বিজ্ঞতার সাথে আপনার শব্দ চয়ন করুন : মুফতি মেনক

ধর্ম ও দর্শন সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

অনুবাদ:মাসুম খলিলী

এক. আপনি যা বলবেন তা আপনার পক্ষে বা আপনার বিপক্ষে প্রমাণ হতে পারে এবং হবে। তবে, এখন নয়, অবশ্যই সর্বশক্তিমানের আদালতে। তাই কথা বলার আগে বিজ্ঞতার সাথে আপনার শব্দ চয়ন করুন। একবার বললে, পিছন ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সেজন্য আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য কিছু বলার না থাকলে চুপ থাকাই ভালো।

দুই. সবচেয়ে কঠিন জিনিসগুলির মধ্যে একটি হল হাসির নীচে আপনার কষ্টকে লুকিয়ে রাখা। আপনি এটি তখন করেন যখন আপনি নিজের চেয়ে অন্যদের জন্য বেশি যত্নবান হন। তবে মনে রাখবেন, একটি হাসি অনেক কিছু লুকিয়ে রাখতে পারে.. ভয়, ব্যথা, দুঃখ, কান্না। কিন্তু এটি একটি প্রধান জিনিসকে প্রতিফলিত করে, সেটি হলো ‘শক্তি’।

পূনশ্চঃ

এক. রমজান এমন একটি মাস যেখানে অন্তর নরম হয়। এটি সওয়াবের মাস এবং এটি এমন একটি মাস যেখানে নেক আমল বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। এটি অনুশোচনা এবং অনুতপ্ত হওয়ার মাসও। তাই রহমতের এই মাসে সর্বশক্তিমানকে তালাশ করুন।

দুই: কী কাজ হয়নি তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা বন্ধ করুন। আপনি ঠিক সে অবস্থাতেই আছেন সর্বশক্তিমান যেভাবে চেয়েছেন। সুযোগ নষ্ট করবেন না। দিনটিকে কাজে লাগান।

তিন. শয়তান যদি আপনাকে একবার পরাভূত করে তবে দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়ে পাল্টা আঘাত করুন। দ্বিতীয়বার যেন ইবলিশ সুযোগ না পায়; প্রথম পাপ করার পরে আপনাকে প্রভুর রহমতের আশা থেকে যেন শয়তান হতাশ করতে না পারে।

চার. ব্যর্থতার পরে আপনি কেন পরাজিত বোধ করেন? এই জীবন কখনই নিখুঁত হয় না। সুতরাং নিজেকে তুলে ধরুন এবং এগিয়ে যান। সর্বশক্তিমান আপনাকে দেখছেন।

পাঁচ. গতকালের কষ্ট এবং ভুলগুলোতে আটকে থাকবেন না। অতীতে আপনাকে কীভাবে আহত করা হয়েছে তা নিয়ে চিন্তা করবেন না। আপনার যা আছে তাতে মনোনিবেশ করুন এবং এগিয়ে যান। বেঁচে থাকুন।

ছয়. মনে মনে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা রেখে সারা জীবন চলতে যাবেন না। নেতিবাচক সব ঝেড়ে ফেলুন। ইতিবাচক চিন্তার জন্য জায়গা করে নিন। এরপর পার্থক্য দেখুন।

সাত. সব কিছুই কোনো না কোনো পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটাই জীবন। দুঃখবোধ করবেন না এবং আপনার স্রষ্টার সাথে লিঙ্কটি হারাবেন না। দৃঢ় থাকুন। এটি আপনার জন্য সহজ-স্বাচ্ছন্দ্য থাকার একমাত্র উপায়।

দ্রষ্টব্য:

হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহকে ভয় কর, তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য তোমরা উপায় অনুসন্ধান কর এবং তাঁর পথে সংগ্রাম করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা মায়েদাহ:৩৫)

ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ধৈর্যশীল মানুষদের সাথে আছেন।’ (সূরা বাকারা:১৫৩)

তোমরা ভয় ও আশা নিয়ে আল্লাহকে ডাক। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সূরা আরাফ: ৫৬)।

আর আমার বান্দারা যখন আপনার কাছে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে, আমি নিকটেই আছি। আমি দোয়াকারীর দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করি। (সূরা বাকারা:১৮৬)

হজরত আলী (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন, দোয়া মোমিনের হাতিয়ার, দ্বীনের স্তম্ভ এবং আসমান জমিনের নূর। (মুসলিম:৪৬৫)।

হজরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া অপেক্ষা কোনো জিনিসই অধিক ফজিলত ও সম্মানের নেই। (তিরমিজি:৩৩৭)

* মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি

* মাসুম খলিলী সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *