‘রানা প্লাজায় উদ্ধার বন্ধ করে আটকে পড়াদের চাপা দিতে বলেছিলেন শেখ হাসিনা’

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

যমুনা টিভির সুত্রে দৈনিক ইত্তেফাক লিখেছে, সাবেক এসএসএফ প্রধান জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় উদ্ধার বন্ধ করে সেখানে আটকে পড়াদের চাপা দিতে বলেছিলেন শেখ হাসিনা। এর আগেও তিনি ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তাজরীন ফ্যাশন কারখানায় আগুনে অঙ্গার হওয়া পোশাক-কর্মীদের লাশগুলোকে পুলিশের কাছে দিয়ে গুম করে ফেলতে বলেছিলেন। কারণ গুম না করলে বিএনপি এবং খালেদা জিয়া লাশ নিয়ে মিছিল করবে।

ইত্তেফাকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশের ইতিহাসে বড় হৃদয় বিদারক ঘটনা সাভারের রানা প্লাজা ধস। ২০১৩ সালের ৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে ১০ তলা রানা প্লাজা ভবন ধসে নিহত হন এক হাজার ১৩৬ জন শ্রমিক। আহত হন দুই হাজারের বেশি মানুষ। জীবিত উদ্ধার করা হয় দুই হাজার ৪৩৮ জনকে। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয় এই শিল্প দুর্ঘটনা। ওই ঘটনায় আহত-নিহতের পরিবারতো আছেই, এখনো অসংখ্য লোকের চোখে লেগে আছে বাঁচার জন্য চাপাপড়া মানুষের নিদারুণ আর্তনাদ। একফোটা পানি কিংবা একটু অক্সিজেনের জন্য সেই কাকুতি কানে বাজে এখনও।

ওই সময় উদ্ধার কাজে সার্বিক তদারকির দায়িত্বে ছিলেন সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন। যার প্রধান ছিলেন সাভারের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং বা জিওসি তৎকালীন মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে কারাগারে থাকা সাবেক এই এসএসএফ প্রধান মুক্তি পান গত ৬ আগস্ট। তার দাবি, রানা প্লাজায় নিহতের সংখ্যা কম দেখাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বলেন, উদ্ধার কাজের একপর্যায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নির্দেশ দেন, অনেক তো উদ্ধার হলো এবার আটকে পড়াদের চাপা দিয়ে দেন। উদ্ধারকাজ বন্ধ করতেও নির্দেশনা দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তবে তা বন্ধ করতে রাজি হননি তিনি। প্রথমে তাকে জীবিত কিংবা মৃত শেষ ব্যক্তিটাকে উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চালানোরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। পরে শেখ হাসিনা তাকে বলেন, ‘স্পেট্রা গার্মেন্টস নামে একটি গার্মেন্টস বিএনপির আমলে ধ্বংস হয়েছিল এবং ওই ঘটনায় মানুষ চাপা দেওয়া হয়েছে কাউকে উদ্ধার করা হয়নি।’

শুধু রানা প্লাজা নয়, ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তাজরীন ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানায় আগুনে অঙ্গার হন ১১৭ পোশাক-কর্মী। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল ২০০’র মতো। হাসান সারওয়ার্দী দাবি করেন, তাজরীন ফ্যাশনের ঘটনার সময়ও তাকে আইন সিদ্ধ নয়-এমন নির্দেশনা দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রথমে সেনা সদরের মাধ্যমে এবং পরে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেন এই লাশগুলোকে পুলিশের কাছে দিয়ে গুম করে ফেলতে হবে। তিনি এর কারণ জিজ্ঞাসা করায় প্রধানমন্ত্রী বললেন গুম না করলে পরের দিন বিএনপি এবং খালেদা জিয়া লাশ নিয়ে মিছিল করবে। রাস্তাঘাট বন্ধ করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবে। এমন আরও অনৈতিক নির্দেশনা অমান্য করায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অপ্রিয় পাত্রে পরিণত হন বলে দাবি করেন ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের সাবেক এই কমান্ড্যান্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *