মানবজাতির জন্য এক অমোঘ জীবনাদর্শ । মুসা আল হাফিজ

প্রবন্ধ-কলাম সময় চিন্তা
শেয়ার করুন

মহানবী সা: যখন এসেছিলেন, তখন দুনিয়াজুড়ে অন্ধকার। যখন বিদায় নিলেন, চারদিকে আলোর বসন্ত। মানবেতিহাস চিরদিনের জন্য বদলে গেছে। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ অবধি কোনো মহাপুরুষ নিজের জীবনসাধনায় গোটা মানবজাতিকে এত গভীর ও ব্যাপকভাবে আন্দোলিত করতে পারেননি। এত প্রগাঢ়ভাবে বদলে দিতে পারেননি ইতিহাস। এ বদল কোনো দেশ বা অঞ্চলের প্রেক্ষাপটে ছিল না। এ বদলের হাওয়া প্লাবিত করেছে পৃথিবীর প্রতিটি কাঁচা-পাকা ঘর। এমনকি যেখানে ঘর নেই, যাদের ঘর নেই, তাদের মধ্যেও ঘর গড়েছে এ বিপ্লব। পৃথিবীর প্রতিটি জাতির জীবনে সুদূরপ্রসারী ছাপ ফেলে মহানবীর জীবন সাধনা ও জীবনাদর্শের প্রভাব। মানবেতিহাস প্লাবিত করে এর তরঙ্গগুলো দুনিয়াকে আর থাকতে দেয়নি আগের জায়গায়। বরং এ প্রভাবের আদেশ মানুষ ও তার জীবনদৃষ্টিকে ভেতর থেকে দিলো বদলে। যে পরিবর্তনের লক্ষ্য ছিল মানুষকে মুক্তি দেয়া এবং তাদের আত্মা ও চরিত্রকে পরিশুদ্ধ, মার্জিত ও অলঙ্কৃত করার পাশাপাশি সব যুগের মানুষকে সব সঙ্কট আর সমস্যা থেকে মুক্ত করা- যেসব সমস্যা ও সঙ্কটের বেড়াজাল জীবন ও জগৎকে করে রাখে কারারুদ্ধ।

মহানবীর এ বিপ্লবের সব কিছুই জীবনময়। এর কোনো দিক এমন ছিল না, যাকে বুদ্ধি দিয়ে বিচার করা যায় না, যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করা যায় না, বিবেক দিয়ে যার সহযাত্রী হওয়া যায় না। সাথী ও অনুসারীদের মধ্যে যে পরিবর্তন তিনি আনলেন, তার প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে বিস্ময় শব্দের আশ্রয় নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। যারাই তার সত্যকে গ্রহণ করতেন, এক অলৌকিক পরিবর্তনে প্লাবিত হতেন। গভীরতর বিশ্বাসের শিখায় প্রজ্ব¡লিত বোধ নিয়ে তাদের ভেতর থেকে মুক্তি পেত মানবীয় সব রুদ্ধ সুন্দরতা, এতদিন যারা ছিল মৃতপ্রায়। তাদের হৃদয়ের গভীরে থাকত খোদাভীতির প্রখর রশ্মি। ভেতরে ও বাইরে আসত মোহন ভারসাম্য। সব মন্দ যেন ভোজবাজির মতো হারিয়ে যেত তাদের থেকে। ভালো শুধু প্রবেশ করত না, তারা নিজেই হয়ে উঠতেন ভালোর মশাল। এরকম উজ্জ্বল, উচ্ছল জীবনসম্পদে উদ্বেল একদল সত্যসেনানীর জীবন নতুন সমাজ ও সভ্যতার বুনিয়াদ গড়ে দিলো। যে সমাজের ছিল আশ্চর্য প্রাণালোক। যার সর্বত্র বিচ্ছুরিত হতো অমেয় সব বৈশিষ্ট্যের শিখা।

এই সমাজের বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছিল গতি ও প্রগতি, সাম্য ও ভালোবাসা, সত্য ও ন্যায়বিচার। সেই সমাজের ভেতরে যখন দৃষ্টি দিই, তখন আমরা দেখি, সেখানে বিরাজ করছে, অগ্রসর, সমুন্নত ও আদর্শ আলোকমালা।

সেখানকার সমাজচরিত্রে লক্ষ্য করব-
ক. আত্মসমালোচনা ও সুবিচার : যার প্রাণ হলো ঈমান। ঈমান কোনো বিশ্বাসমাত্র ছিল না। তা নৈতিক শিক্ষার এক আশ্চর্য প্রেরণায় পরিণত হলো। সে প্রেরণা তার অনুসারীদের মধ্যে সৃষ্টি করল আত্মবিশ্বাসের অপূর্ব এক শক্তি, কল্যাণের জন্য সমালোচনা এবং অন্যের প্রতি সুবিচার। কেননা, খোদাভীতি ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা আত্মপ্রলোভনকে জয় করা সম্ভব নয়।

খ. সততা ও আমানতদারি : আল্লাহর উপস্থিতির জীবন্ত বিশ্বাস ব্যক্তি ও সমষ্টিকে দিচ্ছিল সর্বব্যাপী পাহারা। যার ফলে সততা ও আমানতদারি সর্বজনীন গুণ হিসেবে বিকশিত হলো মুসলমানদের মধ্যে। এমনকি একাকী, নির্জন পরিবেশে কিংবা যে পরিবেশে ধর্মীয় বাধা লঙ্ঘন করা সহজতর, সেখানেও খোদাভীতি মুসলমানদের এক শক্ত শৃঙ্খলার শাসনে নিয়ন্ত্রিত রেখেছিল, যার ফলে আত্মশাসন ছিল এক স্বাভাবিক বাস্তবতা।

গ. এক আল্লাহতে বিশ্বাস : বিশ্বের সার্বভৌমত্বের অধিকারী এক আল্লাহর ওপর প্রগাঢ় বিশ্বাস মুসলিম মন ও মস্তককে করল সমুন্নত। ফলে পরম পরাক্রমশালী সেই সত্তা ছাড়া আর কারো সামনে তার মাথা নত হলো না। তাদের হৃদয়ের আয়নায় এই দুনিয়ার গৌরব, চাকচিক্য কোনো ছাপই ফেলতে সক্ষম হলো না।

ঘ. আত্মনিবেদনের প্রেরণা : জীবনের প্রতিটি ব্যাপারে যারা ছিল নিয়ম-বন্ধনহীন সেই অসভ্য আরবরা ইসলামের বিশ্বাস দ্বারা অকৃত্রিম আন্তরিকতাসহ এমনভাবে পরিচালিত হতে লাগল যে, আধ্যাত্মিক আইনের সামান্য বিচ্যুতিও তাদের হৃদয়ে কম্পন জাগাত। আল্লাহর সার্বভৌমত্ব তারা পূর্ণভাবে মেনে নিয়েছিলেন। যুদ্ধ-শান্তি, আনন্দ-বেদনা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি জীবনের প্রতিটি অবস্থায় প্রতিটি ঘটনায় আল্লাহর সাথে সম্পর্কের বন্ধন ছিল প্রথম ও প্রধান বিবেচ্য। সামান্যতম কাজেও তারা আল্লাহর নির্দেশ ও সাহায্য প্রার্থনা করতেন এবং দ্বিধা-সঙ্কোচহীনভাবে তাঁর নির্দেশ মাথা পেতে নিতেন।

ঙ. মানবতার একাত্মতা : আল্লাহ প্রতিটি মানুষ ও জাতির সৃষ্টিকর্তা, প্রতিপালক ও রক্ষক এবং হজরত মুহাম্মদের নেতৃত্ব সমগ্র জাহানের জন্য, সব মানুষের জন্য, এই বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটেছিল আচরণের উদারতা ও সর্বজনীন কল্যাণ কামনায়। বিশ্বাসের এই অঙ্গীকার মানুষে মানুষে রক্তের, বর্ণের, ভূগোলের ব্যবধানকে করল প্রত্যাখ্যান। মানুষ জাতিকে পরিণত করল এক পরিবারে। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতিটি মানুষ মানবতার বিরাট বাগিচায় একেকটি ফল। তারা একই পরিবারের সদস্য- এক পিতা আদম আ:-এর উত্তরাধিকারী। কোনো আরবের প্রাধান্য নেই কোনো অনারবের ওপর। যে সব চেয়ে বেশি পরহেজগার, সেই সবচেয়ে সম্মানিতজন।

চ. সামাজিক দায়িত্বানুভূতি : মুসলমানরা দায়িত্বানুভূতির প্রেরণায় উজ্জীবিত হলেন। তাদের চিন্তায় এলো পরিপক্বতা এবং তারা তাদের পরিবারের পরিমণ্ডলে, সমাজের বাস্তবতায়, নিজেদের পেশায়, বিশ্বাসে-আচরণে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের চেষ্টা করতেন। সমস্ত মানব সমাজের সদস্য হিসেবে দায়িত্ববোধ ও কর্মস্পৃহায় তারা চালিত হতেন।

ছ. মহানবী সা: ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক পথের যে রূপরেখা দিয়ে যান, তা ভালোবাসার সৃষ্টি করে বিশ্বাসী মনে। ভালোবাসা আল্লাহর প্রতি, মানুষের প্রতি, আল্লাহর সব সৃষ্টির প্রতি। সে ভালোবাসা দায়িত্বশীলতায় পূর্ণ। কারণ তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে নিখিল বিশ্বে আল্লাহর খলিফা হিসেবে। ফলে একজন মুসলিম ও একটি মুসলিম সমাজ শুধু প্রেমে উজ্জীবিত নয়, সর্বাত্মক দায়িত্বের বোধে ও প্রেরণায় তাড়িত। মুসলিম সামাজিক মন ভেতরের কারাগার থেকে স্বাধীন হয়ে যায়। রাসূল সা: সৃষ্টির সর্বত্রই আল্লাহর নিদর্শন খুঁজে বেড়াতেন। উড়ন্ত পাখি, দাঁড়িয়ে থাকা গাছ, রাতের আঁধার আর উজ্জ্বল তারকারাজি, বৃষ্টির বর্ষণ ও ভূমির সজীবতা; প্রাণমুখরতায় আল্লাহর মহিম নিদর্শনের দেখা পেতেন। মানুষের জন্ম, বেঁচে থাকা, দেহগঠন, জীবনচক্র, হৃদয়বৃত্তি, রোগ-আরোগ্য এমনকি মৃত্যুতে আল্লাহর প্রমাণ লক্ষ করতেন। এ জন্য করতেন যাচাই, অনুসন্ধান, দৃষ্টিপাত। ফলে মানুষ ও মানুষের পৃথিবীকে বাস্তব নজরে দেখার, বিশ্লেষণ করার এমন এক স্বভাব তৈরি হয়, যা কেবল বস্তুগত নয়, আধ্যাত্মিক। আধ্যাত্মিক হয়েও কল্পনাপ্রধান নয়, দলিল ও প্রমাণসাপেক্ষ। যা নতুন এক বিশ্বদৃষ্টি উপহার দিলো। যে প্রকৃতিকে আগে ঈশ্বর ভেবে মানুষ উপাসনা করত, সেই প্রকৃতি জয়ের তালা খুলে গেল। নিখিলের প্রতিটি সৃষ্টি ও ঘটনা নতুন অর্থ ও তাৎপর্য নিয়ে মুসলিম দৃষ্টিপথে উদ্ভাসিত হলো। এর ধারায় মানবমনের মুক্তি শুধু ঘটল, তা নয়। বিজ্ঞানচেতনার মুক্তিও ঘটল। উদ্ভাবন-গবেষণার নবযুগ সামনে এলো। প্রকৃতির কল্যাণসমূহ আহরণ ও তার সাথে সুবিচারের খলিফাসুলভ দায়বোধে উজ্জীবিত হলো মানুষ।

জ. এ সমাজ জানত, শান্তির পূর্বশর্ত হচ্ছে ন্যায়বিচার। অগ্রগতির পূর্বশর্ত হচ্ছে উন্নত নৈতিকতা। সফলতার পূর্বশর্ত হচ্ছে সদাচার, আমলে সালেহ। কিন্তু সদাচারের জন্য যেভাবে কর্মের সততা জরুরি, তেমনি জরুরি ইচ্ছার সততা ও স্বচ্ছতা। ধর্মজীবনকে করতে হবে পরিচ্ছন্ন, সে জন্য নিশ্চিত করতে হবে আল্লাহর অধিকার। জাগতিক জীবনকে করতে হবে যথাযথ। সে জন্য নিশ্চিত করতে হবে বান্দার অধিকার। এই যে আল্লাহর অধিকার আর বান্দার অধিকার, উভয়েই ধর্মের অংশ। আত্মিক জীবন ও জাগতিক জীবনে নেই কোনো দ্বন্দ্ব। এ সমাজে সামষ্টিক বাস্তবতা ছিল অধিকারচেতনা এবং অধিকারের প্রতি সম্মান। অন্যের মর্যাদার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা। যা নিশ্চিত করে সাম্যের স্বাদ। জীবনের প্রতি সম্মান ছিল সর্বোচ্চে। একটি হত্যার অর্থ তাই সব মানুষকে হত্যা। এ জন্য প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত। মানুষের দুঃখ দূর করার সর্বাত্মক প্রয়াস এ সমাজের চরিত্র হয়ে ওঠে। দাসমুক্তি, গরিব, এতিম ও নিঃস্বদের দায়িত্ব গ্রহণ ও তাদের দাবিপূরণ ছিল ধর্মীয় বিধি-বিধানের সাথে যুক্ত। শুধু ইহকালীন লক্ষ্যে নয়, পরকালীন মুক্তির প্রয়োজনে মুসলমানরা এ কাজে থাকতেন পরস্পরের প্রতিযোগী।

ঝ. মানুষের মনোযোগের কেন্দ্র ছিল খোদাভীতি, সততা ও সত্যতায় উত্তীর্ণ মানুষ। যাদের হৃদয় যত স্বচ্ছ, যাদের আচরণ যত মহিমান্বিত, আল্লাহর সাথে এবং তার বান্দাদের সাথে সম্পর্কে যার যত পরিপূর্ণ, তাদের প্রতি ধাবিত ছিল সমাজমন। যারা জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় ছিলেন অগ্রণী, ইবাদত ও খেদমতে ছিলেন অনবদ্য, তারাই ছিলেন সমাজের শ্রদ্ধেয়। প্রতাপ-প্রতিপত্তি, শক্তি-জবরদস্তি, অর্থ-পদবি, লোক-লস্কর কিংবা পার্থিব উপকরণের ব্যাপকতা-বাহুল্য কোনো ব্যক্তিকে সমাজমনের কাছে শ্রদ্ধেয় বানাতে পারত না। তার স্থানই ছিল না ভদ্রতার পরিসরে। যদিও সে ক্ষমতাসীন হয়ে পড়ে। মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব ও সম্মানের মানদণ্ড ছিল জ্ঞান, প্রজ্ঞা, খোদাভীতি ও মানবীয় গুণাবলির শ্রেষ্ঠত্ব এবং অগ্রগণ্যতা। সমাজ প্রতিযোগিতা করত এ ময়দানে, এখানেই নিয়োজিত হতো মুখ্য মনোযোগ।

ঞ. ভুল ও পাপের জন্য অনুশোচনা ও সংশোধনপ্রক্রিয়া ছিল অত্যন্ত প্রগাঢ় ও শক্তিশালী। সমাজ তার আপন শক্তিতে শুদ্ধির বাতাবরণ গড়ে দেয়। ফলে অপরাধপ্রবণতা ছিল বিচ্ছিন্ন বিষয়। রাষ্ট্র ছিল আল্লাহর বিধানের কাছে দায়বদ্ধ। এ দায়বদ্ধতা কেবল কাগজে লিখিত কিছু শব্দ-বাক্য ছিল না। এ ছিল পরম বিশ্বাসের বিষয়। ফলে আল্লাহ নির্দেশিত ন্যায়ের শাসন হয় নিশ্চিত, শাসক হন সত্যিকারার্থে সেবক, জনগণ সেখানে প্রজা বা দাস ছিল না, রাষ্ট্র ও প্রশাসনকে পায় নিজেদের খেদমতে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ হিসেবে। মতের স্বাধীনতা, সত্য উচ্চারণের অধিকার, ন্যায়বিচারের শক্তি এবং আইনের কর্তৃত্ব তখন আক্ষরিক অর্থে প্রদর্শিত হয়; নববী শাসন ও খোলাফায়ে রাশেদার সেই কালে। যা চিরকালের জন্য শাসনচিন্তা, শাসনব্যবস্থা এবং নাগরিক অধিকার ও রাষ্ট্র বনাম নাগরিকের সম্পর্ককে প্রভাবিত করে। সমাজ ও সামাজিক বাস্তবতা ছিল এরই অনুক‚লে বিন্যস্ত ও বিকশিত। মসজিদ যেমন সমাজের কেন্দ্র ছিল, তেমনি ন্যায়প্রতিষ্ঠার। যেখানে দৃশ্যমান আইনের পাশাপাশি অদৃশ্য তাকওয়া শাসন করত বিচারকদের, শাসকদের, নাগরিকদেরও। শাসন ও দরবেশি হাত ধরাধরি করে চলছিল। জনগণের সম্পদ ও প্রাপ্যের সুষম বণ্টন ছিল এ দরবেশির প্রধান দাবি। যার ওপর নির্ভর করত শাসনের ন্যায্যতা। ফলে ফোরাতের তীরে একটি ক্ষুধার্ত কুকুরের জন্য বিনিদ্র রজনী কাটাতেন অর্ধপৃথিবীর শাসক হজরত ওমর রা:।

মহানবী সা:-এর রিসালাতের লক্ষ্য ছিল মানুষের মুক্তিসাধন। ইসলাম ও মহানবী সা:-এর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য রোগমুক্তির যে প্রেসক্রিপশন রয়ে গেছে তা সব যুগে মানুষকে মুক্ত করে সেই সব জিঞ্জির থেকে, যার হাত থেকে ইতঃপূর্বে কখনো তাদের মুক্তি মেলেনি। এ ছিল এক সামগ্রিক সংগঠন। নীতি ও আচার, নৈতিকতা ও আইন, ঐতিহ্য ও শাস্ত্র, জ্ঞান ও প্রয়োগ, কর্ম ও আধ্যাত্ম, ব্যষ্টি ও সমষ্টি, সমাজ ও রাষ্ট্র একই জীবন্ত ও গতিশীল স্থাপনার মতো প্রাণপূর্ণ ঐকতানে অগ্রসরমান ছিল। পরস্পর সহায়তা করছিল পরস্পরকে। যার প্রভাবে ও প্রতাপে পরাজিত হয় জুলুম, বৈষম্য, দুর্বলের ওপর সবলের শোষণ এবং অন্য সব যন্ত্রণার, সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মানবজাতি যার শিকার হয়েছে ও হচ্ছে। মহানবী সা:-এর আদর্শের সেই স্থাপত্য ও প্রবাহ এখনো প্রাণবান নির্দেশিকা হয়ে আমাদের আহ্বান করছে, যেন তার অনুকরণের মাধ্যমে সেই সুফল নিশ্চিত করি আজো!#

লেখক : কবি, গবেষক 71.alhafij@gmail.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *