লন্ডনে লাখো মানুষের কন্ঠে ধ্বনিত হয়েছে ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন

মধ্যপ্রাচ্য যুক্তরাজ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

সাঈদ চৌধুরী

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে এক সাথে লাখো মানুষের কন্ঠে ধ্বনিত হয়েছে ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিন, মুক্ত ফিলিস্তিন চাই, গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করো। শনিবার দুপুরে নানা রকম ব্যানার ফেস্টুন ও প্লেকার্ড হাতে নিয়ে বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের লক্ষাধিক নারী-পুরুষের গগণবিদারী স্লোগানে আকাশ-বাতাস ছিল মুখরিত। দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে এমন স্বতঃস্ফূর্ত ডেমোস্ট্রেশন নজিরবিহীন।

ফিলিস্তিনের গাজায় বেসামরিক লোকজনের ওপর ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। লন্ডন শহরের বাসিন্দা ছাড়াও সারা যুক্তরাজ্য থেকে কয়েক শ বাস ভর্তি হয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা প্রথমে মার্বেল আর্চের সামনে জড়ো হন। কিছু সময়ের মধ্যে সেন্ট্রাল লন্ডনের ব্রিটিশ ব্রডকাস্টি করপোরেশন (বিবিসি) অফিসের সামনে থেকে পোর্টল্যান্ড স্ট্রিট, রিজেন্ট স্ট্রিট, পিকাডোলি স্কয়ার, হে-মার্কেট, ট্রাফলগার স্কয়ার, হোয়াইটহল ও পার্লামেন্ট স্ট্রিট, প্রধানমন্ত্রীর অফিস ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।

রাজধানী লন্ডনমুখি প্রতিটি ট্রেন স্টেশন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মানুষ জড়ো হন মূল স্রোতের সাথে। সময়ের অনেক আগেই সেন্ট্রাল লন্ডনের ঐতিহাসিক ট্রাফালগার স্কয়ারে জনতার ঢল নামে। কানায় কানায় ভরে যায় চারদিকের সড়ক মহাসড়ক। ফিলিস্তিনের প্রতি ব্রিটেনের বিভিন্ন বয়সী মানবতাবাদী নারী-পুরুষ প্রাণঢালা ভালোবাসা জানাতে মিছিল আর স্লোগানে যুক্ত হয়েছেন উত্তাল তরঙ্গের মত।

গাজায় ইসরায়েলের বর্বর বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে লোকেরা “মুক্ত প্যালেস্টাইন” লেখা প্ল্যাকার্ড উঁচুতে ধরেছিল, অন্যরা একটি বিশাল ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলন করেছিল এবং সবুজ ধোঁয়ার শিখা ছেড়েছিল। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, আনুমানিক এক লাখ বিক্ষোভকারী শনিবার বিকেলে বিক্ষোভের জন্য জড়ো হয়েছিল, মিছিলটি মার্বেল আর্চ থেকে হোয়াইটহল এবং পার্লামেন্ট স্কোয়ার পর্যন্ত যাত্রা করেছিল।

সহস্রাধিক পুলিশের উপস্থিতিতে কেনসিংটন হাই স্ট্রিট এবং বেসওয়াটার রোডে বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গান গেয়েছিল এবং প্ল্যাকার্ড নেড়েছিল। স্থানীয় সময় বেলা দুইটার দিকে অন্তত এক লাখ মানুষ ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে এগোতে থাকেন। বিক্ষোভ মিছিলের সামন থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরও শেষ অংশ দেখা যায়নি।

‘প্যালেস্টাইন সংহতি আন্দোলন’ নামে চলা এই কর্মসূচিতে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন ছিল এ বিক্ষোভের সহ-আয়োজক। তাঁরা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া সেখানে পুরোদমে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। বার্মিংহাম,বেলফাস্ট,কার্ডিফ সহ যুক্তরাজ্যের উল্লেখযোগ্য সব শহরেই ইসরায়েলী বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে বিট্রিশ নাগরিকেরা। তবে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভটি হয়েছে যুক্তরাজ্যের প্রাণকেন্দ্র রাজধানী লন্ডনে।

বিশাল এই বিক্ষোভকে ঘিরে পুরো লন্ডনজুড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বড় এই কর্মসূচিতে ঝামেলা এড়াতে লন্ডনে অতিরিক্ত এক হাজার সদস্য মোতায়ন করা হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *