হামাস নেতা বলছেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার সক্ষমতা তাদের আছে

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা রবিবার এএফপিকে বলেন, গাজায় ১১ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের ইসলামী আন্দোলনের কাছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার সক্ষমতা তাদের আছে।

ইস্তাম্বুলে এক সাক্ষাৎকারে ওসামা হামদান এএফপিকে বলেন, “প্রতিরোধ বাহিনীর এ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার উচ্চ ক্ষমতা রয়েছে। এ যুদ্ধে অনেকে শহীদ হয়েছেন এবং অনেক আত্মত্যাগও ছিল… কিন্তু, এর বিনিময়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতার সঞ্চয় হয়েছে এবং প্রতিরোধ বাহিনীতে নতুন প্রজন্মদেরও নিয়োগ করা হয়েছে।”

তিনি এ মন্তব্যটি করেন এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে যখন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গালান্ট সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, গাজায় সামরিক বাহিনী হিসেবে হামাসের “আর কোনও অস্তিত্ব নেই”।

নেতানিয়াহুর উপর চাপ

গত বছর ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের অতর্কিত হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে পাল্টা অভিযান শুরু করেন। ইসরায়েলের সামরিক অভিযান গাজায় অন্তত ৪১,২০৬ জনকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

হামাস ৭ অক্টোবর ২৫১জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ৯৭জন এখনো তাদের হাতে রয়েছে। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে জিম্মিদের ৩৩জন মারা গেছেন। জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেয়ার চুক্তির জন্য নেতানিয়াহু দেশের ভেতর প্রবল চাপের মুখের রয়েছে।

এ’মাসে ইসরায়েল গাজার এক সুরঙ্গ থেকে ছয়জন জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং ঘোষণা দেয় যে তাদের হামাস হত্যা করেছে। এর ফলে সারা দেশে ব্যাপক শোক এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, একটি সংক্ষিপ্ত সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয় এবং তেল আভিভ আর জেরুজালেমে বড় বিক্ষোভ চলতে থাকে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতায় মাসের পর মাস আলোচনায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে অসন্তুষ্টি

হামদান বলেন, ইসরায়েলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহুর সাথে আলোচনা করে ফিলিস্তিনে রক্তপাত বন্ধ করবে এমন চুক্তি নিশ্চিত করতে যথেষ্ট চেষ্টা করছে না। আমেরিকার প্রশাসন ইসরায়েলি পক্ষের উপর যথেষ্ট বা উপযুক্ত চাপ প্রয়োগ করে না। বরং তারা ইসরায়েলি পক্ষের যেকোনো ধরণের অঙ্গীকার এড়ানোকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সিনওয়ার গাজা ‘ছাড়বেন না’

হামাদান রবিবার বলেন, হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার অবরুদ্ধ এলাকা ছেড়ে দিবেন এমন পরিস্থিতি কল্পনা করা অসম্ভব।
সিনওয়ার এবং অন্যান্য নেতারা “ফিলিস্তিন ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে লক্ষ বার শহীদ হতে প্রস্তুত। কারণ তিনি যা যা করছেন তার সবই ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার জন্য করছেন।

হামাস নেতা ফিলাডেলফি করিডোর সহ গাজা থেকে সম্পূর্ণরূপে ইসরায়েলিদের প্রত্যাহারের দাবি করেন। ফিলাডেলফি করিডোর মিশরের সীমান্ত বরাবর একটি সংকীর্ণ ভূমি যা যুদ্ধবিরতি আলোচনার অগ্রগতিতে মূল বাঁধা হিসেবে উঠে এসেছে।

হামদান বলেন, হামাস গাজায় “যৌথ ফিলিস্তিনি শাসন” চায়। তিনি আরও বলেন, হামাস কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা তাদের যুদ্ধ-পরবর্তী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করার জন্য শীঘ্রই কায়রোতে মিলিত হবে। তিনি বলেন, “যুদ্ধ শেষের পরের দিনটি হবে একটি ফিলিস্তিনি দিন।” – ভিওএ, এএফপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *