মানুষের অধিকার আদায়ের পথে বিজয়ের জয়যাত্রা : মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

মাথার ওপর সূর্যের প্রচন্ড বিকিরণ, পায়ের নিচে উত্তপ্ত পিচঢালা রাজপথ। এরই মধ্যে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হেঁটে চলেছেন লাখো মানুষ। হাঁটতে হাঁটতে ঘেমে-নেয়ে একাকার। কিন্তু তারপরও যেন ক্লান্তি নেই কারো চোখে-মুখে। বরং হাতে হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড আর মুখে মুখে বজ্রকণ্ঠে স্লোগান। ‘এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনা কবে যাবি’, ‘চোর চোর ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট চোর’, ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘জেল-জুলুম-হুলিয়া, নিতে হবে তুলিয়া’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার’, ‘আমার ভোট আমি দেবো, রাতে নয় দিনে দেবো’।

সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে এভাবেই গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পদযাত্রা করেছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাবতলী থেকে রায়সাহেব বাজার ১৬ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তাদের পদভারে আর স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজধানী। পথে পথে তাদের উদ্দেশে হাত নেড়ে, করতালি দিয়ে উৎসাহ যুগিয়েছেন দোকানদার, রিকশাচালক, শ্রমিক, পথচারী, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ তুলে দিয়েছেন কলা-রুটি, তো কেউ পানি।

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবি আদায়ে গতকাল থেকে পদযাত্রার মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলনে নেমেছে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী ৩৬টি রাজনৈতিক দল। এদিন ঢাকাসহ সারাদেশের সকল বিভাগীয় ও জেলা শহরে একই কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে লক্ষ্মীপুর, ফেনী, খাগড়াছড়ি, কিশোরগঞ্জ, বগুড়া, নরসিংদীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে পুলিশের গুলিতে কৃষক দলের এক নেতা নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। বগুড়ায় পুলিশের টিয়ার শেলে ২৭ জন স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া অন্যান্য স্থানেও সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বিএনপির অভিযোগ, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে সরকার। এজন্য রাজধানীর মিরপুর, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বিনা উস্কানিতে পদযাত্রায় হামলা করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে বাধা দিয়েছে।

ঢাকায় সকালে পদযাত্রা-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা শুধু পদযাত্রা নয়, এটা মানুষের অধিকার আদায়ের পথে বিজয়ের জয়যাত্রা। বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। সারা বাংলাদেশের শুধু পদযাত্রা নয়, এর আগে সভা-সমাবেশ হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছি, দাবি জানাচ্ছি যে, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। এক দফা এক দাবি, দাবিটা কি? নেতাকর্মীরা এ সময়ে উচ্চস্বরে ‘শেখ হাসিনা এখন যাবি’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

মির্জা ফখরুল সরকারের উদ্দেশে বলেন, অবিলম্বে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করো এবং একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দাও। গত ১২ জুলাই শুধু বিএনপি নয়, ৩৬টি রাজনৈতিক দল একযোগে ঘোষণা দিয়েছে যে, এই সরকারকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। এ দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আসুন এই পদযাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা নতুন যাত্রা শুরু করি। এটা হচ্ছে বিজয়ের যাত্রা। এই যাত্রার মধ্য দিয়ে ইনশাআল্লাহ আমরা আমাদের এক দফা দাবি আদায় করব। এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার ও সংসদ গঠন করব। সবকিছু উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণভাবে বিজয়ী হতে হবে আমাদের। সমস্ত রাজনৈতিক দল, সংগঠন, পেশাজীবীসহ সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে আমাদের আজকে একজোট হতে হবে। এ জন্য বলেছি সরকারকে পদত্যাগ করেন। নইলে ফয়সালা হবে ‘রাজপথে’।

গতকাল সকাল ১১টার দিকে গাবতলী থেকে বিএনপির এই পদযাত্রা শুরু হয়। ১৬ কিলোমিটারের এই পদযাত্রা টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর-১, মিরপুর-১০ গোল চত্বর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁওয়ের তালতলা, বিজয় সরণি, কাওরান বাজার, এফডিসি, মগবাজার, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ইত্তফাক মোড়, দয়াগঞ্জ হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড়ে গিয়ে সাড়ে সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়।

বিএনপির পাশাপাশি সমমনা জোটগুলো গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণফোরাম-পিপলস পার্টি, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদের দুই অংশ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদ যুগপৎভাবে একই কর্মসূচি পালন করছে।

সরেজমিন দেখা যায়, গাবতলী থেকে পদযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। কিন্তু সকাল ৮টা থেকেই ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হতে থাকেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের হাজার হাজার নেতাকর্মী পথে পথে বিভিন্ন স্পটে পদযাত্রায় যুক্ত হয়। ফলে সময়ের সাথে সাথে বিএনপির পদযাত্রাটি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। যদিও শ্রাবণের দিনটিতে সূর্যের তেজ ছিল অনেক বেশি। প্রচন্ড তাপ ও রাজপথের উত্তাপ এদিন কোনো কিছুই বিএনপি নেতাকর্মীদের শরীর ও মনকে টলাতে পারেনি।

তাদের হাতে ছিল দলীয় ও জাতীয় পতাকা এবং সরকার পদত্যাগের দাবি সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। লাল-সবুজ-হলুদ-বেগুনি বিভিন্ন রঙের ক্যাপ পরে কর্মীরা বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে ঢাকাবাসীকে আন্দোলনের দাবিগুলো জানান দেন। কিলোমিটারের পর কিলোমিটার পায়ে হেঁটেছেন, ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়েছেন কিন্তু চোখে-মুখে ছিল না কোনো ক্লান্তি। বরং বজ্রকণ্ঠে স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে। পথে পথে পদযাত্রার সময় রাস্তার দুই ধারে সাধারণ মানুষ বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাত নেড়ে, কড়তালির মাধ্যমে উৎসাহ প্রদান করেন। আবার কেউ কেউ নেতাকর্মীদের পানির বোতল, কলা-রুটিসহ নানা খাবার তুলে দেন। এদিকে পদযাত্রা রুটের পুরোটা জুড়েই মোড়ে মোড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে।

পদযাত্রা শুরুর সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস ও দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, মীর সরফত আলী সপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আজিজুল বারী হেলাল, রকিবুল ইসলাম বকুল, কাজী আবুল বাশার, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শিরিন সুলতানা, আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, ফখরুল ইসলাম রবিন, মামুন হাসান, নজরুল ইসলাম তালুকদার, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, নবীউল্লাহ নবী, তানভীর আহমেদ রবিন, লিটন মাহমুদ, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দল, কৃষক দল, তাঁতি দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ১২ জুলাই রাজধানীতে এক জনাকীর্ণ সমাবেশ থেকে সরকার হটানোর ‘এক দফা’ আন্দোলনের ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক দফার প্রথম কর্মসূচি হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার পদযাত্রা করেছে বিএনপি এবং মিত্ররা। একই দাবিতে আজ শুধু ঢাকা মহানগরীতে আব্দুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী হবে পদযাত্রা।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ঢাকার এই মার্চের মধ্য দিয়ে এই জনগণ এই বার্তা দিচ্ছে যে, সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে।

মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীরা গাবতলী থেকে পদযাত্রা করে মগবাজার পর্যন্ত আসেন বেলা সাড়ে তিনটায়। সেখানে সকাল থেকেই জড়ো হয়েছিলেন মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে তারা পদযাত্রা করে রায়সাহেব বাজার পর্যন্ত যান। মগবাজারে ট্রাকের উপর অস্থায়ী মঞ্চে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, মাথায় উত্তপ্ত রোদ, নিচে পিচঢালা পথ, মাঠে আওয়ামী লীগের অত্যাচার, সব রুখে দিয়েই এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে, এটা আপনাদের মনে রাখতে হবে। সে জন্য সরকার উল্টাপাল্টা আচরণ করছে। সারা বিশ্ববাসী আজ এই সরকারের ওপর বিরক্ত, দেশবাসী এই সরকারের ওপর বিরক্ত, আমরাও এই সরকারের ওপর বিরক্ত। সুতরাং এই সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারে না।

মির্জা আব্বাস বলেন, এই পদযাত্রা প্রমাণ করবে, এই সরকারকে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী ভয় পায় না। এই সরকারকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ইতোমধ্যে পরাস্ত করে ফেলেছে। তারা জেল খেটে প্রমাণ করেছে, জেলকে ভয় পায় না। পদযাত্রা করে প্রমাণ করেছে, রাজপথ আমাদের দখলে আছে।

রাজধানীর বাঙলা কলেজ এলাকাসহ ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় আজ পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের প্রতি হুঁশিয়ারি জানান মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, বিভিন্ন জায়গায় পদযাত্রায় হামলা করা হয়েছে। এই হামলা আমরা আর সহ্য করব না। আর যদি হামলা হয়, ইনশা আল্লাহ আমরা তার পাল্টা জবাব দেবো। কাউকে ছাড়া হবে না।’ এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম। ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদের পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রকিবুল ইসলাম, নাসিরউদ্দিন অসীম, কাজী আবুল বাশার, হাবিবুর রশীদ, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন প্রমুখ। সমাপনীতেও আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মির্জা আব্বাস।

উপনির্বাচনের তামাশা : মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকায় নির্বাচন কমিশন একটা উপনির্বাচনের তামাশা করেছে। সেই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিল অত্যন্ত হেভিওয়েট প্রার্থী। সে আবার আওয়ামী লীগের থিংক ট্যাঙ্কের প্রধান। দেশের সব মানুষ তাকে চিনে ড. আরাফাত। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কে? হিরো আলম। ওই নির্বাচনেও ভোটারদের নিতেই পারেনি। ভোটকেন্দ্র শূন্য, ভোটকেন্দ্র খালি। ইলেকশন কমিশন যেটা একেবারে পঙ্গু, অথর্ব, বশংবদ, দাসানুদাস তাদের অধীনে মাত্র ১১ শতাংশ ভোট পড়েছে। আমরা তো দেখলাম কোথাও ভোটার নেই। ৫ ঘণ্টা পর একটা ভোটার আসছে ওকে নিয়ে লাফালাফি কাড়াকাড়ি। আবার ভোটের রেজাল্টের পর আরাফাত সাহেব আঙ্গুল দেখায়Ñ ভিক্টরি। লজ্জা, লজ্জা। হিরো আলম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয়, তার সঙ্গে ভোট করতে গিয়ে তাকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে পিটিয়ে পিটিয়ে সাপ যেভাবে মারে সেভাবে তাকে মারা হয়েছে।

আবার পুলিশ বলে কি আমরা তো আমাদের কাজ করেছি। ঠিকই করেছেন। যে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী তাকে যখন মেরেছে তখন আপনারা দাঁড়িয়ে দেখেছেন। আর ইলেকশন কমিশন বলছে যে, না ওই ১১ শতাংশ ভোটের মধ্যে নাকি শ্রেষ্ঠ নির্বাচন হয়েছে। এসব তামাশা করে কোনো লাভ নেই। এসব তামাশা করে জনগণের সাথে প্রতারণা করে কোনো লাভ হবে না। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে করেছ, ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করে জোর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসেছ, ২০১৮-তে নির্বাচনের আগের রাতে ভোট করে নিয়ে গিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে আবার ক্ষমতায় বসেছ। এই ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশের মানুষের পকেট খালি করে দিয়েছ। ট্যাক্স দিতে দিতে, সারচার্জ দিতে দিতে মানুষের এখন বেহাল অবস্থা। বিদ্যুতের বিল দিতে দিতে, চাল-ডাল-তেল-লবণের দাম বাড়তেই আছে…।

মির্জা ফখরুল বলেন, অসৎ ব্যবসায়ীদের সরকার একটা। জনগণের টাকা লুট করে নিচ্ছে, যারা এলএনজির দাম বাড়ায়, বিদ্যুতের দাম বাড়ায়, লুটপাট করে টাকা বিদেশে নিয়ে যায়, সিঙ্গাপুর, কানাডায় বাড়ি বানায় তাদের জন্য এই সরকার। শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) তাদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টা আলাপ করে! লজ্জা ও দুঃখ হয়, ঘৃণা জানাই এই সরকারকে, ঘৃণা জানাই এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী যে আপনি আজকে গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছেন।

‘ডেঙ্গুর অবনতি, মেয়র-মন্ত্রীরা বিদেশে’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ডেঙ্গুর কথা নাই বা বললাম। ডেঙ্গু হচ্ছে এখানে। আর আমাদের দক্ষিণের মেয়র অবকাশ যাপন করতে চলে গেছেন ইউরোপে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী গেছেন আমেরিকায়। বাহ বাহ। কি রকম দায়বদ্ধতা। আর কোনো দিন নয়। এখন আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে পরাজিত করতে হবে।

ছাত্রলীগের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া

গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বিএনপির পদযাত্রাটি মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে এলে কলেজের ভেতর থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি করে। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পাল্টা ধাওয়া করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পদযাত্রার একটি অংশের ওপর সরকারি বাঙলা কলেজের ভেতর থেকে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। তখন পদযাত্রা থেকে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী কলেজ গেটে ভাঙচুর করে এবং সেখানে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে এ ঘটনার পরও পদযাত্রাটি থামেনি, সামনে এগিয়ে যায়। – ইনকিলাব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *