যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশে নিযুক্ত কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে ওয়াশিংটন। কূটনীতিকদের সুরক্ষা ইস্যুতে ভিয়েনা কনভেনশন মনে রাখার পাশাপাশি মার্কিন কূটনৈতিক মিশন ও কর্মীদের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়ে দিয়েছে দেশটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সমস্ত কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গত ১৫ মে, সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয় যে, এর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কনভয় সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এবং ২০১৮ সালে আক্রমণের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন কিনা? জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমি মার্কিন দূতাবাস বা এর কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশদ বিবরণে কথা বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু আমি উল্লেখ করতে চাই, কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, যে কোনো দেশকে অবশ্যই সব কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ ও এর কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলতে হবে এবং কর্মীদের ওপর কোনো আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কার্যকর সব পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের কূটনৈতিক কর্মী এবং স্থাপনার নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দূতসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অতিরিক্ত নিরাপত্তা এসকর্ট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্যাটেল এ মন্তব্য করেন।
ব্রিফিংয়ে তাকে জাতীয় নির্বাচন এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে পৃথক প্রশ্ন করা হলে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমাকে কয়েকটি কথা বলতে দিন। প্রথমত, আপনার প্রশ্নের বিষয়ে ঘোষণা করার মতো নতুন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। তাই কোনো নিষেধাজ্ঞা বা এ জাতীয় কোনো বিষয়ে নতুন কোনো খবর নেই।
তবে বিস্তৃতভাবে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের কথা বললে, আপনি আমাকে আগেও এটা বলতে শুনেছেন যে, গত বছর আমাদের দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন করেছে। আমরা যে সম্পর্কের জন্য অপেক্ষা করছি তা হলো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী নির্বিশেষে সেই সম্পর্ককে আরও গভীর করা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করা।
নির্বাচন প্রসঙ্গে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, বিশ্বজুড়ে যে কোনো নির্বাচনে আমাদের প্রত্যাশা হলো, নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে। তবে এর বাইরে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী বা এই জাতীয় কিছুর ক্ষেত্রে অন্তর্দৃষ্টি দেয়ার মতো কোনো বিষয় নেই।
প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার ঢাকায় গণমাধ্যমকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ ছয়টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের দেয়া বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জনবল সংকট ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কৃচ্ছ্রসাধনের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে অর্থের বিনিময়ে কূটনীতিকরা বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা নিতে পারবেন।