সাঈদ চৌধুরী
সানরাইজ-স্পেকট্রাম বাংলা রেডিও অনুষ্ঠানের ৩০ বছর পূর্তি ও এওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে ১৬ জুলাই মঙ্গলবার লন্ডনের মে-ফেয়ার ভেনু পরিণত হয়েছিল প্রবাসীদের মিলন মেলায়। যার ভালোবাসায় বিবিসিসি, ইউকে বিসিসিআই, বিসিএ, বিবিসিএ, জিএসসি, প্রেসক্লাব-সহ কমিউনিটির প্রায় সকল সংগঠনের নেতৃবৃন্দ একত্রিত হয়েছিলেন, তিনি হলেন জনপ্রিয় রেডিও প্রেজেন্টার ও আবৃত্তিকার মিসবাহ জামাল।
তিন যুগ ধরে মিছবাহ জামাল এক অসাধারণ কর্ম সাধন করেছেন। বিলেতের কমিউনিটি রেডিও তথা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জগতে তিনি হলেন অন্যতম পথ প্রদর্শক। জন্মলগ্ন থেকেই আমাদের স্বাধীনতা, দেশ, মাটি ও মানুষের চেতনাকে ধারণ করেছেন। ৩য় বাংলা বলে পরিচিত লন্ডনে বাংলা ভাষায় রেডিও সম্প্রচারকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।
গণমাধ্যমের বিস্ময়কর বিপ্লব ঘটেছে এই সময়ের মধ্যে। মুদ্রণ, সম্প্রচার ও অনলাইন সকল ক্ষেত্রেই দ্রুততার সাথে পরিবর্তন এসেছে। যাকে বিবর্তন বলাই শ্রেয়। আর এতে কেবল গুণগত নয়, চরিত্রগত ফারাক হয়েছে বিস্তর। তারপরও ভরাট গলায় মায়া ভরা কন্ঠে মিসবাহ জামালের সংবাদ পাঠ মুগ্ধতা ছড়ায়।
গণমাধ্যমের বিবর্তন যতই ঘটুক না কেন মিসবাহ জামালের প্রতি মানুষের রয়েছে অবিচল আস্থা ও ভালোবাসা। অনুষ্ঠানের অতিথি ও কমিউনিটি নেতাদের বক্তব্য থেকে তাই প্রমানিত হয়েছে। রেডিও-টিভিতে যারা খবর পড়েন তাদের বলা হয় এংকার। বাংলায় যেটাকে হুক বলে। এই হুক দুটি বস্তুকে একত্রে যুক্ত রাখে। একজন ‘সংবাদ পাঠক’ দর্শক এবং সাংবাদিকের মধ্যে হুক হিসেবে কাজ করেন। সাংবাদিকতার ভাষায় আমরা যাকে বলি এংকার। মিসবাহ জামাল এক্ষেত্রে নিপুনতা দেখিয়েছেন।
২০০০ সালে আমি লন্ডন আসার পর সাপ্তাহিক নতুন দিনে আমরা এক সাথে কাজ করেছি। সেখানেও তিনি বৈচিত্রের স্বাদ উপহার দিয়েছেন। ভালো সংগঠক ও কমিউনিটি সংযোগের কারণে তিনি একজন রিসোর্সফুল সাংবাদিকও। আমি তখন বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক ইনকিলাবে লন্ডন প্রতিনিধি ছিলাম। প্রতিদিনের সংবাদ সংগ্রহে তিনি আমাকে অনেক সহায়তা দিয়েছেন। তবে সব কিছু ছাড়িয়ে নান্দনিক উপস্থাপক হিসেবেই তার পরিচিতি বা যশ অনেক বেশি। যেখানে তিনি ঝলসে ওঠেন অন্যরকম শিল্পময় ব্যঞ্জনায়।
সানরাইজ-স্পেকট্রাম বাংলা রেডিও অনুষ্ঠানের ৩০ বছর পূর্তি ও এওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লন্ডন বারা অব টাওয়ার হামলেটস কাউন্সিলের স্পীকার বারিষ্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, বার্কিং এন্ড ডেগেনহাম কাউন্সিলের মেয়র কাউন্সিলার মঈন কাদরী, নিউহাম বারা কাউন্সিলের চেয়ার কাউন্সিলার রহিমা রহমান, কেমডেন কাউন্সিলের মেয়র কাউন্সিলার সমতা খাতুন, বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিষ্টার আশিকুন্নবী চৌধুরী, ব্রেন্ট কাউন্সিলের সাবেক মেয়র কাউন্সিলার পারভেজ আহমেদ, রেডব্রিজ কাউন্সিলের সাবেক মেয়র কাউন্সিলার জুৎস্না ইসলাম, টাওয়ার হামলেটস কাউন্সিলের সাবেক স্পীকার ও কাউন্সিলার রাজিব আহমেদ প্রমুখ।
ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিবিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট একাউন্টেন্ট আবুল হায়াত নুরুজ্জামান ও জনপ্রিয় প্রেজেন্টার মেঘনা মিনারা উদ্দিনের সাবলীল উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্ব পরিচালনা করেন রেডিও-টিভি উপস্থাপক তোফায়েল আহমদ, উপস্থাপক শাহাব আহমেদ বাচ্চু, শিল্পী রওশন আরা মনি এবং সানরাইজ স্পেকট্রাম বাংলা রেডিওর ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক কাউন্সিলার শামসুল ইসলাম সেলিম। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফিজ নাহমাদ মিছবাহ।
গত ৩০ বছরে সমাজ বিকাশে যারা কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন অনুষ্ঠানে তাদের বিশেষ এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এই সম্মানীতদের মধ্যে রয়েছেন- সাপ্তাহিক নতৃন দিন সম্পাদক ও লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মহিব চৌধুরী, জনপ্রিয় টেলিভিশন ‘চ্যানেল এস’র ফাউন্ডার চেয়ারম্যান মাহি ফেরদৌস জলিল, ব্রিটেনে প্রথম বাংলাদেশি মিলিয়নিয়ার এবং ‘দ্য মিরাকল অন ব্রিক লেন’ গ্রন্থের লেখক মুকিম আহমদ, বিবিসিসিআই’র উপদেষ্টা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহাগীর বখত ফারুক, গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ইউকের সাবেক চেয়ারপার্সন সাংবাদিক-কলামিস্ট কেএম আবুতাহের চৌধুরী, বিবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ও বাংলা টাউন গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিক হায়দার, বিবিসিসিআই’র সাবেক প্রেসিডেন্ট সাঈদুর রহমান রেনু, বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের (বিসিএ) প্রেসিডেন্ট ওলি খান এমবিই, বিসিএ’র সাবেক প্রেসিডেন্ট কামাল ইয়াকুব,
ইউকে বিসিসিআই’র সাবেক প্রেসিডেন্ট নাজমুল ইসলাম নুরু, বিবিসিএ’র প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ সেন্টারের ভাইস চেয়ারম্যান তোফাজ্জল মিয়া,
ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট ও কলামিস্ট উদয় শঙ্কর দাশ, সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার ডা: জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার, প্রমিনেন্ট রেডিও মিডিয়া ও ড্রামা আর্টিস্ট ড. আনোয়ারুল হক, স্পোর্টিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও টিভি উপস্থাপক ড: জাকির খান, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ জুবায়ের, বাংলা টিভির ব্যুরো চীফ আব্দুল কাদির চৌধুরী মুরাদ, ফ্রেন্ডস অব নাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেটের চীফ এডভাইজার এম শামসুদ্দিন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার আলাউদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান মানিক মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া, জেনারেল সেক্রেটারি মনসুর আহমদ খান, ট্রেজারার গোলাম রব্বানী রুহি আহাদ,
বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডনের জেনারেল সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন ও সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান, বিবিসিআই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল হায়াত নুরুজ্জামান একাউন্টেন্ট, রেডব্রিজ কমিউনিটি ট্রাষ্টের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ অহিদ উদ্দিন, কানেকটিং বিজনেস কমিউনিটির চেয়ারম্যান ও ইউকে বিজনেস ক্লাবের কনভেনার মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত চৌধুরী, এনায়েত খান মহিলা কলেজ নবীগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা এনায়েত খান, বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতা জামাল মিয়া, ফারুক মিয়া, মো.ওয়ারিছ আলী, আব্দুল মুকিত, মোহাম্মদ শামীম আহমদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরো কয়েকজনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন: বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান কামাল, সিনিয়র টিভি প্রেজেন্টার ও প্রডিউসার উর্মি মাজহার, সফল ব্যবসায়ী ওয়াজিদ হাসান সেলিম বিইএম, সাংস্কৃতিক বাক্তিত্ব ইফতি আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিসিএ’র জেনারেল সেক্রেটারি মিঠু চৌধুরী, জিএসসি ইউকের চেয়ারপার্সন বারিষ্টার আতাউর রহমান, কাউন্সিলার মুজিবুর রহমান, কাউন্সিলার ফয়জুর রহমান ফারুক, কাউন্সিলার সৈয়দ বাশার, রেডব্রিজ কমিউনিটি ট্রাষ্ট সেক্রেটারি শাহিন চৌধুরী, রেডব্রীজ লিবডেম চেয়ার সাবেক কাউন্সিলার মার্টিন রজনার,
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বারিষ্টার তারেক চৌধুরী, জেনারেল সেক্রেটারি দেশ সম্পাদক তাইছির মাহমুদ, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট দর্পন সম্পাদক রহমত আলী, অনলাইন টিভি এলবি২৪ প্রতিষ্ঠাতা শাহ ইউসুফ, সাংবাদিক আলাউর রহমান খান শাহীন, সাংবাদিক খালেদ মাসুদ রনি, অনুপম২৪ নিউজ সম্পাদক মুহিব উদ্দিন চৌধুরী, রেডিও বাক্তিত্ব মোস্তফা কামাল মিলন, রেডিও উপস্হাপক নজরুল ইসলাম অকিব, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের মিডিয়া সেক্রেটারী এ হান্নান, জিএসসি সাউথ ইষ্ট রিজিওয়নের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইছবাহ উদ্দিন, সাউথ ইষ্ট রিজিওনের মোহাম্মদ আবুল মিয়া, সুফি সোহেল আহমেদ, কামরুল হাসান চৌধুরী, তৈমুছ আলী, জুবেদুর রহমান, এখলাসুর রহমান পাক্কু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আতিক হাসান, শিল্পী রওশন আরা মনি ও শিল্পী ডা: শম্পা দেওয়ান।
মঙ্গলবার ছিল পবিত্র আশুরার দিন। অনুষ্ঠানে আগত অনেকে রোজাদার ছিলেন। তাদের জন্য ইফতারের বিশেষ আয়োজন করা হয়। তারপর মাগরিবের নামাজ শেষে পরিবেশন করা হয় মজাদার রাতের খাবার।
ভিডিও নিউজ লিংক https://www.facebook.com/share/v/gCvWjXKYU4EhezJY/
* সাঈদ চৌধুরী সময় সম্পাদক, কবি ও কথা সাহিত্যিক।