৬০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি!

আন্তর্জাতিক আমেরিকা ইউরোপ এশিয়া সময় সংবাদ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার একদল হ্যাকার একটি ভিডিও গেমিং কোম্পানির ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি হাতিয়ে নিয়েছে।

গত ১৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সিএনএন-এর খবরে বলা হয়, গত মাসে সংগঠিত এই ঘটনায় জড়িত হ্যাকারদের সাথে উত্তর কোরিয়ার সরকারের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

এক বিবৃতিতে এফবিআই জানিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে লাজারুস গ্রুপ এবং এপিটি৩৮ হ্যাকার দলই এই বিশাল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এই হ্যাকারদের দল মোট ৬২০ মিলিয়ন ডলারের ইথেরিয়াম চুরি করেছে।

স্কাই ম্যাভিস নামের একটি প্রতিষ্ঠান এক্সি ইনফিনিটি নামের একটি ভিডিও গেম তৈরি করে। সেখান থেকে অংশগ্রহণকারীরা ক্রিপ্টোকারেন্সি উপার্জন করতে পারেন। গত ২৯ মার্চ প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানায়, ২৩ মার্চ এক ব্লকচেইন থেকে আরেক ব্লকচেইনে ক্রিপ্টোকারেন্সি স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত একটি ‘ব্রিজ’ বা নেটওয়ার্ক থেকে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যমানের ইথেরিয়াম হ্যাক হয়েছে।মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এ নিয়ে ল্যাজারাস গ্রুপের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানটি বেশ বড় আকারের এবং এটি উত্তর কোরিয়া সরকারের পক্ষে কাজ করে। এক্সি ইনফিনিটি হ্যাকের ঘটনায় যে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্যাশ আউট করা হয়েছে, সে অ্যাকাউন্ট বা ওয়ালেটটিকে আনা হয়েছে নিষেধাজ্ঞার আওতায়।

এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা কমিটির কাছে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনের বিষয়ে বিবিসির সূত্রে জানা যায়, উত্তর কোরিয়া সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে চুরি করা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ক্রিপ্টোকারেন্সি (ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা) তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের অর্থায়নে ব্যয় করছে। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার সাইবার আক্রমণকারীরা ৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি (প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা) ডিজিটাল সম্পদ চুরি করেছেন। এ ধরনের আক্রমণ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজস্বের উৎস’। বিভিন্ন ধরনের কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরেও উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অবকাঠামোর উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তারা একইসঙ্গে দেশের বাইরে থেকে উপকরণ, প্রযুক্তি ও জ্ঞান আহরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে সাইবার কার্যক্রম ও যৌথ বৈজ্ঞানিক গবেষণাও অন্তর্ভুক্ত আছে।

সে সময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান চেইনালিসিসের একটি গবেষণার সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, উত্তর কোরিয়া সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে গত বছর ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ডিজিটাল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার কমপক্ষে ৩টি ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনকে লক্ষ্য করে সে সাইবার আক্রমণ চালানো হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের দল ইথেরিয়াম নামের যে ক্রিপ্টোকারেন্সি (ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা) চুরি করেছে তা বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *