সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব এক সময়ের প্রতাপশালী বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিম চৌধুরীর রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালত মরহুমের পরিচয় নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিব গণমাধ্যমকে বিষয়ট নিশ্চিত করেছেন।
হারিছ চৌধুরীকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি করা হয়। এই মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সে বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলা-সহ আরো কয়েকটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়।
ক্ষমতার রদবদলের পর আত্মগোপনে চলে যান হারিছ চৌধুরী। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর সিলেটের কানাইঘাটে তার নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন বলে জানা যায়। যৌথবাহিনীর অভিযান চলাকালে জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যান বলে জানাজানি হয়। তারপর থেকে হারিছ চৌধুরীর অবস্থান নিশ্চিত ছিল না। তবে তাকে নিয়ে মাঝে মধ্যেই খবর ছাপা হয়েছে বিভিন্ন কাগজে। ইউরোপ বা এশিয়ায় চলে যাওয়া এমনকি দেশের ভেতর ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়ানোর মুখরোচক খবর প্রকাশিত হয়। ফলে গোয়েন্দারা তাকে খুঁজেছে সর্বত্র। কিন্তু হদিস মেলেনি তার।
এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর প্রতিকূল প্রেক্ষাপটে দেশ ছাড়া প্রায় সব রাজনৈতিক নেতা একে একে দেশে ফিরে জামিন নিলেও ফেরেননি হারিছ চৌধুরী। তিনি ছিলেন অনেকটাই রহস্যাবৃত্ত। এক সময় বলা হয়েছে তিনি ইরানে আছেন। তারও আগে লন্ডনে থাকার কথা প্রচার হয়েছে।
২০১২ সালের ৭ ডিসেম্বর হারিছ চৌধুরীর ছোট ভাই আল-রাজি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আবুল হাসনাত চৌধুরী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার দাফন সম্পন্ন হয় গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগর গ্রামে। হারিছ চৌধুরী তখন স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তখন তার স্ত্রী জোসনা বেগম, ছেলে নাঈম চৌধুরী জনি এবং মেয়ে সামিরা তানজিম লন্ডনে ছিলেন।