সিলেট ও সুনামগঞ্জে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি

সাম্প্রতিক সিলেট
শেয়ার করুন

হুমায়ূন রশিদ চৌধূরী সিলেট থেকে

বৃষ্টি ও উজানের ঢল অব্যাহত রয়েছে। এতে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শহর ও গ্রামের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। হাটবাজার প্লাবিত হয়েছে। এতে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশ সুপারের অফিস, সদর উপজেলা পরিষদের আঙিনায় পানি উঠেছে। তাহিরপুরে যাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণাধীন ‘শাহ আরেফিন মৈত্রী সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম দিকে প্রবল স্রোতে দুটি গার্ডার ভেঙে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ- কাজের মান ভালো হয়নি বিধায় গার্ডার দুটি ভেঙে পড়ে।

বৃহস্পতিবার প্রায় সব নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় কানাইঘাটে সুরমার পানি বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার, সিলেটে ৪৪ সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জ শহরের কাছে ষোলঘরে ৫০ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারার পানি ৩৪ সেন্টিমিটার, গোয়াইনঘাটে সারি নদীর পানি ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে কানাইঘাটে ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে বিভাগীয় শহর সিলেটে বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ৫০ ভাগ বাসায় পানি উঠেছে। ছাতক উপজেলার অবস্থা ভয়াবহ। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গোবিন্দগঞ্জে সিলেট-ছাতক রেল লাইন ডুবে গেছে।সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার অন্তত ১৩ উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া এলাকার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সুনামগঞ্জে গত মঙ্গলবার থেকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলার কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তা, সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলায় পানি বাড়ছে।

দুই জেলায় অন্তত ৫ লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যাকবলিত এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। সুপেয় পানির সংকট দেখা দিচ্ছে।

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি মো. বুরহান উদ্দিন জানান, দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতিমধ্যে পৌর এলাকার বাসাবাড়িতে উঠে গেছে। জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলায় ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখন আবার দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় মানুষজন বিপাকে পড়েছে।

ছাতক সংবাদদাতা আবদুল আলিম জানান, ছাতকে ভয়াবহ বন্যা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সব হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাট। একমাসের মাসের ব্যবধানে আবারও ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ। ছাতকে সড়ক পথের সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সুরমা নদীতে খেয়া পারাপার বন্ধ। হাজার-হাজার মানুষ বিভিন্ন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানিয়েছেন, নিজের বাসভবনসহ পরিষদের সব কটি বাসা-বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। মানুষ বের হতে পারছে না ঘর থেকে।

আরও পড়ুন
কোথাও আগুন লাগলে সতর্কতার জন্য যা করবেন, যা করবেন না
আগুনে পুড়লে মৃত ব্যক্তির মর্যাদা ও আগুন লাগলে যে দোয়া পড়বেন
দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স; প্রয়োজন সতর্কতা
দেহকে সুস্থ রাখবে অ্যালোভেরা
বসন্তের বাতাসে অ্যালার্জির প্রবণতা, একটু গাফিলতি হলেই মারাত্মক বিপদ
রাসূল সা: প্রবর্তিত খাদ্যবিজ্ঞান । ডা: মো: তৌহিদ হোসাইন
তরমুজের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
যে খাবারে শিশুর উচ্চতা বাড়ে
ইন্ডাস্ট্রির সকলের স্বার্থে কপিরাইটের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিঃ ফাহিম ফয়সাল
অতিরিক্ত আবেগ মনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে
আক্ষেপ প্রকাশ করলেন ‘ছুটির ঘণ্টা’র নির্মাতার মেয়ে বিন্দি
ওজন কমাতে সাহায্য করে যে সকল খাবার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *