‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে নির্যাতন: ছাত্রলীগের ২ নেতার ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে গভীর রাতে রুমে ডেকে নিয়ে মারধর ও ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম ইসলাম ও যুগ্ম সম্পাদক মো. সোলাইমানের ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনের বিষয়ে হল প্রশাসনের সভায় আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত সুপারিশ আকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে পাঠাবে।

সূত্র জানায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম ও যুগ্ম সম্পাদক সোলাইমানের নেতৃত্বে একদল ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে নিজেদের অবৈধ কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী দাবি করেন, মারধোরের একপর্যায়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের জানার পর তাকে হত্যা করে শিবির বলে চালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী হল প্রশাসন আবাসিক শিক্ষক অনুপম হীরা মণ্ডলকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তবে তদন্ত কমিটি কয়েক দিন বিলম্বে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির একজন সদস্য জানান, ‘তদন্তে কৃষ্ণকে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতা অনাবাসিক হওয়ায় তাদের সিট বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। তবে তাদের ভবিষ্যতে আবাসিকতা না দেওয়ার এবং অভিযুক্ত দুইজনের ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অনুপম হীরা মণ্ডল বলেন, ‘আমরা ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। চেষ্টা করেছি প্রকৃত ঘটনা জানার। সেই অনুযায়ী হল প্রাধ্যক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।’

সার্বিক বিষয়ে হোসেন সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আমরা হল প্রশাসন মিটিং করব। মিটিংয়ের সিদ্ধান্তর সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে শৃঙ্খলা কমিটিতে পাঠানো হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *