অনুবাদ:মাসুম খলিলী
এক. শুধু আপনার স্মার্টফোন স্ক্রীন থেকে জীবনকে দেখা বন্ধ করুন। জুম আউট করতে শিখুন। অর্থপূর্ণ কথোপকথন করুন, প্রকৃত বন্ধু তৈরি করুন, লোকেদের সাথে কথা বলুন। তখন আপনার জীবনের প্রতি একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে।
দুই. মনে রাখবেন, সর্বশক্তিমান তাঁর পরিকল্পনায় ভুল করেন না। আপনার অভিজ্ঞতার প্রতিটি কষ্টই আপনাকে সেই ব্যক্তি হিসাবে তৈরি করেছে যা আপনি আজ হয়েছেন। আপনার সাথে ঘটে যাওয়া সমস্ত কিছুতে মূল্যবান পাঠ রয়েছে। কেন এটি ঘটেছে তা জিজ্ঞাসা করা বন্ধ করুন এবং আপনার কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত তার উপর ফোকাস করুন।
পূনশ্চঃ
এক: যখন সবকিছু ভুল হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হয়, তখনই আপনাকে আরও বেশি অধ্যবসায় করতে হবে। মনে রাখুন কষ্টের সাথে, আসে স্বস্তি।
দুই: আপনি জানেন যে আপনাকে নিয়মিত পরীক্ষা করা হবে, আর এতে জীবনের চ্যালেঞ্জগুলির প্রতি আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন? আপনি কী রেগে যান, অবসাদগ্রস্ত হন এবং বিষণ্নতায় ডুবে যান নাকি সুন্দর ধৈর্যের সাথে সাড়া দিন; সর্বশক্তিমানকে জেনে যখন আপনি তাঁর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখবেন এবং আপনার সেরাটা করবেন তখন তিনি আপনাকে বিজয় দান করবেন।
তিন. অহংকার ও ঔদ্যত্ব অনেকের হৃদয়ে পাওয়া যায়, তবে এগুলি এমন বৈশিষ্ট্য যা থেকে সর্বশক্তিমান আমাদেরকে দূরে থাকতে সতর্ক করেছেন। অহংকার হ’ল সুবিবেচনাপ্রসুত জ্ঞান- এমন ধারণা করে প্রতারিত হবেন না। দুটির মধ্যে ব্যবধান অনেক! মনে রাখবেন, এটি শুধু আপনার বিষয় নয়। এর পাশাপাশি আপনার চারপাশে যারা আছেন তাদের বিষয়ও বিবেচনা করুন!
চার. আপনি যখন সর্বশক্তিমানের সাথে সংযুক্ত হন, তখন আপনি কৃপা প্রাপ্ত হন। আপনার হৃদয় প্রশান্ত হয়। আশা কখনই আপনার পাশ ছাড়ে না। জীবন যখন কোনও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় তখন আপনি সর্বদাই ইতিবাচক হন। আপনি কখনই হাল ছাড়েন না। কারণ আপনি বিশ্বাস করেন যে উজ্জ্বল দিনগুলি সামনে রয়েছে এবং আপনি জীবনযাত্রার জন্য তাঁর পরিকল্পনাকেই বিশ্বাস করেন!
পাঁচ. সব সময় নম্র থাকুন। আপনি কতটা সফল সেটি কোন বিষয় নয়, বাস্তব উন্নয়ন বা অগ্রগতির পরিবর্তে আপনাকে সামাজিক অবস্থান অর্জনমুখি করতে আপনার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেবেন না অহমিকাকে। সব সময় শেখা এবং নিজের উন্নয়নের প্রতি নজর রাখুন; এ কথা মনে রাখবেন যে এখনো আরও অনেক কিছু জানতে বাকি রয়ে গেছে। সর্বোপরি, প্রত্যেকে এমন কিছু জানেন যা আপনি জানেন না!
ছয়. সর্বশক্তিমান। আপনার রহমত এবং সুরক্ষা দিয়ে চলমান বিপর্যয় আক্রান্ত সবাইকে হেফাজত করুন। যারা দুঃখভারাক্রান্ত তাদের সান্ত্বনা দিন। অন্ধকার সময়েও আমরা আশা ছেড়ে দিতে চাই না। কারণ আমরা জানি, আপনি সর্বদা আমাদের সাথে আছেন। আপনিই আমাদের আশ্রয় আর আপনিই আমাদের শক্তি। আমীন।
দ্রষ্টব্যঃ
নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য আছে জান্নাত। তারা আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে তাওরাত, ইঞ্জীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের হক ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কে আছে? সুতরাং তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও। আর সেটাই তো মহাসাফল্য। (সুরা তওবা: ১১১)
হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি ইরশাদ করেন, তিনটি জিনিস যা তোমাদের মধ্যে পাওয়া যাবে, সে ঈমানের স্বাদ লাভ করতে পারবে। তা হলো আল্লাহ ও তার রসুল তার নিকট অন্য সবার অপেক্ষায় অধিক প্রিয় হবেন। তিনি কাউকে ভালোবাসবেন একমাত্র আল্লাহর জন্যই এবং তিনি কখনো কুফরির মধ্যে পুনরায় ফিরে যেতে রাজি হবেন না, যেমন রাজি হবেন না আগুনে নিক্ষিপ্ত হতে। (বোখারি, বাবু হালাওয়াতিল ইমানি-১৫)
* মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি
