রাশিয়ায় ওয়াগনারের বিদ্রোহের দিকে নজর গোটা বিশ্বের

আন্তর্জাতিক সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

রাশিয়ায় ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের বিদ্রোহের দিকে এখন নজর গোটা বিশ্বের৷ দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এর আগে নিজের দেশে এরকম কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েননি৷ রাশিয়ার ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ নাটকীয়ভাবে মস্কোর দিকেই অস্ত্র তাক করে৷ এতকাল রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল ওয়াগনার গ্রুপ৷ কিন্তু এই গ্রুপটি এবার পুটিনবিরোধী হয়ে ওঠায় রাশিয়ায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে৷

যদিও দিনভর ড্রামা চলার পর আপাতত দমেছে ওয়াগনারের সশস্ত্র বিদ্রোহ। এদের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন সমঝোতায় গেছেন। বেলারুশ সরকারের সহায়তায় এটি হয়েছে। ক্রেমলিনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করে নেবে রাশিয়া। প্রাথমিকভাবে প্রিগোজিন বেলারুশ চলে যাবেন। ইউক্রেন যুদ্ধে ফ্রন্টলাইনে অবদান রাখার কারণে ওয়াগনারের কোনো সদস্যকেই বিচারের আওতায় আনা হবে না। আর যেসব পিএমসি কন্ট্রাক্টর (ভাড়াটে যোদ্ধা) শনিবারের ওই রাষ্ট্রবিরোধী বিদ্রোহে যোগ দেয়নি তাদের সঙ্গে চুক্তি বজায় রাখবে রাশিয়া। অর্থাৎ, তারা ইউক্রেনে চলমান চুক্তির অধীনে যুদ্ধ করতে পারবেন।

বিশ্বনেতারা ইতোমধ্যে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার কথা জানিয়েছেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র এডাম হজ বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতি নিয়ে মিত্র এবং অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে৷’’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান চার্লস মিশেল এই বিষয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘‘জোটটি রাশিয়ার পরিস্থিতির দিকে নিবিড়ভাবে চোখ রাখছে৷ এই বিষয়ে ইউরোপীয় নেতা এবং জিসেভেন অংশীদারদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে৷’’ তবে তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন যে, বিষয়টি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং ইউক্রেনের প্রতি জোটের সমর্থন অপরিবর্তিত থাকবে৷

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সবপক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে এবং বেসমারিক মানুষদের রক্ষায় সচেষ্ট থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন৷ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের মিত্রদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি৷ আমি আজকে তাদের সাথে কথা বলবো৷ তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সবপক্ষের দায়িত্বশীল আচরণ করা৷’’

জার্মান সরকারও রাশিয়ার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মস্কোর কেন্দ্রীয় অঞ্চলের পাশাপাশি সরকারি ও সামরিক ভবন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে৷

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলানস্কি জানিয়েছেন যে, ওয়াগনারের বিদ্রোহ দেখাচ্ছে যে রাশিয়া দুর্বল৷ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ার দুর্বলতা স্পষ্ট৷ পূর্ণমাত্রায় দুর্বলতা৷ রাশিয়া আরো যত বেশি সময় এটির সেনা এবং ভাড়াটে সেনাদের আমাদের জমিনে রাখবে ভবিষ্যতে এটি ততই বিশৃঙ্খলা, যন্ত্রণা এবং সমস্যা ভোগ করবে৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *