যুবদলের নেতাকে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

যুবদল নেতা আমিনুর রহমান মধুকে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তাকে ১০ দিনের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং আদালতের রায় বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ও সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বদরুদ্দোজা বাদল, আবদুল জব্বার ভূইয়া, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মনিরুজ্জামান আসাদ, মো: মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

গত ২৯ নভেম্বর বিএনপির আইনজীবীরা কারাবন্দি আমিনুুর রহমানকে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়ার ঘটনা হাইকোর্টের নজরে আনেন। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি নজরে আনা হয়।

যশোর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মো. আমিনুর রহমান মধুকে সদর উপজেলার আমদাবাদ এলাকা থেকে গত ২ নভেম্বর বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর রহমান মধু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কারাগার থেকে তার দুই পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি ও হাতকড়া লাগিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়।

অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সেখান থেকে ওই রাতেই তাকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন ১৩ নভেম্বর কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। দুই পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে ও ডান হাতে হাতকড়া লাগানো অস্থায় হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে।

চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পুলিশের আপত্তির মুখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে বিছানা পর্যন্ত দেয়নি। যে কারণে আমিনুর রহমান মধুকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা করা হয়। তার বাম হাতে ক্যানোলা লাগানো। সেখানে স্বজনদের কাছে যেতে দেয়নি পুলিশ। এমনকি সময়মতো তাকে ওষুধ সেবন পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি।

আদেশের বিষয় ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। মানবাধিকার দিবস সরকার পালন তো করেই না, বরং তারা মানবাধিকারকে হরণ করছে। তার নিষ্ঠুর উদহারণ হলো হৃদরোগে আক্রান্ত যুবদলের সহ-সভাপতি মো: আমিনুর রহমান মধুকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। সব থেকে নির্মম হলো তার চিকিৎসা সমাপ্ত না করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই নির্মমতার বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করি। হাইকোর্ট ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন। একইসাথে তাকে পর্যাপ্ত ও সম্পূর্ণ চিকিৎসা সেবা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, যারা সরকারবিরোধী মতের আছেন তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্যাতন ও নিগৃহীত করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *