৩৩ কাজে সউদী আরব যেতে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক

বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

সউদী আরবে পাঁচটি খাতে বিদেশিদের কাজ করতে হলে সে দেশের সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও ২৮ ধরনের কাজ। এখন থেকে এই ৩৩ রকম কাজে সউদী আরব যেতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষা দিয়ে সনদ নিয়ে যেতে হবে।

সম্প্রতি ঢাকার সউদী দূতাবাস এক চিঠিতে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোকে (বিএমইটি) একথা জানায়। গতকার সোমবার দুপুরে বিএমইটি ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় একথা জানান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম। মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএমইটির এডিজি আসম আশরাফুল ইসলাম, বিএমইটির পরিচালক (ইমিগ্রেশন) আব্দুল হাই, পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী, পরিচালক প্রশিক্ষণ মো.সালাহ উদ্দিন ও বিএমইটির অন্যান্য কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ থেকে এই খাতগুলোতে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর জন্য একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যার অধীনে বাংলাদেশিদের পরীক্ষা দিয়ে সনদ নিয়ে সউদী আরবে কাজ করতে যেতে হবে। প্রথমে শুরু করা পাঁচ খাত হচ্ছে প্লাম্বার, ওয়েল্ডিং, অটোমোবাইল, ইলেকট্রিশিয়ান ও এসি মেকানিক। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১৫ ধরনের নির্মাণকাজ, পাঁচ ধরনের টাইলিং, চার ধরনের গাড়ি মেরামত, প্লাস্টার কাজ এবং তিন ধরনের গাড়ির মেকানিক। এসব কাজে যেতে হলে পরীক্ষা দিয়ে সনদ নিয়ে যেতে হবে। আর পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ছয়টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্ধারিত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিকেটিটিসি) ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, কুমিল্লা ও টাঙ্গাইলের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) ।

গত ফেব্রুয়ারিতে সউদী দূতাবাসে স্কিল ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম উদ্বোধন করা হয়। তখন বলা হয়, অদক্ষ শ্রমিকদের বেতন যদি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ রিয়াল হয়ে থাকে, তাহলে ওই দক্ষ শ্রমিকদের বেতন হবে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ রিয়াল। ফলে ওই পাঁচ খাতে সনদ নিয়ে কাজ করতে গেলে তারা বেশি আয় করতে পারবেন বলে তখন জানায় সউদী দূতাবাস।

এই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ও সউদী সরকারি সংস্থা তাকানলের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। এ জন্য গমনেচ্ছুদের কোনও টাকা দিতে হবে না। একজন বাংলাদেশি যতবার ইচ্ছা, ততবার পরীক্ষা দিতে পারবেন। পরীক্ষা দিয়ে সনদ পাওয়ার পর এর মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। প্রথাগত শ্রমিকদের এ ধরনের কোনও পরীক্ষা দেওয়া লাগবে না।

মো. শহীদুল আলম বলেন, সউদী আরব আমাদের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। সম্প্রতি সউদী দূতাবাস থেকে একটি চিঠিতে বলা হয়েছে স্কিল ভেরিফিকেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে দক্ষতা আছে কিনা ভেরিফাই করে যেতে হবে। সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানেও একই ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম চালু করেছে। সউদী সরকার বলেছে ৩৩ ধরণের চাকরিতে গেলে পরীক্ষা দিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এই পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আমাদের ছয়টি সেন্টার অনুমোদন পেয়েছে। আমরা অনুরোধ করেছি যে লোক যেহেতু অনেক বেশি যায় সেহেতু সেন্টার বাড়াতে হবে। কোনও এজেন্সি যদি বলে যেকোনও ভাবে সউদী যাওয়া যাবে সেটা আর করা যাবে না। যার যে দক্ষতা সেটি যাচাই করে সনদ নিয়ে যেতে হবে। আমরা আরও বলেছি সনদ দেখে ভিসা দেওয়ার জন্য। যেন এটার দায় অন্য কারও ঘাড়ে না যায়।

বিএমইটি জানায়, স্কিল ভেরিফিকেশন প্রোগ্রামের আওতায় এখন পর্যন্ত ১২টি পেশায় ১ হাজার ১২৪ জন সউদী আরবে গমনেচ্ছু কর্মীর মূল্যায়ন ও সনদ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, আল রাবেতা ইন্টারন্যাশনালের এক জন কর্মকর্তা জানান, ৩৩ পেশায় প্রশিক্ষণ দিয়ে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করায় শত শত রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে সউদী গমনেচ্ছুদের পাসপোর্ট ভিসা জমা পড়ে রয়েছে। তারা সনদ ছাড়া সউদীতে যেতে পারছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *