সরকারের পতন ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে এরই মধ্যে জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মী জড়ো হয়েছেন আরামবাগে। বিভিন্ন ধরনের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে প্রতিবাদী জনতার ঢল নেমেছে সেখানে। আরামবাগ মোড় থেকে শুরু করে ফকিরাপুল, কমলাপুর, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে।
পুলিশ জামায়াতের মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি। তাদের সমাবেশ যাতে না হয় সেজন্য গত রাত থেকে শাপলা চত্বর ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী। তারপরও আরামবাগে নটরডেম কলেজের সামনের জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী। নটরডেম কলেজ ফুটওভার ব্রিজের সামনে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। ফলে সেখানেই তারা স্লোগানে স্লোগানে প্রতিবাদ করছেন। সকাল থেকেই আরামবাগে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী জড়ো হতে থাকেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যা বাড়ছে।
আরামবাগ মোড়ে ভোর থেকেই ব্যারিকেড দিয়ে রাখে পুলিশ। প্রতিবাদী জনতাকে আরামবাগ মোড় পার হতে দিচ্ছে না। মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে নটর ডেম কলেজের দিকে যাওয়ার পথে পুলিশ আরেকটি ব্যারিকেড দিয়েছে। আরামবাগ-নটর ডেম কলেজ এলাকার সড়কে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। সাধারণ লোকজনকেও এই পথে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।
আরামবাগ মোড়ে পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড বরাবর অবস্থান নিয়েছেন জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা। সেখানে পুলিশেরও বিপুলসংখ্যক সদস্য রয়েছেন। জলকামান ও সাজোয়া যানসহ সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে পুলিশ। অন্যদিকে মতিঝিলের টয়েনবি সার্কুলার রোডের দিকে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে মহাসমাবেশ ঘিরে ১৮ অক্টোবরের পর থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত নতুন করে তিন শ’ মামলায় জামায়াতের প্রায় পাঁচ শ’ নেতাকর্মীকে আটক করা ছাড়াও ১২ জনকে গুম এবং পুলিশের হামলায় ৪৫ জন আহত হয়েছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
অপরদিকে আজ ২৮ অক্টোবর শনিবার রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে ঘোষিত কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে গতকাল এক বিবৃতি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আজকের মহাসমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। অনির্বাচিত অবৈধ সরকার জগদ্দল পাথরের মতো জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এই সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, জামায়াতের মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য কোনো কোনো মহলের পক্ষ থেকে নানাভাবে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমি দেশবাসীকে সরকারি-বেসরকারি মহলের কোনো প্রকার গুজবে কান না দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কোনো মানুষকে ভয় না করে শুধুমাত্র আল্লাহকে ভয় করে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে জামায়াত ঘোষিত মহাসমাবেশে দলে দলে যোগদান করে সর্বাত্মকভাবে সফল করে তোলার জন্য আমি সংগঠনের সব জনশক্তি এবং দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।