। সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা ও কাব্য চর্চার মাধ্যমে সমাজের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন।
মেয়র লুৎফুর রহমান বিগত নির্বাচনে তাকে ও এসপায়ার পার্টিকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করায় আবুতাহের চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অশেষ ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক মুকতাবিস-উন-নুর বলেন, কেএম আবুতাহের চৌধুরী ৪০ বছর আগে সিলেট থেকে সাংবাদিকতা শুরু করেছিলেন। আজও তিনি সাংবাদিকতা ও কাব্যচর্চা অব্যাহত রেখেছেন। সমাজের কল্যাণে তার অবদান অপরিসীম।
শাহগীর বখত ফারুক বলেন, অনন্য প্রতিভার অধিকারী কেএম আবুতাহের চৌধুরী জেরুজালেম সফরকালে আল আক্বসা মসজিদ সম্পর্কে তাৎক্ষনিকভাবে একটি চমৎকার কবিতা লিখে আমাদের অবাক করেছিলেন। তার গ্রন্থে সে কবিতাটি দেখে বেশ ভালো লাগছে। তিনি রঙের দুনিয়া কাব্য গ্রন্থের বহুল প্রচার কামনা করেন।
ব্যারিষ্টার হামিদ হোসেইন আজাদ লেখকের জীবনবোধ, সমাজসেবা ও সাহিত্য চর্চার ভূয়সী প্রশংসা করে কেএম আবুতাহের চৌধুরীকে মানবতার কবি ও দরদী নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
লেখক কেএম আবু তাহের চৌধুরী প্রকাশনা উদযাপন কমিটি ও সকল অতিথিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি কবিতা লেখার চেতনা ও ভাবনা তুলে ধরে বলেন, আমি মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্য সমাজের কাজ করি। কমিউনিটির সকল স্তরের মানুষের পক্ষ থেকে এই ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শনের ঘটনায় আমি মুগ্ধ ও আনন্দিত। আপনারা সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
সাঈদ চৌধুরীর মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ‘রঙের দুনিয়া’ বলতে সাধারণত জগতের রঙ বোঝায়। তবে এখানে রূপক হিসেবেই ব্যবহৃত হয়েছে। লেখক আমাদের চারপাশের দৃশ্যমান জগৎকে ছড়া ও কবিতার মাধ্যমে বিভিন্ন রঙে উপস্থাপন করেছেন। শুধুমাত্র বস্তুগত রংকেই তিনি উপস্থাপন করেন নি, বরং এটি মানুষের আবেগ, অনুভূতি এবং সংস্কৃতির সাথেও সম্পর্কিত। এর আগেও তিনি ‘গড়ে তুলি সুন্দর পৃথিবী’ নামে একটি চমৎকার কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন। লেখক আবুতাহের চৌধুরী সাংবাদিক-কলামিস্ট হিসেবেই সুপরিচিত। একজন মানবতাবাদী সংগঠক হিসেবে তার জুড়ি মেলা ভার। তিনি একজন আত্মপ্রত্যয়ী কর্মবীর। প্রবাসিদের অধিকার আদায়ে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। কমিউনিটির প্রাত্যহিক ব্যথা-বেদনার সাথী, নিবেদতিপ্রাণ সমাজসেবী।
গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল (জিএসসি) ইউকে’র সাবেক চেয়ারপার্সন আবুতাহের চৌধুরী কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সংগঠনকে গণমানুষের কাছে নিয়ে গেছেন। বিলেতের বাংলা কমিউনিটিতে তিনি অসীম সাহস আর ধৈর্যের প্রতিচ্ছবি। বুতাহের চৌধুরী টাওয়ার হ্যামলেটস এসপায়ার পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে বৃটেনের রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে ২০২২ সালে নির্বাহী মেয়র ও ২৪জন কাউন্সিলর এসপায়ার পার্টি থেকে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন। মেয়র লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে উন্নয়ন ক্ষেত্রে এই কাউন্সিল গ্রেট বৃটেনে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে।
আবুতাহের চৌধুরী বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ইউকের সভাপতি, ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি, ভয়েস ফর জাস্টিস ইউকের সেক্রেটারী সহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সক্রিয় ভাবে জড়িত। তিনি ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ-এর মিডিয়া ডাইরেক্টর, অর্গানাইজেশন ফর দ্য রিকগনিশন অব বাংলা অ্যাজ এন অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস্- এর ভাইস প্রেসিডেন্ট, বঙ্গবীর ওসমানী মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ইউকে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, বৃটিশ বাংলাদেশী হিস্ট্রি এন্ড হেরিটেজ কাউন্সিল ইউকের আহবায়ক, গরীব এন্ড ইয়াতিম ট্রাস্ট ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট, আল হেরা ফাউন্ডেশন ইউকের ট্রাস্টি, পিস বিল্ডার চ্যারিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিনি সিলেট বিভাগ বাস্তবায়ন আন্দোলন, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ বিরোধী আন্দোলন, প্রবাসিদের ভোটাধিকার ও দ্বৈত নাগরিকত্ব রক্ষার আন্দোলন, প্রবাসী সুরত মিয়া ও মোগল কোরোশীকে হত্যার এবং ব্যারিষ্টার রেজওয়ানকে বিমান বন্দরে নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, মনিকা আলীর সমাজ বিরোধী ব্রিকলেন উপন্যাস ও ফিল্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, ওসমানী স্কুলের নাম রক্ষার সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। তিনি রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধেও ব্যাপক ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছেন ।
আবুতাহের চৌধুরী সাপ্তাহিক লন্ডন বাংলা’র সম্পাদক ও বাংলা পোষ্টের প্রধান সম্পাদক হিসেবেও কমিউনিটির বিভিন্ন ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি চ্যানেল এস টেলিভিশনে ‘ফেলে আসা স্মৃতি’ অনুষ্ঠানে আমাদের অগ্রজদের প্রবাস জীবনের ইতিহাস ও অবদান তুলে ধরেন। অর্ধ শতাধিক এপিসোড উপস্থানের মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে তিনি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি ২0১৫ সাল থেকে ইক্বরা বাংলা টিভিতে ‘অগ্রদূত’ অনষ্ঠান উপস্থাপন করে বিশেষ অবদান রাখছেন।
‘রঙের দুনিয়া’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রায় দুই শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। সভায় অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ জুবায়ের, কাউন্সিলার ব্যারিষ্টার মোস্তাক আহমদ, কাউন্সিলার আবু তালহা চৌধুরী, কাউন্সিলার সাঈদ আহমদ, ব্যারিষ্টার মাসুদ চৌধুরী, কাউন্সিলার কামরুল ইসলাম মুন্না, কাউন্সিলার কবির আহমদ, কাউন্সিলার সাবিনা আক্তার, ব্যারিষ্টার আব্দুস শহীদ, কাউন্সিলার ব্যারিষ্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, ব্যারিষ্টার মুজিবুর রহমান, ওসমানী মেমোরিয়েল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলহাজ্ব কবির উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, সাবেক কাউন্সিলার শাহ আলম, ড. এম এ আজিজ, আলহাজ্ব নুর বক্স, সৈয়দ সুহেল আহমদ, শেখ ফারুক আহমদ, নুরুল আমিন, ছয়ফুর রহমান কোরেশী হিরু, মিসেস কামরুন্নেছা নাহার শোভা মতিন, আশিকুর রহমান, সাংবাদিক মহিউদ্দিন আফজাল, সাংবাদিক আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, সাংবাদিক বদরুজ্জামান বাবুল, সাংবাদিক শামসুল করিম, প্রভাষক আব্দুল হাই, কমিউনিটি নেতা আব্দুল মুকিত, মইনুল ইসলাম খান, একে জিল্লুল হক, ফয়সল আহমদ আখন্দ, যুব নেতা সায়েম রহমান, কবি আবু হোসেন, এমদাদ তালুকদার এমবিই, হাজী ফারুক মিয়া, সাংবাদিক শোয়েব কবির, সাংবাদিক খালেদ মাসুদ রনি, সাংবাদিক আব্দুর রশীদ, সাংবাদিক ডা: গিয়াস উদ্দিন আহমদ, মাহবুব আলী খান স্মৃতি সংসদের সভাপতি আহমদ সাদিক, এডভোকেট সাইফুর রহমান পারভেজ, এডভোকেট আবু মাসুদ, ইন্জিনিয়ার আবু আক্কাস চৌধুরী, যুব নেতা জুবেল বেলাল, নারী নেত্রী শাহিনা চৌধুরী, লেখক সাদেকুল আমিন, কবি নোমান চৌধুরী, মাওলানা নুরুল হক, ডাঃ উম্মে মুনিরা চৌধুরী, মিছবাউর রহমান চৌধুরী, ইকবাল চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে দোয়া পরিচালনা করেন শায়েখ সালেহ আহমদ হামিদী।