যে যে কারণে প্রতিদিন খেজুর খাওয়া উত্তম

ফিচার লাইফ স্টাইল
শেয়ার করুন

আমরা সারা বছর কতো রকমের খাবারইতো খাই। কিন্তু কিছু কিছু খাবার আছে যা আমাদের নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে খেজুর।

খেজুরের উপকারের কথা বলে শেষ করা যায় না। খেজুর খুবই পুষ্টিকর একটি ফল। খেজুরকে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলা হয়। খেজুর একদিকে যেমন ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী তেমন স্বাস্থ্যের জন্যও খেজুর অনেক ভালো। খেজুরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, বি, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সালফার, প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রন। পুষ্টিবিদদের মতে-

– খেজুর মনকে উৎফুল্ল করেঃ

খেজুরে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড ও ট্রিপটোফেন, যা সিরোটোনিন হরমোন তৈরিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এই মিষ্টি ফল মনে আনন্দের অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়, খুশি রাখে।

– ওজন কমাতে সাহায্য করে খেজুরঃ
অবাক করার মত হলেও সত্য যে খেজুর ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেজুরে রয়েছে প্রচুর শর্করা। সকালে এক কাপ ব্ল্যাক কফির সাথে আপনি খেজুর খেতে পারেন বা সন্ধ্যায় দুধ চা বা গ্রিন টির সাথে। খেজুর অকেক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে ফাস্ট ফুডের প্রতি আগ্রহ কমে অনেকাংশে।

– হাড় শক্তিশালী করেঃ
খেজুর শীতল আবহাওয়া থেকে আমাদের সুরক্ষিত রাখে, কারণ খেজুরে রয়েছে ভরপুর পুষ্টি ও প্রোটিন। খেজুর আমাদের দূর্বল হাড়কে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া খেজুরে যে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে তা হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

– চিনির প্রতি ক্রেভিং কমায়ঃ
খেজুরে যে চিনি রয়েছে সেটা প্রাকৃতিক। শীতকালেই এমনিতে চিনি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। খেজুর খেলে এই প্রবণতা কমে যায় এবং এতে চিনি খাওয়ার পরিমাণ ও কমে। শরীরের ওজনও ঠিকঠাক রাখে চিনি।

– স্ট্রেস কমায়ঃ
খেজুরগুলোতে ভিটামিন বি১, বি২,বি৩ এবং বি৫ রয়েছে। এতে করে প্রতিদিন অল্প কিছু খেজুর খেলে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হবে। আর এর ফলে শরীর থাকবে সক্রিয় ও চিন্তামুক্ত।

– হজমশক্তি বৃদ্ধি করেঃ
অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। তাদের জন্য খেজুরে রয়েছে সমাধান। ঘুমানোর আগে কিছুসময় খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়ার পর এক গ্লাস পানি পান করলে হজমের উন্নতি হবে। এতে উচ্চ ফাইবার রয়েছে যা আপনার কোষ্ঠ্যকাঠিন্যতা কমাবে।

– ত্বক ভালো রাখেঃ
খেজুরে যে ভিটামিন সি ও ডি রয়েছে তা ত্বককে মসৃণ রাখতে সহায়তা করে। এন্টি এজিং এর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে খেজুর।

– ক্ষুধার তীব্রতা কামাতে সাহায্য করে খেজুরঃ
অল্প কয়েকটি খেজুর খেলে ক্ষুধার তীব্রতা কমে যায়। এই ফল পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। অন্যদিকে শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ করে দেয়। ফলে মুটিয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে।ৎ

– কোলেস্টরেল লেভেল ঠিক রাখেঃ
আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে অল্প পরিমাণে খেজুর রাখলে তা কোলেস্টরলের মাত্রা ঠিক রাখে। এতে করে ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

– ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ
খেজুরে যে ফাইবার রয়েছে তা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। এক্ষেত্রে খেজুরের সাথে টক দই মিশিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।

– চোখের উপকারিতাঃ
খেজুরের মধ্যে রয়েছে জিক্সাথিন ও লিউটেইন। এই উপাদানগুলো চোখের ম্যাকুলার ও রেটিনার ভালো রাখে। তাই দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে প্রতিদিন খেজুর খাওয়া উচিত।

– হৃৎপিণ্ড ভালো রাখেঃ
নিয়মিত খেজুর খেলে হার্টের সমস্যা কমে। এরজন্য মানতে হবে একটি নিয়ম। এক গ্লাস পানির মধ্যে বিচি ছাড়া কয়েকটি খেজুর রাখতে হবে। পরদিন সকালে খেজুরসহ এই পানি ব্ল্যান্ড করতে হবে। দিনে কয়েকবার এই পানি পান হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে কাজ করে।

– খুসখুসে কাশি দূর করেঃ

সাধারণত যাদের খুসখুসে কাশি হয় তারা ২০-২৫ গ্রাম খেজুর, ২ কাপ গরম পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ওই খেজুর ব্ল্যান্ড করে সরবতের মতো করে খেলে খুসখুসে কাশি থেকে ১৫ দিনের মধ্যে উপকার পাওয়া যায়।

– খেজুর খাওয়া সুন্নতঃ
খেজুর খাওয়া সুন্নত, আবার এই একটি সুন্নতের পেছনেও আছে অনেক উপকারিতা।

খেজুরের প্রধান মৌসুম শীতকাল হলেও সারা বছরই খেজুর পাওয়া যায়।খেজুর সংরক্ষণের নিয়মঃ
তাজা খেজুর সরাসরি ফ্রিজে রাখা ভালো এবং কয়েকদিনের মধ্যেই তা খেয়ে ফেলা উচিত। তবে শুকনো খেজুর কিছুদিন রেখে খাওয়া যায়। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে তাতে যেন পোকা বা ফাঙ্গাস না পড়ে। এরকমটা হলে খেজুর সাথে সাথেই ফেলে দেওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *