সাবেক প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দীন আহমদ আর নেই

বাংলাদেশ
শেয়ার করুন

সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ ইন্তেকাল করেছেন। আজ শনিবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রা-জিউ’ন।

বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রথম নামাজে জানাজা আজ বেলা ২টায় নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় নিজ গ্রাম পেময়ীতে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর দ্বিতীয় জানাজা আগামীকাল ২০শে মার্চ সকাল ১০টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ জাতীয় ঈদগাঁ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। দুদফা জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।

৯২ বছর বয়সী সাবেক এই প্রেসিডেন্ট কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। দুই ছেলে গুলশানের বাসায় বাবার সঙ্গেই থাকেন। তার দুই মেয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।

এদিকে সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছেন।

উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দীন আহমদ ১৯৩০ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পেমই গ্রামে জন্ম নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৫২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

১৯৫৪ সালে তদানিন্তন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (সিএসপি) প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জনপ্রশাসনে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। তার বাবা তালুকদার রিসাত আহমেদ একজন সমাজসেবী ও এলাকায় জনহিতৈষী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের কর্মজীবনের সূচনা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে। পরবর্তী সময়ে সহকারী জেলা প্রশাসক হওয়ার পর ১৯৬০ সালে প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগে বদলি হন। আসীন হন বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পদে।

১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর ৬ই ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। ১৯৯১ সালে তার অধীনে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে।

পরে শর্তানুযায়ী তাকে প্রধান বিচারপতির পদে ফিরিয়ে দেয়া হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২৩শে জুলাই তাকে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট করা হয়। তখন তিনি অবসরকালীন সময় কাটাচ্ছিলেন। ২০০১ সালের ১৪ই নভেম্বর পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান।

এরপর গুলশানের বাসভবনে অনেকটা নিভৃত জীবন যাপন করছিলেন। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ২০১৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান সাহাবুদ্দীন আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা আহমদ। তাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ড. সিতারা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৩শে জুন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *