যুবদল নেতা আরিফ হত্যা মামলায় সুব্রত বাইনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

গত ১৯ এপ্রিল হাতিরঝিল থানাধীন নয়াটোলা এলাকায় মহানগর উত্তরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহ–ক্রীড়া সম্পাদক আরিফ সিকদারকে গুলি করে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২১ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় নিহতের বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান ডিবি পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের পরিদর্শক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম। তদন্ত চলাকালে গত ২৩ জুন এ মামলায় সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলীকে (৬১) গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন তিনি। আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

এ খুনের মামলার প্রাথমিক তদন্তে সুব্রত বাইনের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ এবং তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৩ জুন তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুব্রত বাইনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখান ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এদিন সুব্রত বাইনকে কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি আদালতে উপস্থিত দেখিয়ে গ্রেফতারের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামি দীর্ঘদিন ভারতের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকার পর ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তার পূর্বে নিয়ন্ত্রিত মগবাজার ও হাতিরঝিল এলাকায় পুনঃকর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ, সশস্ত্র মহড়ার প্রস্তুতি এবং গোপন বৈঠকের মাধ্যমে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি শুরু করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় সুব্রত বাইন তার দলের জুনিয়র সদস্য, এ মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ ভিকটিম আরিফ সিকদারকে হত্যা করিয়েছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি পুলিশের।

এ মামলার ঘটনা ঘটার পূর্বে আসামি সুব্রত বাইন ফতেহ আলী (৬১) অস্ত্র মামলার এজাহারনামীয় আসামি ইফতির চাচা শরীফের বাসায় আসামি বিপুসহ একাধিকবার গোপন বৈঠক করেছেন বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।

এছাড়াও, অস্ত্র মামলার গ্রেফতারকৃত আসামি মিরাজ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, এ মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি বিপু সরবরাহ করেন এবং এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি ইয়াসিন অস্ত্রটি ব্যবহার করার পর ইফতিকে ফেরত দেন।

এমতাবস্থায়, এ হত্যা মামলার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটনসহ তার সহযোগী ক্যাডারদের গ্রেফতার এবং হত্যায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে হাজতি আসামি, হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত মাস্টারমাইন্ড সুব্রত বাইন ফতেহ আলীকে নিবিড় ও ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজন।

হত্যা মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন নয়াটোলা মোড়ল গলির ‘দি ঝিল ক্যাফে’র সামনে যুবদল নেতা মো. আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। নিহত আরিফ সিকদার ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহ–ক্রীড়া সম্পাদক।

এই ঘটনায় নিহত আরিফের বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ তদন্ত করছে। মামলার অপর আসামিরা হলেন: মো. ইয়াছিন (১৯), মো. আসিফ হোসেন (২১), মো. অনিক (১৯), মো. মিরাজ (১৯), মো. আশিক (১৯), মো. ইফতি (২৪), জাফর ইমাম তরফদার মন্টু (৪০), রতন শেখ (৪৫) ও আলিফ (১৯)।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মে সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী। পরদিন হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সুব্রত বাইনের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার একটি আদালত। ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *