কবীর সুমন একজন ভারতীয় বাঙালি গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা, বেতার সাংবাদিক, গদ্যকার ও সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি একজন বিশিষ্ট আধুনিক ও রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী। তার পূর্বনাম সুমন চট্টোপাধ্যায় হলেও ২০০০ সালে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনকে বিয়ে করার জন্য ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন।
বেশ কিছুদিন আগে তিনি ফেসবুকে ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনি তার দেহ দান করেছেন। তাই তিনি কোনও ধর্মীয় শেষকৃত্য চান না। কিন্তু আজ ৫ মার্চ, ২০২৫ দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথা চূড়ান্তভাবে জানান। পোস্টটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
রমজান মোবারক!
সকলকে জানাতে চাই –
কিছুকাল আগে এই ফেসবুকেই ঘোষণা করেছিলাম – আমি আমার দেহ দান করেছি, কোনও ধর্মীয় শেষকৃত্য আমি চাই না।
অনেক ভেবে আমি সেই সিদ্ধান্ত পাল্টালাম। দেহদানের ইচ্ছে প্রত্যাহার করছি আমি। আমার দেহ আমি দান করব না। আমি চাই আমায় এই কলকাতারই মাটিতে, সম্ভব হলে গোবরায়, ইসলামী রীতিতে কবর দেওয়া হোক। এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আমার কতিপয় স্বজনকে এটা জানিয়ে দিলাম।
আমার এই ঘোষণা বিষয়ে কারুর কোনও মত বা মন্তব্য চাই না।
সকলের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।
————-
কবীর সুমন
৫, ৩, ২৫

তার এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে সবাই স্বাগত জানিয়েছে। ১৯৯২ সালে তার ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি বাংলা গানে এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেন। তথ্যমতে তার স্বরচিত গানের অ্যালবামের সংখ্যা পনেরো। সঙ্গীত রচনা, সুরারোপ, সংগীতায়োজন ও কণ্ঠদানের পাশাপাশি গদ্যরচনা ও অভিনয়ের ক্ষেত্রেও তিনি স্বকীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি একাধিক প্রবন্ধ, উপন্যাস ও ছোটোগল্পের রচয়িতা এবং হারবার্ট ও চতুরঙ্গ প্রভৃতি মননশীল ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের রূপদানকারী।
নন্দীগ্রাম গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষিজমি রক্ষার ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে যোগদান করেন এবং সেই সূত্রে সক্রিয় রাজনীতিতে তার আবির্ভাব ঘটে। ২০০৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দেশের পঞ্চদশ লোকসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন ও জয়লাভ করে উক্ত কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।