বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনকে একটি ফাঁকা বিজয় এবং গণতন্ত্রের জন্য খারাপ দিন উল্লেখ করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে খারাপ সময় নিয়ে এসেছেন। একদলীয় রাষ্ট্রের উত্থান ঘটেছে।
গত বছর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশজুড়ে হওয়া বিক্ষোভ সহ রাজনৈতকি পরিস্থিতি বর্ণণা করে গার্ডিয়ান লিখেছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত নভেম্বরে সতর্ক করে দিয়েছিল যে, সাধারণ নির্বাচনের আগে বিরোধী নেতা ও সমর্থকদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে, এমনকি হত্যাও করা হচ্ছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসে। বিএনপি নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ এবং গৃহবন্দী। তার মিত্ররা হয় জেলে আছে অথবা নির্বাসনে আছেন। ফলে এটি একটি ফাঁকা বিজয় ছিল, কারণ ১০ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র চারজন ভোট দিয়েছিলেন। লন্ডন ও ওয়াশিংটনের মতে, নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না। তবুও ভারত ও চীন উভয় দেশেই শেখ হাসিনার বিজয়কে স্বাগত জানিয়েছে।
সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করার ঠিক আগে সতর্কতার ঘণ্টা বেজে ওঠে। গত গ্রীষ্মে বারাক ওবামাসহ বিশ্বের ১৭০ জন ব্যক্তিত্ব ইউনূসের বিরুদ্ধে ‘ক্রমাগত বিচারিক হয়রানি’ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার কৃতিত্ব পাওয়া ৮৩ বছর বয়সী এই ব্যক্তিকে তখন থেকেই প্রধানমন্ত্রী ‘দরিদ্রদের রক্ত চোষা’ বলে অভিযোগ তুলেছেন।
গার্ডিয়ান অভিমত দিয়েছে, সরকারকে অবশ্যই ভয়ের পরিবেশ দূর করতে হবে এবং বিরোধী দলকে গঠনমূলকভাবে পুনরায় সম্পৃক্ত হতে হবে। বাংলাদেশের মতো জটিল সমাজে, যেখানে প্রতিযোগিতামূলক দাবিগুলো শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসা করা প্রয়োজন, সেখানে দীর্ঘমেয়াদী গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার চেয়ে স্বৈরতন্ত্রকে প্রাধান্য দেওয়া বোকামি হবে।