সত্যিকার ‘আহলে-হক’ কারা ।। শায়খ ইসহাক আল মাদানী

ধর্ম ও দর্শন সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ‘আহলে হক’ এর মৌলিক চিন্তাধারা ৫টি। এক. ইসলাম বিশ্বের বুকে কেয়ামত অবধি আল্লাহ মনোনীত একমাত্র দ্বীন তথা পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। দুই. আল কুরআন কিয়ামত অবধি বিশ্ব মানবের একমাত্র পরিপূর্ণ অপরিবর্তনীয় জীবন বিধান। তিন. হযরত মুহাম্মদ (স) কিয়ামত অবধি বিশ্ববাসীর একমাত্র আদর্শ নেতা, উসওয়াহে হাসানাহ। চার. সাহাবায়ে কেরাম বিশ্বে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনা ও প্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু। পাচ. বিশ্ব জুড়ে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কুরআন সুন্নাহর আলোকে মুসলিম উম্মাহের ইউনিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা।

এক বিংশ শতাব্দীতে ‘আহলে হক’কারা

বর্তমান বিশ্বে যে সংগঠনগুলো এবং যে সকল ইসলামী কর্মী বাহিনী রাসূল মুহাম্মদ (স) ও ছয় লক্ষ সাহাবায়ে কেরামের মতাদর্শের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণকারী তারাই আহলে হক। রাসূল মুহামদ (সা) ১০ লক্ষ বর্গমাইল আয়তনের রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। অতঃপর আবু বকর (রা) প্রেসিডেন্ট হয়ে রাষ্ট্র সীমানা বর্ধিত করেন। হযরত উমর বিন খাত্তাব (রা) প্রায় অর্ধপৃথিবী শাসন করেন। অতঃপর হযরত উসমান বিন আফফান (রা) ও হযরত আলী বিন আবু তালিব (রা) প্রেসিডেন্ট হন। পরবর্তীতে হযরত মুয়াবিয়া (রা) ৬৫ লক্ষ বর্গ মাইল রাষ্ট্রের আমীর ছিলেন। বাংলাদেশের মতো ১৩০টি রাষ্ট্রের আয়তন সম্বলিত রাষ্ট্রের শাসন করেছিলেন সাহাবায়ে কেরাম।

উল্লেখ্য, সর্বপ্রথম যারা বেহেশতে প্রবেশ করবেন তারা সবাই প্রেসিডেন্ট ছিলেন। নবীদের মধ্যে হযরত মুহাম্মদ (স:) সর্বপ্রথম বেহেশতে প্রবেশ করবেন। সকল নবীদের উম্মতের আগেই আবু বকর (রা:), হযরত উমর বিন খাত্তাব (রা:), হযরত উসমান বিন আফফান (রা:) এবং হযরত আলী বিন আবি তালিব (রা:) বেহেশতে প্রবেশ করবেন। এ মর্মে হযরত উমর বিন খাত্তাব (রা:) থেকে হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

বুখারী শরীফে হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে যে, সাত সম্প্রদায়ের লোক কেয়ামত দিবসে আল্লাহর আরশের ছায়ার নিচে অবস্থান করবেন। প্রথম সম্প্রদায় হবেন ন্যায়পরায়ণ শাসক। আর শেষ সম্প্রদায় হবেন একান্তে আল্লাহর যিকিরকারী ও ক্রন্দনরত বান্দা।

সারাংশ: মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বজুড়ে একামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে ইসলামী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করতে হবে। এটাই আল্লাহর ওলী হওয়ার সঠিক পদ্ধতি। একামতে দ্বীনের বিরুদ্ধে যারাই অবস্থান নিবে তাদেরকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে হবে। ওরা আসলে মুনাফিক সরদার আব্দুল্লাহ বিন উবাইর প্রেতাত্মা। ওলী বিন ওলী, হাকিমুন নাফস, খতীবুল উম্মাহ, তারজুমানে আহলে সুন্নাতুল জামায়াত হতে হলে রাসূল(সাঃ) ও সাহাবাদের পথই অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ আমাকে ও মুসলিম উম্মাহকে “আহলে হক” এর পথ অনুসরণের তাওফীক দিন।আমীন।

* শায়খ ইসহাক আল মাদানী বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার ও শায়খুল হাদীস, লিসান্ত (ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ১৯৮৩) মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *