হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী সিলেট থেকে
কয়েক দিনের ব্যবধানে তৃতীয় দফা বন্যার কবলে সিলেট বিভাগ। সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় নতুন করে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। কেননা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও মৌলভীবাজারের নদনদীতে পানি বাড়ছেই। এই সব পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। চলমান বন্যায় সিলেট বিভাগের ২০টি উপজেলার পানিবন্দি মানুষেরা দারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন গত রবিবার থেকে। বারবার বন্যার আঘাত সিলেটবাসীকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। বানভাসী মানুষেরা বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করতে করতে হয়রান। তবে গত মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
গত রবিবার থেকে প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল নেমে সিলেটের বিভিন্ন এলাকা ডুবিয়ে দেয়। বিশেষ করে ভারতের বরাক নদীর ঢল কুশিয়ারা অববাহিকায় বেশি সংকট সৃষ্টি করে। বরাক নদী জকিগঞ্জের অমলসিদে দুই ভাগ হয়ে এক ভাগ কুশিয়ারায়, অপর ভাগ কানাইঘাটে সুরমায় মিলিত হয়েছে।
সিলেট জেলায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় ১০ লক্ষধিক মানুষ পানিবন্দি হয়। জেলার ১২ উপজেলা ও সিলেট সিটিসহ ৯৭টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়। বিভাগীয় নগরীর বিভিন্ন জায়গা ও আবাসিক এলাকার অবস্থা বড়ই করুণ। এদিকে, ত্রাণ নিতে গিয়ে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে সুরমা নদীতে মঙ্গলবার নৌকা ডুবির ঘটনায় মা, মেয়েসহ নিখোঁজ তিন জনের এখনো খোঁজ মেলেনি।
প্লাবিত উপজেলাগুলো হচ্ছে : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট সদর ও সিটি করপোরেশনের আংশিক এলাকা। সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, জামালগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদর। দ্বিতীয় দফার বন্যায় সিলেট বিভাগের ২১ লক্ষাধিক লোক আক্রান্ত হয়। এদিকে সিলেটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা।