কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে রাজধানীতে ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা, চুরি, অগ্নিসংযোগ, হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে ২৯০টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এসব মামলা দায়ের হয়েছিল ১৭ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। ২৯০ মামলার মধ্যে ৬২ টি হত্যা মামলা রয়েছে। বাকি ২২৮টি মামলায় সকল আসামির অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ।
এসব মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ তিন হাজার ৫৮ জনকে অব্যাহতি দিয়ে চুড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেছে আদালত।
আদালত আদেশে বলেছে, আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের মতো কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের মামলার দায় হতে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছে তদন্ত কর্মকর্তা। তবে ভবিষতে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামিদের সন্ধানসহ নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া গেলে মামলা পুনরুজ্জীবিত করা হবে।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ছাড়াও রয়েছেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য সামিউল হক ফারুকী, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ আসীম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ প্রমুখ।
এসব মামলার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশের রমনা বিভাগে মামলা হয়েছে ৪২টি, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ১৮২ জন। লালবাগ বিভাগে মামলা হয়েছে ১৭টি, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ১৪১ জন। মতিঝিল বিভাগে মামলা হয়েছে ৪০টি, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪২৩ জন। ওয়ারী বিভাগে মামলা হয়েছে ৫৫টি, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ৬৪৫ জন। তেজগাঁও বিভাগে মামলা হয়েছে ৩৩টি, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ৩৫৭ জন। মিরপুর বিভাগে মামলা হয়েছে ২৬টি, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪৮৫ জন। উত্তরা বিভাগে মামলা হয়েছে ৩১টি, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ৩০৬ জন। গুলশান বিভাগে মামলা হয়েছে ৪২টি, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪১৯ জন।
এ বিষয়ে ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি (পুলিশ সুপার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত) ফখরুজ্জামান জুয়েল বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটনে কোটা সংস্কারের আন্দোলন চলাকালে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, পুলিশের কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি, চুরি ও হত্যার অভিযোগে ২৯০টি মামলা দায়ের করা হয়। ২৯০টি মামলার মধ্যে ৬২টি হত্যা মামলা । হত্যা মামলা ছাড়া ২২৮ টি মামলায় চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কর্মকর্তা। এসব মামলায় মোট আসামি ছিলেন ৩ হাজার ৫৮ জন। সকল আসামির অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আদালত। -বাসস