অনুবাদ : মাসুম খলিলী
এক. সর্বশক্তিমান প্রতিদিন আপনাকে এমন একটি সুযোগ দেন যা আপনি মিস করতে চান না। যান এবং কাগজের একটি পরিষ্কার শীট নিন আর পরিকল্পনা করুন। আপনি পরিকল্পনা করেন, তিনিও পরিকল্পনা করেন। মনে রাখবেন, শেষ পর্যন্ত তিনি আপনাকে যা দেন তাই সর্বোত্তম৷
দুই. নিজেকে ব্যাখ্যা না করে না বলতে শিখুন। সীমানা নির্ধারণ করুন। ব্যস্ত দিন-রাত্রি এগিয়ে আসছে। রমজান প্রায় আমাদের কাছে। আর শুধুমাত্র মানুষকে খুশি করার জন্য কিছু করবেন না। এটি মোটেও কোন লাভ এনে দেয় না। আপনার সৃষ্টিকর্তার প্রতি মনোযোগ দিন।
পূনশ্চঃ
এক: আপনি অন্যের জন্য যে ছোট ছোট কাজ করেন তাকে অবমূল্যায়ন করবেন না। কাজটি যতই ছোট হোক না কেন, এটি শেষ পর্যন্ত আপনার কাছে ফিরে আসবে। কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ যুগে যুগে বিলম্বিত হতে পারে তবে এটি ঠিক যে আপনার পুরষ্কারটি সত্যিই সর্বশক্তিমানের কাছে সংরক্ষণ করা রয়েছে। তাই বাধ্যবাধকতা নয় ভালোবাসা থেকে কাজ করুন।
দুই. আপনার শান্ত জীবন রাতারাতি উথালপাতাল এলোমেলো হয়ে যেতে পারে; আপনার মূলে টান পড়তে পারে। এই কার্ভ বল আপনাকে ছুড়ে ফেলে দিতে পারে এবং আপনার জীবনকে সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত করতে পারে। কিন্তু আপনি যদি সর্বশক্তিমানের উপর আপনার আস্থা রাখেন, তাহলে দুশ্চিন্তা ও দুঃখ আপনি কাটিয়ে উঠবেন।
তিন. সবকিছু ভাল হবার জন্য প্রচেষ্টার মূল্য রয়েছে। যদি একটি রূপার থালায় আপনার হাতে কিছু দেওয়া হয়, তবে এটি খুব সহজ হবে; কিন্তু এটা তার মূল্য হারাবে। এই জান্নাত সম্পর্কে এটি প্রযোজ্য। এর প্রতিফলন ঘটান।
চার. কিছু লোক অন্যদের সম্পর্কে নেতিবাচক থাকে কারণ তাদের নিজের মধ্যে থাকে নিরাপত্তাহীনতার অনুভব। এটিকে ঢাকতে তাদের সবকিছুর নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে। জেনে রাখুন এটা আপনার সম্পর্কিত বিষয় নয় বরং তাদের সম্পর্কিত। এটি আপনাকে তাদের মন্তব্য থেকে দূরে রাখতে এবং যা বলা হচ্ছে তাতে আঘাত না পেতে সাহায্য করবে!
পাঁচ. আপনি কি উদ্বেগ প্রবণ? উদ্বেগ একটি রোগ। এটি আপনাকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করবে এবং আপনার ফোকাসকে ধ্বংস করবে। এটি আপনার বিশ্বাসে ক্ষয় ধরাবে এবং শেষ পর্যন্ত আপনাকে দুর্বিসহ করবে আর আপনার আনন্দকে হত্যা করবে। এর শিকার হবেন না। উদ্বেগের দ্বারা আপনার ভবিষ্যতকে নষ্ট হতে দেবেন না। সর্বশক্তিমানের সাহায্য প্রার্থনা করুন।
দ্রষ্টব্য
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব অর্পণ করেন না। যে ভালো উপার্জন (কাজ) করবে, সে তার প্রতিদান পাবে; এবং যে মন্দ উপার্জন (কাজ) করবে, সে তার প্রতিফল পাবে।’ (সূরা বাকারা:২৮৬)
হজরত আবু যর রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন যে, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে ব্যক্তি একটি কল্যাণমূলক কাজ করবে তার জন্য রয়েছে অনুরূপ ১০টি কল্যাণমূলক পুরস্কার; এমনকি আমি তা আরো বাড়িয়ে দেব। আর যে ব্যক্তি একটি মন্দ কাজ করবে তার জন্য রয়েছে অনুরূপ একটি মন্দ প্রতিদান অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব (যদি সে অনুতপ্ত হয়ে আমার কাছে ক্ষমা চায় ও ভবিষ্যতে অন্যায় কাজ না করার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে)। আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) দিকে এক বিঘত (আধা হাত) এগিয়ে আসবে আমি তার (কল্যাণে) প্রতি এক হাত এগিয়ে আসব। আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) দিকে এক হাত এগিয়ে আসবে আমি তার (কল্যাণে) প্রতি এক বাহু (দুই হাত সমান) এগিয়ে আসব। আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) দিকে হেঁটে আসবে; আমি তার (কল্যাণের) দিকে দৌড়ে যাব। আর যদি কেউ আমার সঙ্গে শিরক না করে (আমার সঙ্গে শরিক বা অংশীদার সাব্যস্ত না করে) পৃথিবীসম গোনাহ (পাপ) নিয়ে আমার সামনে হাজির হয় (আমার কাছে ক্ষমা চায় ও তাওবা করে) তবে আমিও তার সামনে অনুরূপ (পৃথিবীসম) বিশাল ক্ষমা নিয়ে হাজির হব।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ)
* মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি
