অনুবাদ মাসুম খলিলী :
এক. কল্পনা করুন যদি সর্বশক্তিমান আপনার প্রতি যা কিছু আশীর্বাদ তা একবারে দান করেন তাহলে কি হবে। আপনি এটি সম্পূর্ণরূপে উপভোগ করতে সক্ষম হবেন না। অপেক্ষায় প্রজ্ঞা আছে; ধৈর্যের সাথে সেটাই বিশ্বাস রাখুন এবং সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করুন।
দুই. সর্বশক্তিমান। জীবনের চাপগুলি মাঝে মাঝে আমাদের একেবারে এক কোণে ঠেলে দেয়, সামনে এগিয়ে যাওয়াকে কঠিন করে তোলে। আমাদের হাল ছেড়ে না যেতে বরং বিশ্বস্ততার সাথে সোজা পথে চলতে সহায়তা করুন। আমাদের পথের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে শক্তি দিন। আপনার রহমত ও শক্তির ব্যাপারে আপনার প্রতি আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে!
পূনশ্চঃ
এক. মনে রাখবেন, সবকিছু একটি কারণে ঘটে। কখনও কখনও আপনি এটি বুঝতে সক্ষম নাও হতে পারেন। এটা ঠিকই আছে, কারণ বিশ্বজগতের প্রভু সব কিছুর নিয়ন্ত্রণে আছেন। তাই যা যাচ্ছে সেটাকে যেতে দিন এবং সর্বশক্তিমানকে দৃঢভাবে বিশ্বাস করুন। সবকিছুর কারণ বের করার চেষ্টা করার চেয়ে আপনার জন্য শান্তি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
দুই. মনে রাখবেন যে আপনার নিজের সম্পর্কে সবকিছু সবার কাছে প্রকাশ করার জন্য নয়। । এটি আপনাকে শেষ পর্যন্ত এক টন ঝামেলা এবং হতাশা থেকে রক্ষা করবে।
তিন. আপনাকে চ্যালেঞ্জ করা হবে। আপনি পরীক্ষার মুখোমখি হবেন। কখনও কখনও মনে হতে পারে যে আপনাকে প্রান্তিক অবস্থায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এটাই হলো জীবন। এর অর্থ হলো চরিত্র গঠন, আপনার বিশ্বাসকে শক্তিশালী করা এবং আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা। আপনার পরীক্ষার সাথে আলিঙ্গন করুন।
চার. অপেক্ষা কখনোই সহজ কাজ হয় না। আপনি যখন খুব তীব্রভাবে কিছু চান এবং সর্বশক্তিমানের সাড়া তাতে পাচ্ছেন না মনে করেন, তখন ভুলে যাবেন না যে, প্রতিটি বিলম্বের মধ্যে কল্যাণ রয়েছে।
পাঁচ. অন্যের সাথে সম্পর্ক নিয়ে ধৈর্য ধরুন। মনে রাখবেন, সর্বশক্তিমান আপনার ব্যাপারে সর্বাধিক ধৈর্যশীল। আপনি কতবার বিভ্রান্ত পথহারা হয়েছিলেন; তবুও তিনি আপনাকে বারবার ট্র্যাকের দিকে নিয়ে এসেছিলেন! জীবনে এমন একটি বিষয় আসবে যখন এটি আপনাকে কেবল আঘাত করবে। নিশ্চয়ই আমাদের এমন একজন পালনকর্তা রয়েছেন যিনি পরম করুণাময়!
ছয়. এই যুগে যেখানে লোকেরা ‘নিখুঁত’দেখতে শর্ত যুক্ত করে, সেখানে নিজের ব্যাপারে সাহস রাখুন। আপনি সমাজের ইমেজের সাথে খাপ খাইয়ে নেবার জন্য নিজের সম্পর্কে সত্যবাদি হোন, নকল জিনিসের ধারক হবেন না। খাঁটি হন, আন্তরিক হন এবং সর্বশক্তিমান আপনার জন্য এমন দরজা উন্মুক্ত করবেন যা আপনি আগে কখনও কল্পনাও করেননি।
দ্রষ্টব্যঃ
তোমরা বলো, আমরা আল্লাহতে ইমান রাখি এবং যা আমাদের প্রতি, ইব্রাহিম (আ.), ইসমাইল (আ.), ইসহাক (আ.), ইয়াকুব (আ.) ও তাঁর বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা তাঁদের প্রতিপালকের নিকট থেকে মূসা (আ.), ইসা (আ.) ও অন্যান্য নবীকে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না এবং আমরা তাঁরই নিকট আত্মসমর্পণকারী।’ (সূরা বাকারা: ১৩৬)
* লেখক: মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি * অনুবাদ: মাসুম খলিলী সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট